ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সর্বশেষ আপডেট তথ্য
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম এর আওতায় প্রতিবছর সরকারি ও বেসরকারি ভাবে কয়েক হাজার বাংলাদেশী কর্মী দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রিয় পাঠক, আজকের এই আলোচনায় আপনারা জানতে পারবেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট তথ্য।
আজকের এই পোস্টটি পড়ার পর আপনারা আরও জানতে পারবেন লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম। দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বনিম্ন বেতন কত এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে কত টাকা খরচ হয় এই সম্পর্কে।
সরকারি ও বেসরকারি ভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ধাপে ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া লটারি ছাড়া যাওয়া উপায় সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোচনা করা হবে। চলুন আর দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করা যাক-
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সিঙ্গাপুর ভিসা এজেন্টের লিস্ট
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম বা উপায় সম্পর্কে আলোচনা শুরু করার পূর্বে আপনাদের একটি বিষয় জানা দরকার তা হলো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের কি কি যোগ্যতা থাকতে হয় এই সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরুতেই এই বিষয়টি নিয়ে জেনে আসি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার যোগ্যতা।
- আবেদনকারী প্রার্থীর বয়স ১৮ থেকে ৩৯ হতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি / সমমানের ডিগ্রী।
- বেসরকারিভাবে যেতে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে না।
- বৈধ মেশিন রিডেবল অথবা ই পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- কোরিয় ভাষা পড়া,লেখা ও বোঝার পারদর্শিতা থাকতে হবে এবং কোরিয়ো ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- কোন ফৌজদারি অপরাধে জেল বা অন্য কোন শাস্তি হয়ে থাকলে কোরিয়ায় যাওয়া যাবে না।
- প্রার্থীর কালার পিকাপের কোন সমস্যা থাকলে কোরিয়ায় যেতে পারবে না।
- যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থান করেননি।
- মাদকাসক্ত ব্যাক্তি দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম।
দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ২০০৭ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা চুক্তি বাংলাদেশের পক্ষে ওভারসিজ এম্প্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড(বোয়েসেল) এবং দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষে হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস অব কোরিয়া(এইচ, আর, ডি কোরিয়া) এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
বর্তমানে কোরিয়ার অভিবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এই দুটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ই,পি,এস) এর আওতায় বাংলাদেশী প্রার্থীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়। কোরিয়া সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোটার চেয়ে রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রার্থী বেশি হলে লটারির মাধ্যমে কোরিয় ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।
প্রার্থীগণ নির্ধারিত সময়ে কোরিয় সরকার কর্তৃক কোরিয়ো ভাষা দক্ষতা অর্জন ও স্কিল টেস্ট এর অংশগ্রহণ করে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪ বছর ১০ মাসের জন্য উচ্চ বেতনে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানায় চাকরির সুযোগ পান। বাংলাদেশি শ্রমিকদের সম্পন্ন সরকারিভাবে স্বল্প ব্যয়ে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়।
দুই দেশের সরকারের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী বোয়েসেল ব্যতীত অন্য কোন জনশক্তি রপ্তানি করার প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সি বা মধ্যস্বত্বভুগি কোন প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে কোরিয়ায় যাওয়ার সুযোগ নেই।
আবেদনের তারিখ ও সময় ঘোষণাঃ
প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিবন্ধনের সময় ঘোষণা করা হয় জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বোয়েসেলের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি এই সময় ও তারিখ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই যে সকল বেকার ভাইয়েরা কোরিয়াতে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন তারা সব সময় জাতীয় দৈনিক এবং বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে নজর রাখবেন। প্রতিবছর সাধারণত মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বোয়েসেল এর ওয়েবসাইটের ঠিকানা- www.boesl.gov.bd
অনলাইনে প্রাথমিক নিবন্ধন করাঃ
নির্ধারিত সময়ে বিকাশ পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে নিবন্ধন ফি বাবদ ৫০০/= টাকা পরিশোধ করতে হবে এবং বিকাশ পেমেন্টের ট্রানজেকশন আইডি সংগ্রহ করতে হবে।
নির্ধারিত ফর্ম অনুযায়ী পাসপোর্ট কপি সহ আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
বিকাশ পেমেন্ট ট্রানজেকশন আইডি নাম্বার আবেদন ফর্মে উল্লেখ করে বোয়েসেল এর ওয়েবসাইটে প্রদান করতে হবে।
নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর কনফার্মেশন ফর্ম প্রিন্ট করে নিজের কাছে রেখে দিবেন।
নিবন্ধনকৃত প্রার্থীদের লটারিঃ
সঠিক আবেদন থেকে লটারির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন।
লটারিতে যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য বোয়েসেল ওয়েবসাইটে সময় ও তারিখ প্রকাশ করা হবে।
নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে বোয়েসেল অফিসে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ২১০০/= টাকা ফি জমা দিয়ে চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন করতে হবে।
কোরীয় ভাষা শিক্ষাঃ
স্বপ্নের দেশ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য যারা চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন এবার তাদের ভাষা শিক্ষা গ্রহণের পালা। দেশের বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত ৪০টি টিটিসির মাধ্যমে ভাষা কোরীয় ভাষা শিক্ষা প্রদান করা হয়।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম ২০২৪
এছাড়া আপনি চাইলেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেসরকারি কোরীয় ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও কোরীয় ভাষা শিখতে পারেন। তবে বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে অনেকেই ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেখে কোরিয়ান ভাষা শিখেন।
কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণঃ
লটারিতে নাম আসলে ভাষা শেখার জন্য গড়ে প্রায় ২ মাস সময় পাওয়া যায় এরপর প্রার্থীদের বসতে হয় পরীক্ষায়। এইচ,আর,ডি কোরিয়া ২০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয় এর মধ্যে রিডিং ১০০ নাম্বার এবং লিসেনিং ১০০ নাম্বার। পরীক্ষার সময় ৫০ মিনিট।
প্রতিবছর এইচ,আর,ডি কোরিয়া কোরীয় ভাষা পরীক্ষার তারিখ ও সময় ঘোষণা করে এবং তারাই এই ভাষা পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে। কোরীয় ভাষা পরীক্ষার স্থান ও সময় বোয়েসেল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
কোরীয় ভাষা পরীক্ষার ফলাফলঃ
কোরিয় সরকারের পক্ষে (এইচ, আর, ডি কোরিয়া) কোরীয় ভাষা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে থাকে। প্রার্থীকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হয় কোরীয় ভাষা পরীক্ষার ফলাফল বোয়েসেল এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে প্রচার করা হয়। কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় যে সকল প্রার্থী উত্তীর্ণ হন তাদেরকে কোরীয় এইচ আর ডি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে স্কিল টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়।
মেডিকেল পরীক্ষাঃ
স্কিল টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীগণ নিজ নিজ জেলার সিভিল সার্জন এর মাধ্যমে নির্ধারিত তারিখে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে- রক্ত পরীক্ষা, যক্ষা ও হেপাটাইটিস বি।
আরো পড়ুনঃ রোমানিয়া ভিসা চেক করার নিয়ম ২০২৪
বোয়েসেল এর নির্ধারিত জব এপ্লিকেশন ফর্ম সহ পাসপোর্ট এর কপি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ জমা করতে হয়।
যে সকল প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয় সে সকল প্রার্থী বোয়েসেল এর নিকট তাদের যে তথ্য দিয়ে থাকে এই তথ্যগুলো বোয়েসেল এইচ,আর,ডি কোরিয়ার নিকট প্রেরণ করে।
বোয়েসেল কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য এইচ আর ডি কোরিয়া কর্তৃক যাচাই সাপেক্ষে এবং পর্যায়ক্রমে জব রোস্টার সম্পন্ন করে। জব রোস্টারের মেয়াদ রোস্টার ভুক্ত হওয়ার দিন থেকে প্রথম ধাপে ১ বছর এবং দ্বিতীয় ধাপে ২ বছর হয়।
চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লেবার কন্ট্রাক্ট ইস্যুঃ
এখানে একটি বিষয় পূর্বেই বলে নেয়া ভালো যে বোয়েসেল এবং এইচ,আর,ডি কোরিয়া সরাসরি কোন কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা রাখেনা। তারা শুধুমাত্র মধ্যস্থতাকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করে। কোরিয়া সরকার সাধারণত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য বিদেশী কর্মী নিয়োগ করে থাকে।
কোরিয়ার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মোতাবেক কর্মী নিয়োগের জন্য কোরিয়ান সরকারের কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করে থাকে। উক্ত আবেদন যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে কোরিয়ান সরকারের কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয় বাৎসরিক কোঠা অনুযায়ী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের চাহিদার প্রেক্ষিতে রেনডম সিলেকশনের ভিত্তিতে জব রোস্টার থেকে লেবার কন্টাক বা ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করে থাকে।
বোয়েসেল ও এইচ আর ডি কোরিয়ার নির্ধারিত এসপিএএস থেকে লেবার কন্টাক্ট গ্রহণ ও অনুমোদন করে থাকে।
ভিসা প্রাপ্ত কর্মীদের করণীয়ঃ
লেবার কন্ট্রাক্ট অথবা ভিসা প্রাপ্ত কর্মীদের বাংলাদেশ কোরিয়ান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ( বিকেটিটিসি ) তে ৪৮ ঘন্টার প্রিলিমিনারি প্রশিক্ষণ, যক্ষা পরীক্ষা ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহের জন্য বোয়েসেল ওয়েবসাইটে নোটিশ প্রধান ও এসএমএস প্রেরণ করে থাকে।
ভিসা প্রাপ্ত কর্মীগণ প্রিলিমিনারি প্রশিক্ষণ সম্পূনের পর বোয়েসেল অফিসে মূল পাসপোর্ট, প্রশিক্ষণ সনদ, ভিসার ফরম, নির্ধারিত ই-৯ ই-১০ এইচ-২ স্ট্যাটাস ফর্ম, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, ভিসা সংক্রান্ত সকল ডকুমেন্টস এবং বোয়েসেলের সার্ভিস চার্জ ২৩,১৪৮/= বোয়সেল ডাটাবেজ ফি ২০০/= ভিসা ফি ৫১০০/= বহির্গমন ফি ৩৫০০/= স্মার্ট কার্ড ফি ২৫০/= এবং উৎসের কর বাবদ ৪০০/= টাকা সহ সর্বমোট ৩৩,০৩৪/= টাকার পে অর্ডার এবং অয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিলে ১,১৪৫/= টাকার পৃথক পে অর্ডার প্রদান করতে হবে।এছাড়া রি এন্ট্রি কর্মীদের পৃথক প্রে অর্ডার প্রদানের প্রয়োজন নেই।
কোরিয়া গামী জেনারেল কর্মীদের ফেরত যোগ্য ১,০০,০০০/=টাকা পে অর্ডার এবং রি এন্ট্রি কৃত কর্মীদের ফেরতযোগ্য ৩,০০,০০০/= টাকা পে অর্ডার বোয়েসেলকে প্রদান করতে হয়।
কোরিয়ার উদ্দেশ্যে গমনঃ
বোয়েসেল ভিসা প্রাপ্ত কর্মীদের ভিসা ক্যাম্পিং করার জন্য ঢাকায় অবস্থিত কোরিয়া দূতাবাসে তাদের পাসপোর্ট জমা করে। এইচ,আর,ডি কোরিয়া থেকে ফ্লাইটের তালিকা পাওয়ার পর ফ্লাইট এর জন্য নির্ধারিত এয়ারলাইন্সের টিকিট বোয়েসেল বুকিং দিয়ে থাকে।
ফ্লাইটের তারিখ, টিকিটের টাকা জমা সংক্রান্ত ও বোয়েসেল কর্তৃক ৩ দিনের কোরীয় ভাষা ও কালচারাল প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য বোয়েসেল ওয়েবসাইটে প্রচার ও এসএমএস প্রেরণ করে কোরিয়ায় গমনকারী কর্মীর নিকট। সেল এর তথ্যের ভিত্তিতে কর্মীকে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স অফিসে উপস্থিত হয়ে টিকিটের নির্ধারিত অর্থ জমা
বোয়েসেলের তথ্যের ভিত্তিতে কর্মীকে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স অফিসে উপস্থিত হয়ে বিমানের টিকেটের নির্ধারিত অর্থ প্রদান করতে হয়। দক্ষিণ কোরিয়া গমনের পূর্বে বোয়েসেলের ৮ ঘন্টার আচরণ পরিবর্তন প্রেরণা প্রশিক্ষণ সম্পন্নের পর সংশ্লিষ্ট কর্মীকে পাসপোর্ট ও টিকিট বিতরণ করা হয়।
বোয়েসেলের প্রতিনিধি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে দক্ষিণ কোরিয়াগামী কর্মীদের বিদায় জানান। দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌছার পর এইচ,আর,ডি কোরিয়া, কোরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও কোরিয়ান নিয়োগকারী কোম্পানি বিমানবন্দরে থেকে তাদের প্রশিক্ষণ ও মেডিকেল করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায় এবং প্রশিক্ষণ শেষে তারা চাকরিতে যোগদান করে।
বেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়।
সরকারিভাবে বা লটারির মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কাজ করছে দুই দেশের দুই প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষে হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস অফ কোরিয়া কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ থেকে বেসরকারি ভাবে কর্মী নেওয়া শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ই- ৭ ভিসার আওতায় ৪৮ কর্মীর একটি দল দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছে। বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বিজনেস এলায়েন্স এর মাধ্যমে দেশটিতে গেছে এই কর্মীরা।
আপনারা যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে, বেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া যায় কিনা। আপনাদের এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এখন আলোচনা করব। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ বেকারের একটি স্বপ্ন থাকে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য এর প্রধানতম কারণ উচ্চ বেতন, সামাজিক নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং কঠোর শ্রম আইন।
আপনারা এতদিন জেনে এসেছেন দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে হলে সরকারিভাবে লটারি মাধ্যমে যেতে হবে। আজকে জেনে খুশি হবেন যে লটারি ছাড়াও সম্পূর্ণ বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া যায়। আপনি যদি বেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হল-
বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানোর কাজে নিয়োজিত একটি বৈধ এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করা। বাংলাদেশ থেকে বেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে কর্মী নিয়োগের এজেন্সি হিসেবে যেই সংস্থা কাজ করছে সেটার নাম হল বিজনেস অ্যালায়েন্স এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে যে এজেন্সি কাজ করছে তার নাম হলো কাং ইয়ং চল।
দুই দেশের দুই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি কর্মী নিয়োগ নিয়ে কাজ করছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠান মূলত বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো( BMET) এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় লোক পাঠিয়ে থাকে।
লটারি ছাড়া কোরিয়া যাওয়ার উপায়।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে। এখন আমি আপনাদের সামনে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। বাংলাদেশের যে সকল নাগরিক লটারি ছাড়া স্বপ্নের দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চাই তাদেরকে প্রথমে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা শিখতে হবে।
কারও যদি দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা পরিপূর্ণভাবে শেখা হয় তিনি লটারি ছাড়ায় সরাসরি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় পাস করতে পারলে তিনি লটারি ছাড়ায় দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারবেন। এখন অনেকের মনে হয়তো প্রশ্ন জাগবে তাহলে আমি কেন লটারিতে অংশগ্রহণ করব।
বাংলাদেশের যেসব নাগরিক দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে আগ্রহী কিন্তু তাদের কোরিয়ান ভাষার দক্ষতা নেই সেই ক্ষেত্রে তাদেরকে একটি লটারির মধ্য দিয়ে আসতে হয়। যাদের লটারিতে নাম আসে তাদেরকে পরবর্তীতে ভাষা শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। অর্থাৎ আমরা সহজেই বুঝতে পারছি যে, দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে গেলে আমাদের অবশ্যই ভাষা শিখতে হবে।
আপনি যদি পূর্বে থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া ভাষা শিখে রাখেন তাহলে আপনি লটারি ছাড়া সরাসরি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
কিন্তু যাদের কোরিয়ান ভাষার উপর দক্ষতা নেই তাদেরকে অবশ্যই লটারির মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে তারপর ভাষা শিখে কোরিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন কিন্তু একজন কোরিয়ান ভাষার পারদর্শী লটারি ছাড়াও সরাসরি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা শেখা:
লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় প্রবেশের একমাত্র বৈধ পন্থা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া ভাষা শেখা। সরকারিভাবে অর্থাৎ বোয়েসেলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করতে হলে আপনাকে সেই দেশের ভাষা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকতে হবে।
আপনি যাতে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা বুঝতে পারেন, পড়তে পারেন এবং লিখতে পারেন তাহলে আপনি লটারি ছাড়া সরকারিভাবে অল্প খরচে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারবেন।
লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য অনেক বেসরকারি এজেন্সি ও দালাল আপনাকে বিভিন্নভাবে প্রলম্বিত করতে পারে এগুলো কথায় বিশ্বাস করা যাবে না। এ পর্যায়ে আরো একটি বিষয় না বললেই নয় সেটি হল অনেকে হয়তো ভাষা জ্ঞান না থাকার পরেও সেই দেশে যেতে পারে।
যেমন কারো যদি একদম নিকট আত্মীয় সেই দেশের নাগরিক হয় তাহলে তিনি সেই দেশে নিয়ে যেতে পারবেন এটি একটি ব্যতিক্রম এটাকে উদাহরণ হিসেবে ধরা যাবে না। যাহোক লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য আপনাকে যা করতে হবে তার ধার সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো।
কোরিয়ায় যাওয়ার আবেদন:
বাংলাদেশের অনেক বেকার যুবক ভাইদের স্বপ্ন থাকে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া। লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। আর এই জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। প্রতি বছরের শুরুতেই লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আবেদনের সার্কুলার বোয়েসেল তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।
লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সার্কুলারকে ভাষা পারদর্শী সার্কুলার বলে। ভাষা পারদর্শী সার্কুলারে যত তাড়াতাড়ি আবেদন করতে পারবেন ততই আপনার জন্য ভালো। কারণ এই সার্কুলারের প্রতি সবার আকর্ষণ থাকে, কেননা এখানে লটারি নামক ভাগ্য পরীক্ষা নেই।
ভাষা পারদর্শী হিসেবে আবেদন করা:
লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় সরকারিভাবে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে অর্থাৎ আপনি যাতে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা লিখতে পড়তে এবং জানতে পারেন। আপনার যদি দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষা জ্ঞান থাকে তাহলে আপনি লটারি ছাড়াই দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই জন্য আপনাকে প্রথমেই ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ভাষা পারদর্শী পরীক্ষার দক্ষিণ কোরিয়ার এইচ আর ডি নিয়ে থাকে। মোট ২০০ নাম্বারের পরীক্ষা নেয়া হয় এর মধ্যে রিডিং ১০০ নাম্বার এবং লিসেনিং ১০০ নাম্বার। পরীক্ষার সময় ৫০ মিনিট। প্রতিবছর এইচআরডি কোরিয়া ভাষার পরীক্ষার সময় ও তারিখ ঘোষণা করে।
ভাষা পারদর্শী পরীক্ষা কোথায় অনুষ্ঠিত হবে তা বোয়েসেল এর ওয়েবসাইটে দেখা যায়। তাই সরকারিভাবে লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে হবে।
আবেদন ফি জমা দেওয়া:
লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার জন্য আপনাকে আবেদন ফি বাবদ প্রায় ৩৫০০ টাকা জমা দিতে হবে। আপনি চাইলে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এই টাকা জমা দিতে পারবেন। ভাষা পারদর্শী পরীক্ষার ফি জমা দেবার পর ওই দিনেই আপনি একটি প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে নেবেন।
ভাষা পারদর্শী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা:
ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে বোয়েসেল অফিসে উপস্থিত হতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আগত এইচআরডি করিয়ান ভাষা পারদর্শী পরীক্ষা গ্রহণ করে।
স্কিল টেস্টে অংশগ্রহণ করা:
আপনি যদি ভাষা পারদর্শী পরীক্ষায় পাস করতে পারেন তাহলে আপনার জন্য পরবর্তী ধাপ হচ্ছে স্কিল টেস্টে অংশগ্রহণ করা এই পরীক্ষাও বোয়েসেল নিয়ে থাকে।
রোস্টার ভুক্ত হওয়া:
স্কিল টেস্টে পাশ করার পর আপনার কাজ শেষ এর পরের কাজ হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার এইচআরডির তারা আপনাকে রোস্টার ভুক্ত করবে। দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি আগ্রহী প্রার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি তাই এই পরীক্ষাগুলোতে প্রতিযোগিতাও বেশি হয়ে থাকে।
আপনাকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাশ করতে হবে তাহলে আপনি রোস্টের ভক্ত হতে পারবেন। ১৪০ থেকে ১৫০ এর উপরে যদি আপনার পাস মার্ক থাকে তাহলে আপনি রোস্টার এর তালিকাভুক্ত হবেন।
ভিসা ফরম জমা দেওয়া:
আপনার পাসপোর্ট দেয়া তথ্য মোতাবেক অনলাইনে ভিসার আবেদন ফরম পূরণ করে এর সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এটাস্ট করে দক্ষিণ কোরিয়া এম্বাসি বরাবর জমা দিতে হবে। ভিসার আবেদন ফরম জমা দেওয়ার কাজটি বোয়েসেল নিজে করে আপনি শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করবে।
কোরিয়ার মালিক কর্তৃক সিলেক্ট করা:
অনেকের মধ্যেই একটি ভুল ধারণা আছে বোয়েসেল এবং এইচআরডি কোরিয়া এই দুই সংস্থা কোরিয়ায় কর্মী নিয়োগ করে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এই দুটি প্রতিষ্ঠান সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান গুলোতে কর্মীর চাহিদা ভিত্তিতে সেই দেশের প্রতিষ্ঠানের মালিকরা কর্মী নিয়োগ দেয়। এই কাজে সহযোগিতা করে বোয়েসেল এবং এইচআরডি কোরিয়া।
ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করা:
আবেদনকারী যে সকল প্রার্থী চূড়ান্তভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার জন্য সিলেক্টেড হবেন তাদের বোয়েসেলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার আগে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হয়। এই প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণভাবে বোয়েসেলের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রশিক্ষণে কোরিয়া ভাষা, সেই দেশের সমাজ, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ এর উপরে ট্রেনিং দেওয়া হয়।
দেশ ত্যাগ করা:
সরকারিভাবে সূম্পন্ন বোয়েসেলের তত্ত্বাবধানে লটারি ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার সর্বশেষ ধাপ হল দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করা। নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজ করার সুযোগ পাওয়া কর্মীদের দেশ ত্যাগ করতে হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বনিম্ন বেতন কত?
আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বনিম্ন বেতন কত? সেখানে একজন শ্রমিকের বেতন সর্বনিম্ন কত টাকা হয় তা ঘন্টা হিসাব করা হয়। মূলত দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘন্টা হিসাব করে টাকা দেয়া হয়। আপনি দক্ষিণ কোরিয়া গেলে আপনাকে সর্বনিম্ন ৮ ঘন্টা এবং সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন।
২০২৩ সালে চালু হওয়া নতুন মজুরি আইন অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়াতে একজন শ্রমিক প্রতি ঘন্টায় ৭.৬০ ডলার আয় করতে পারে। যার বাংলাদেশী টাকা প্রায় ৯০০ টাকার মতো। এই হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বনিম্ন বেতন হবে ১,০০,০০০/= থেকে ১,৮০,০০০/= টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া ওভারটাইম হিসেব করলে এই বেতন দাঁড়াবে ২,০০,০০০/= থেকে ২,৫০,০০০/= টাকা পর্যন্ত। এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো যে কোরিয়াতে প্রতি শনিবার এবং রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে আপনি চাইলেই এই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ওভারটাইম হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পুনরায় চাকরি এন্ট্রির প্রাপ্তির সুযোগ।
MOU শর্ত অনুযায়ী বিদেশী শ্রমিকরা কোরিয়াতে ৪ বছর ১০ মাস চাকরি সম্পন্ন শেষে নিজ নিজ দেশে ফেরত আসেন। এর ফলে কোরিয়ান কোম্পানি একদিকে যেমন দক্ষ শ্রমিক হারাতে থাকে অন্যদিকে কোরিয়াতে অবৈধ ভাবে শ্রমিকদের বসবাস করার প্রবণতাও বেড়ে যায়।
সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে কোরিয়ান সরকার ২০১২ সাল থেকে মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থে কোরিয়ান ভাষার দক্ষ এবং কোরিয়ান কর্মের অভিজ্ঞতা আছে এমন কর্মীদের রি এন্ট্রি সিস্টেম চালু করেছে। প্রথমবারের মতো কোরিয়ায় ৪ বছর ১০ মাস চাকরি সম্পন্ন করার পর দ্বিতীয়বারের জন্য পুনরায় কোরিয়াতে রি এন্ট্রি সুযোগ পায় এবং আরো ৪ বছর ১০ মাস চাকরি করতে পারে।
লেখকের মন্তব্যঃ
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া গমনকারিদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও ভাষা পরীক্ষা থেকে শুরু করে দক্ষিণ কোরিয়া গমন পর্যন্ত প্রত্যেকটি কাজ অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও কম্পিউটারাইজ পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে কোন ব্যক্তি বোয়েসেল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করার কোন সুযোগ নেই।
এখানে উল্লেখ্য যে দক্ষিণ কোরিয়ায় চাকরির জন্য রোস্টার ভুক্ত হওয়া মাত্রই কোরিয়ায় চাকরির নিশ্চয়তা আপনি পেয়ে গেছেন এটা বলা যাবে না। বোয়েসেল এবং এইচআরডি কোরিয়া কোন প্রার্থীকে চাকরি প্রদান করতে পারে না চাকরি পাওয়ার জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠান প্রার্থী এবং চাকরি দাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।কোরিয়া চাকরি দাতা হচ্ছে সেখানকার ছোট ছোট বেসরকারি কোম্পানি গুলো।
সাধারণ জিজ্ঞাসা ও উত্তর।
প্রশ্নঃবাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার দূরত্ব কত?
উত্তরঃ গুগল ম্যাপ অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার দূরত্ব ৩৮২৭ কিলোমিটার।
প্রশ্নঃসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে সর্বনিম্ন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
প্রশ্নঃবেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা খরচ হয়?
উত্তরঃবেসরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে ১২ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়
প্রশ্নঃদক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীর নাম কি?
উত্তরঃ সিউল
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার সময়ের পার্থক্য কত?
উত্তরঃ ৩ ঘন্টা
প্রশ্নঃদক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম কি?
উত্তরঃ উয়ন
প্রশ্নঃদক্ষিণ কোরিয়ার এক উয়ন সমান বাংলাদেশের কত টাকা?
উত্তরঃ0.8480
প্রশ্নঃদক্ষিণ কোরিয়ার কলিং কোড কত?
উত্তরঃ +82
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url