সেনজেন ভিসার খরচ ও সেনজেন দেশের সুবিধা কি
সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশের জন্য সেনজেন ভিসা বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত একটি ভিসা। কেননা এই ভিসায় একবার সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারলে 26 টি সেনজেন দেশে প্রবেশ করার সুযোগ থাকে। সেনজেন ভিসার খরচ ও সেনজেন দেশের সুবিধা কি এই বিষয়ে যদি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সেনজেন ভিসার খরচ ও সেনজেন দেশের সুবিধা কি আজকের পোস্টে আমি এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পাশাপাশি আপনারা আরো জানতে পারবেন সেনজেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত দেশের নাম, সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায়, সেনজেন ভিসা করতে কি কি কাগজপত্র লাগে।
ইউরোপ মহাদেশ।
সেনজেন ভিসার খরচ ও সেনজেন দেশের সুবিধা কি এ বিষয়ে জানার আগে আপনাকে ইউরোপ সম্পর্কে সামান্য ধারনা নিতে হবে। বর্তমান বিশ্বে যে কয়টি মহাদেশ রয়েছে তার মধ্যে ইউরোপ হচ্ছে আয়তনের দিক দিয়ে দ্বিতীয় সর্ব নিম্ন মহাদেশ। আয়তনের দিক দিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন মহাদেশ হলেও এই মহাদেশটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মহাদেশ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত।
ইউরোপের আভিজাত্য, প্রাচুর্য, শিক্ষা-দীক্ষার উন্নতির দরুন বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশ বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিনা আমেরিকার দেশের মানুষের স্বপ্ন থাকে ইউরোপ ভ্রমণ ও স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ তৈরি করা।
ইউরোপের সর্বমোট 50 টি রাষ্ট্র রয়েছে। এই 50 টি রাষ্ট্রের মধ্যে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই জাতিসংঘের সদস্যপদ পেয়েছে শুধুমাত্র একটি রাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত সদস্য পথ পায়নি সেটি হলো ভ্যাটিকান সিটি। এই মহাদেশকে পৃথিবীর সবচেয়ে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী মহাদেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তাই বলে প্রত্যেকটি দেশেই অর্থনৈতিকভাবে উন্নত এটি বলা যায় না। বর্তমানেও এ মহাদেশের বেশ কিছু দেশ গরিব দেশ রয়েছে।
ইউরোপ মহাদেশের 27 টি রাষ্ট্র নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন হচ্ছে একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা। ইউরোপীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থসামাজিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠন করা হয়।
ইউরোপ মহাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে এতোটুকু আলোচনা করার একমাত্র কারণ হলো যাতে করে আপনারা সেনজেন অঞ্চল ও সেনজেন ভিসার আলোচনা সহজে বুঝতে পারেন।
সেনজেন অঞ্চল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে বসবাসকারী নাগরিকদের আর্থসামাজিক অগ্রগতি, সাংস্কৃতিক উন্নতি জন্য একটি মুক্ত চলাচলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এই অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ। তারই ধারাবাহিকতায় 1985 সালে লুক্সেমবার্ এর ছোট গ্রাম সেনজেনে এক সম্মেলনে এই অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ ইউরোপীয় ইউনিয়ন অঞ্চলে অবাধ মুক্ত চলাচল এর বিধি নিষেধ রোধক গল্পে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
1990 সালে এই বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের 7 টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। 1995 সাল থেকে সেনজেন চুক্তি কার্যকর করা হয়। বর্তমানে 27 টি দেশ সেনজেনভুক্ত অঞ্চলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
বিশেষ কিছু বিধি নিষেধ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকগণ সেনজেনভুক্ত 27 দেশে অবাধমুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। সীমান্তে কোনরকম চেকিং ছাড়া এক দেশের নাগরিক অন্য দেশে ভ্রমণ করতে পারবে। এটি সেনজেনভুক্ত নাগরিকদের একটি বিশেষ সুবিধা। সাইপ্রাস ও আয়ারল্যান্ড ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় সব দেশ সেনজেনভুক্ত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
সেনজেন ভিসা কি?
সেনজেন অঞ্চলের উন্নতম একটি নীতি হচ্ছে ভিসা নীতি। এই ভিসা নীতির আওতায় সেনজেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত নয় এরকম রাষ্ট্রের নাগরিকরা সেনজেনভুক্ত অঞ্চলে শুধুমাত্র ভ্রমণের উদ্দেশ্যে অথবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে সেনজেন ভিসা নিতে হয়। সেনজেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো একই ধরনের ভিসা নীতি মেনে চলে।
অন্যভাবেও বলা যায়-
সেনজেন ভিসা হচ্ছে সেনজেন ভুক্ত দেশের প্রবেশের জন্য সেনজেনভুক্ত অঞ্চলের বাহিরের রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকদের দেওয়া একটি বিশেষ ধরনের ভিসা যাকে আমরা সেনজেন ভিসা বলে থাকি। সেনজেন ভিসা মাধ্যমে একটি অস্থায়ী অল্প সময়ের ভ্রমণের অনুমতি দিয়ে থাকে 180 দিনের মধ্যে 90 দিন পর্যন্ত সেনজেন অঞ্চলের দেশগুলোতে থাকার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভিসা নীতি অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাহিরের দেশগুলোর নাগরিকদের সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ বা ভ্রমন করতে চাইলে তাদেরকে সেনজেন ভিসা করতে হবে। একক এন্ট্রি সিঙ্গেল ভিসার মেয়াদ হবে180 দিন।
এই সময়ের মধ্যে একজন সেনজেন ভিসা গ্রহণকারী সেনজেনভুক্ত দেশে গিয়ে সর্বোচ্চ 90 দিন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশের জন্য যে দেশের ভিসার জন্য আবেদন করবেন ঐ দেশ দিয়েই তাকে সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ করতে হবে।
সেনজেন ভিসা কাদের জন্য প্রযোজ্য।
উপরের আলোচনা থেকে আপনারা ইতিমধ্যেই অনুমান করতে পারছেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের 27 টি দেশের বাহিরের অন্য কোন রাষ্ট্রের নাগরিকদের সেনজেনভুক্ত অঞ্চল ভ্রমণের জন্য সেনজেন ভিসার প্রয়োজন।
সেনজেন ভিসায় শুধুমাত্র ভ্রমণের উদ্দেশ্যেই দেয়া হয়ে থাকে এই ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ 180 দিন। 180 দিনের মধ্যে যে কেউ চাইলে সর্বোচ্চ 90 দিন পর্যন্ত সেনজেনভুক্ত অঞ্চলের যে কোন একটি দেশে থাকতে পারবেন। তবে সেনজেন ভিসায় গিয়ে কোন নাগরিক কাজ করতে পারবেন না।
এশিয়া আফ্রিকার কিছু দেশ রয়েছে। যেমন- বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান, এসব দেশের নাগরিক সেনজেন ভুক্ত কোন রাষ্ট্রের বিমানবন্দর ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে তাদেরকে এয়ারপোর্ট ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় অর্থাৎ সেনজেনভুক্ত কোন রাষ্ট্রের বিমানবন্দর ব্যবহার করে অন্য কোন দেশ যেতে চাইলে এই সব দেশের ভ্রমণকারীদের এয়ারপোর্ট ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
সেনজেন ভিসা পাওয়ার উপায়।
আলোচনার এই অংশে সেনজেন ভিসা কিভাবে পাওয়া যায় এই সম্পর্কে কিছু ধারনা দেয়ার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন সেনজেন ভিসা কিভাবে পাওয়া যায় বা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া যাক-
- শুরুতেই আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে যে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগে সেগুলো যোগাড় করতে হবে।
- এরপর আপনাকে বিবেচনায় নিতে হবে আপনি যে দেশে বসবাস করছেন সেই দেশে সেনজেনভুক্ত কোন দেশের কনসুলেট অফিস রয়েছে।
- সেনজেন ভিসার আবেদন করার পূর্বে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে আপনি কোন দেশ দিয়ে সেনজেনভুক্ত দেশে প্রবেশ করতে চাচ্ছেন। সে দেশের কনসুলেট অফিস বরাবর আবেদন করতে হবে।
- ভ্রমণের সময় কোন দেশে বেশি সময় কাটাবেন বা অবস্থান করবেন তা বিবেচনায় আনতে হবে। যে দেশে বেশি সময় কাটাবেন সেই দেশের কনসুলেট অফিস বরাবর আবেদন করবেন।
- অনলাইন থেকে ভিসার আবেদন ফরম সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। এই কাজে অভিজ্ঞদের সাহায্য নিতে পারেন।
- আবার আপনি যে দেশে বসবাস করছেন সে দেশে যদি সেনজেন অঞ্চলভুক্ত যে দেশে যেতে চাচ্ছেন সে দেশের কনসুলেট অফিস না থাকে তাহলে আপনাকে বিড়ম্বনায় পড়া লাগবে পার্শ্ববর্তী যে দেশে কনসুলেট অফিস রয়েছে সেখানে গিয়ে আপনাকে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনের জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলোর ২ সেট ফাইল তৈরি করুন। একটি নিজের কাছে রাখুন অপরটি কনসুলেট অফিসে জমা দিন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ সাঞ্জেন ভুক্ত দেশ ভ্রমণের কমপক্ষে 15 দিন পূর্বে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
সেনজেন ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে।
প্রিয় পাঠক, আপনি সেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন বা আবেদন করতে ইচ্ছুক কিন্তু বুঝতে পারছেন না সেনজেন ভিসায় আবেদন করতে গেলে কি কি কাগজপত্র লাগে এই বিষয়টি। যদি আপনি এরকম সমস্যায় পড়েন তাহলে নিচের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। সেনজেন ভিসা আবেদনের পূর্বে এই বিষয়টি জানা অত্যন্ত জরুরী।
কেননা ভিসার জন্য আবেদন করতে বিশেষ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় যা পূর্বের থেকেই আপনাকে জোগাড় করে রাখতে হবে। সেনজেন ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে তার একটি তালিকা নিচে দেয়া হলো-
- একটি বৈধ পাসপোর্ট। পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে 9 মাস থাকতে হবে যাতে সেনজেনভুক্ত অঞ্চল ত্যাগ করার পূর্বে পাসপোর্ট এর মেয়াদ 3 মাস থাকে।
- নিজের স্বাক্ষর যুক্ত একটি আবেদন পত্র।
- সাম্প্রতিক তোলা রঙিন ছবি 6 মাস সময়ের বেশি পুরনো ছবি গ্রহণযোগ্য নয়। ছবির সাইজ হবে 35/40 মিলিমিটার। ছবিতে যাতে মুখমণ্ডল ও কাঁধ এর 70 - 80% দেখা যায়।
- মেডিকেল ইন্সুরেন্স।
- অন্যান্য কাগজপত্র নির্ভর করবে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্যের উপর। যদি আপনি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যান তাহলে, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করবেন সেটার বিবরণ, কোথায় থাকবেন, ফিরতি বিমান টিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে।
- ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আমন্ত্রণপত্র ফিরতি বিমান টিকেট হোটেল বুকিং এর তথ্য।
- স্টুডেন্ট হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
- চাকুরিজীবী হলে এন ওসি সার্টিফিকেট।
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
- কনসুলেট অফিসের চাহিদা মত কাগজপত্র।
অতিরিক্তঃ
- ম্যারেজ সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পুলিশ ক্লিয়ার এন্ড সার্টিফিকেট
- জমি রেজিস্ট্রেশন এর সার্টিফিকেট
সেনজেন ভিসার খরচ।
যেকোনো দেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা করতে গেলে তার নির্ধারিত কিছু খরচ রয়েছে। এখানে সেনজেন ভিসার খরচ বলতে প্রসেসিং ফি কে বুঝানো হয়েছে। সেনজেন ভিসার খরচ কত এই সম্পর্কে জানার যাদের আগ্রহ রয়েছে তারা আলোচনার এই অংশটি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
একেক দেশে ভিসার খরচ একেক রকমের হয়ে থাকে। যেমন-আপনি যে দেশে বসবাস করছেন সেই দেশে যদি সেনজেনভুক্ত দেশের কনস্যুলেট অফিস না থাকে তাহলে আপনাকে পার্শ্ববর্তী কোন রাষ্ট্রের কনসুলেন্ট অফিসে গিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এজন্য আপনার বাড়তি কিছু খরচ হবে।
আর যদি নিজ দেশে সেনজেনভুক্ত যে দেশের যেতে চাচ্ছেন সেই দেশের কনসুলেট অফিস থাকে তাহলে অতিরিক্ত অর্থ লাগবেনা এখানে অনেক টাকা সাশ্রয় হবে।
আপনি যদি নিজে নিজে সেনজেন ভিসা জন্য আবেদন করতে পারেন তাহলে খরচ খুব কম পড়বে। কিন্তু যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে সেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে চান সেই ক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক বেশি হবে। সেনজেন ভিসার অফিসিয়াল খরচ বা ভিসা ফি নিচে পড়লে আপনি জানতে পারবেন। যা সর্বোচ্চ 80 ইউরো এর বেশি নয়।
আরো পড়ুনঃসিঙ্গাপুর যেতে কত বছর বয়স লাগে
এবার আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন সেনজেন ভিসার খরচ কত। আপনি কোন এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে এজেন্সি কর্তৃপক্ষের সাথে আপনাকে একটি চুক্তিতে আসতে হবে তারা একটি নির্দিষ্ট অর্থ আপনার কাছে দাবি করবে। তাদের সাথে আপনি কি ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হবেন এটা একান্ত আপনার ব্যক্তিগত বিষয়।
- প্রাপ্তবয়স্ক 80 ইউরো।
- 6-12 বছর 40 ইউরো।
- আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বেলারুশ এর আবেদনকারীদের জন্য 35 ইউরো।
আপনি যদি সংশ্লিষ্ট কনসুলেট অফিসের হয়ে কাজ করা ভিসা সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করেন সেই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিছু সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে। এছাড়া ভিসার ধরনের উপর ভিত্তি করে খরচ কম বেশি হয়ে থাকে।
ভিসা প্রসেসিং টাইম।
অজানাকে জানার আগ্রহ আমাদের একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। বিদেশ ভ্রমণের আনন্দ সব সময় অন্যরকম।ভিসার জন্য আবেদন করে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি কবে ভিসাটি হাতে পাব এবং বিদেশ ভ্রমন করতে পারব আর এটা যদি হয় ইউরোপের কোন একটি দেশের বিশেষ বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেনজেনভুক্ত কোন রাষ্ট্রের তাহলে অপেক্ষার পালা যেন শেষ হতে চায় না।
যারা সেনজেন ভিসার আবেদন করেছেন বা আবেদন করার অপেক্ষায় রয়েছেন তাদের জন্য বলছি-
সেনজেন ভিসার আবেদনের 15 দিনের মধ্যে ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করা হয়। তবে ব্যতিক্রমী হইলে ভিসা প্রসেসিং এর সময় বেড়ে 45 দিন পর্যন্ত হতে পারে।
সেনজেন দেশের সুবিধা কি?
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বসবাসকারী নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেনজেন অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নে বসবাসকারী নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা দেয় না পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাহিরের রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকদেরও সেনজেন ভুক্ত দেশগুলো সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন-
ধরুন, আপনি একজন বাংলাদেশের নাগরিক সেনজেন ভুক্ত যেকোনো একটি দেশে ওয়ার্ড পারমিট নিয়ে কাজ করছেন আপনি চাইলেই অন্য যেকোন দেশে ভ্রমণের জন্য অথবা কাজের জন্য যেতে পারবেন। শুধু কাজের জন্য নয় ব্যবসার জন্য, পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে দেখা করার জন্য, শিক্ষা অর্জনের জন্য যেতে পারবেন।
সেনজেন ভুক্ত দেশ কতটি।
সেনজেন ভিসা আবেদনের পূর্বে আপনার অবশ্যই জানা দরকার যে কোন কোন দেশ সেনজন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। তাহলে ভিসার আবেদন করতে আপনার সহজ হবে কেননা আপনি যে দেশে বসবাস করছেন সেই দেশে সেনজেনভুক্ত প্রত্যেকটি দেশের কনসুলার অফিস নাও থাকতে পারে।
যেকোনো একটি সেনজন দেশের কনসুলেট অফিস যদি আপনার দেশে থাকেন তাহলে আপনি খুব সহজেই ওই দেশের কনসুলেন্ট অফিসে গিয়ে সেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাই এই বিষয়টি জানা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী। সেনজেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এমন দেশের একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো-
- বুলগেরিয়া
- কোস্টারিকা
- ডেনমার্ক
- এস্তোনিয়া
- ফিনল্যান্ড
- ফ্রান্স
- জার্মানি
- গ্রীস
- হাঙ্গেরি
- আইসল্যান্ড
- লাটভিয়া
- লিয়েসথেন্সটাইন
- লিথুনিয়া
- মাল্টা
- নেদারল্যান্ড
- নরওয়ে
- পোল্যান্ড
- পর্তুগাল
- রোমানিয়া
- স্লোভেনিয়া
- স্পেন
- স্লোভাকিয়া
- সুইডেন
- সুইজারল্যান্ড
- ইতালি
- অস্ট্রিয়া
- চেক রিপাবলিক
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা সেনজেন ভিসা সম্পর্কে জানার জন্য অধির আগ্রহে ছিলেন তারা আজকের এ পোস্টটি পড়ে সেনজেন ভিসা সম্পর্কে জানতে পারলেন। আজকের এই আলোচনায় আমি সেনজেনভুক্ত দেশের নামও আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি যাতে করে কেউ আপনাদের ভুল বুঝিয়ে প্রতারিত করতে না পারে।
সেনজেন অঞ্চলের বাহিরের রাষ্ট্রের নাগরিকরা শুধুমাত্র ভ্রমণের জন্য সেনজেন ভিসা আবেদন করতে পারবেন। মনে রাখবেন সেনজেন ভিসা কোন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নয়। সেনজেন অঞ্চলে কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে হবে আর এই বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে যাতে কেউ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়ার কথা বলে সেনজেন ভিসা না দিতে পারে।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url