বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম-২০২৪

বাংলাদেশ সহ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশের নাগরিকদের বিরাট একটি অংশ উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। ইউরোপের যেসব দেশের কর্মীর চাহিদা রয়েছে সেই দেশগুলোর মধ্যে পোল্যান্ড উন্নতম। আজকে আমি বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের বলব।
বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম জানার পাশাপাশি আপনারা আরো জানতে পারবেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে কি কি লাগে কিভাবে ভিসার আবেদন করতে হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে।

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম।

আপনারা অনেকেই জানতে চান বাংলাদেশ থেকে কিভাবে পোল্যান্ড যাওয়া যায় এই বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ থেকে কিভাবে পোল্যান্ড যাওয়া যায় এই বিষয়টি জানার আগে আপনাকে জানতে হবে পোল্যান্ডের ভিসার ধরন সম্পর্কে। পোল্যান্ড সরকার বিদেশী নাগরিকদের অবস্থানের সময় উপর ভিত্তি করে তিন ধরনের ভিসা ইস্যু করে। যেমন-

Airport Transit Schengen Visa ( A-Type Visa) এ ভিসায় সেনজেন ভুক্ত কোন দেশে থাকার অনুমতি পাবেন না। আপনার যদি একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট থাকে বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের কোন নাগরিকের পরিবারের সদস্য হন আপনাকে A-Type Visa ভিসা করতে হবে না। একটি C -typa Visa অথবা D-Type Visa যদি থাকে তাহলে আপনাকেA-Type Visa ভিসা করতে হবে না।
Schengen Visa ( C-Type Visa) এই ভিসায় পোল্যান্ড গেলে আপনি সেনজেনভুক্ত অন্যান্য দেশে যেতে পারবেন তবে ৯০ দিনের বেশি থাকতে পারবেন না ১৮০ দিনের মধ্যে। যাতায়াতের প্রধান রুট হবে পোল্যান্ড। পোল্যান্ড ছাড়া আপনি আপনার দেশে ফেরত আসতে পারবেন না।

National Visa ( D -Type Visa) আপনি যদি পোল্যান্ডে ৯০ দিনের বেশি থাকতে চান তাহলে National Visa ( D -Type Visa) নিতে হবে। D -Type Visa মেয়াদ ১ বছর তবে এর মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারবেন। সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট, অধ্যায়ন করতে যারা পোল্যান্ডে যায় তারা D -Type Visa মাধ্যমে যায়। এখন আমি আপনাদের সামনে D -Type Visa  বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব।

ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য কোম্পানি খোঁজ করা।

পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার জন্য সরকার অনুমোদিত বেশ কয়েকটি কোম্পানি রয়েছে। এ কোম্পানিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কর্মী নিয়োগ করে থাকে। আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে পোল্যান্ডে যেতে চান তাহলে প্রথমে আপনার কাজ হবে একটি কোম্পানি খুঁজে বের করা। 

অনলাইনে সার্চ দিলে আপনি খুব সহজেই এই কোম্পানিগুলো নাম পেয়ে যাবেন সেখান থেকে তাদের ইমেইল এড্রেস অথবা কন্টাক্ট নম্বর দিয়ে তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। আপনি নিজে নিজে চেষ্টা করলে একটু সময় নিয়ে হলেও কোম্পানির সন্ধান পাবেন। পোল্যান্ডে এরকম ১৬ টি কোম্পানি রয়েছে যারা ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে থাকে। 
কোম্পানির সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে তারপর সে কোম্পানিতে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন। যদি এ কাজটি আপনার কাছে ঝামেলা পূর্ণ মনে হয় তাহলে বাংলাদেশে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে আপনি কোম্পানি তে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে এজেন্সি গুলো আপনাকে সহযোগিতা করবে এর বিনিময়ে তাদেরকে প্রয়োজনীয় টাকা দিতে হবে।

অপর একটি মাধ্যম এ আপনি চাইলে পোল্যান্ডের কোম্পানি খুঁজে বের করতে পারবেন। যেমন- আপনার যদি কোন নিকট আত্মীয় বা বন্ধু পোল্যান্ডের নাগরিক হয়ে থাকে তাহলে তার মাধ্যমে আপনি কোম্পানি খুঁজে বের করতে পারবেন। 
তার সহযোগিতায় কোম্পানিতে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এটি সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও সহজ মাধ্যম এ মাধ্যমে আপনি কোম্পানি খুঁজে পেলে তুলনামূলক অল্প খরচে আপনি পোল্যান্ডের যেতে পারবেন।

ওয়ার্ক পারমিট এর আবেদনের জন্য কি কি লাগে।

পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার জন্য আপনাকে যে সব কাগজপত্র জমা দিতে হবে তা নিচে তুলে ধরা হলো।
  • আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ৯ মাস থাকতে হবে।
  • পাসপোর্ট এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকটি পাতার স্ক্যান কপি।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট কমপক্ষে এইচএসসি।
  • আপনার বায়োডাটা বা সিভি।
  • পাসপোর্ট সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন।

ইউরোপের শিল্প উন্নত দেশ পোল্যান্ডে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে সেই দেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট যোগাড় করতে হবে। এখন প্রশ্ন হল ওয়ার্ড পারমিট আপনি কিভাবে যোগাড় করবেন। উপরের আলোচনা থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে পুনরায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। 

পোল্যান্ডের নাগরিক হয়েছেন এমন নিকট আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধব, নিজে নিজে অথবা কোন বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারেন। এখানে আপনার জন্য যেটা ভালো হয় আপনি সেই মাধ্যমে আবেদন করবেন। পোল্যান্ডে কিছু কোম্পানি রয়েছে তারা বিভিন্ন কাজের ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে থাকে। 
অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদন ফরম পূরণ করে পোল্যান্ড ম্যানপাওয়ার কোম্পানিতে পাঠাতে হবে। তারা আপনার ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করার পর প্রয়োজনে আপনার সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যোগাযোগ করবেন। তারপর তারা অ্যাটর্নি মাধ্যমে পোল্যান্ডের লেবার মিনিস্ট্রি থেকে আপনার ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন করে নেবে। 

১ থেকে ২ মাসের মধ্যে আপনার ওয়ার্ক পারমিট বের হয়ে যাবে। ওয়ার্ক পারমিট বের হওয়ার পর তারা আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আপনার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেবে। আপনার ওয়ার্ক পারমিট বের হয়ে গেলে পোল্যান্ড এই কোম্পানি থেকে আপনাকে যেসব কাগজপত্র পাঠিয়ে দেবে তার মধ্যে রয়েছে- ওয়ার্ক পারমিট এর কপি, অ্যাকোমেন্ডেশন লেটার, এড্রেস প্রুফ, কোম্পানির ট্যাক্স, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন নম্বর, কোম্পানির গ্যারান্টি লেটার ইত্যাদি।

ভিসার জন্য আবেদন করা

পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট এর কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর আপনার কাজ হবে পোল্যান্ড এম্বাসিতে ভিসার জন্য আবেদন করা। যদি আপনার দেশে পোল্যান্ড এম্বাসি না থাকে তাহলে পার্শ্ববর্তী কোন দেশের পোল্যান্ড এম্বাসি তে আবেদন করতে হবে।

বাংলাদেশের কোন নাগরিক পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা অন্য কোন ভিসায় যেতে চাইলে তাকে অবশ্যই পার্শ্ববর্তী যে দেশে পোল্যান্ডের এম্বাসি রয়েছে সেখানে যোগাযোগ করতে হবে। বাংলাদেশের কোন নাগরিক চাইলেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, সিঙ্গাপুর, অথবা মালয়েশিয়া এগুলো দেশে অবস্থিত পোল্যান্ড এম্বাসির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। 
সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও কাতার থেকে পোল্যান্ড ভিসার আবেদন করলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বেশি টাকা খরচ করতে হবে। পোল্যান্ড এম্বাসির প্রতিনিধি হিসেবে VFS Global আপনার ভিসার যাবতীয় কাজকর্ম করে থাকে। তাই পোল্যান্ড ভিসার আবেদন জমা দিতে গেলে আপনি সরাসরি পোল্যান্ড এম্বাসিতে জমা দিতে পারবেন না। 

এক্ষেত্রে আপনাকে VFS Global এই অফিসে ভিসার এর জন্য আবেদন করতে হবে এবং VFS Global থেকেই সাক্ষাতের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। পোল্যান্ড এম্বাসি আপনার পাসপোর্টে একটি স্টিকার লাগিয়ে দেবে এবং সেখানে বলা থাকবে আপনাকে ১ বছরের জন্য ১ টি D-Type ভিসা দেয়া হলো। 

পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট এর মেয়াদ সাধারণত ১ বছর হয় তবে এটি পুনরায় মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারবেন। ভিসার আবেদনপত্র জমা দেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।

ভিসার আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র লাগবে।

আপনি পোল্যান্ডের কোন ভিসায় ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন তার উপর বিবেচনা করে আপনার কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। পোল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কাগজের প্রয়োজন হয়। উপরের তিনটি ভিসার ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন তা আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। 

বাংলাদেশে যেহেতু পোল্যান্ডের কোন এম্বাসি নেই তাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনাকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের VFS Global আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। বাংলাদেশ থেকে কোন নাগরিক যদি টুরিস্ট ভিসায় অথবা ব্যবসায়িক ভিসা পোল্যান্ড যেতে চায় তাহলে তাকে ভারতের VFS Global এ কাগজপত্র জমা না দিলেও চলবে। 
বাংলাদেশে অবস্থিত পোল্যান্ড এম্বাসির হয়ে কাজ করা এজেন্সিতে জমা দিতে পারবেন। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে অবশ্যই সরাসরি ভারতের VFS Global এ আবেদন পত্র জমা দিতে হবে।

ভিসার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।

  • অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করে ফরমটি প্রিন্ট করতে হবে এরপর আপনার স্বাক্ষর করতে হবে;
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট এর কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে;
  • 3.5*4.5 cm সাইজের রঙিন ছবি ২ কপি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড সহ, ল্যাপ প্রিন্ট;
  • আপনার পাসপোর্ট এর যে পাতায় ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে সে পাতার ফটোকপি সঙ্গে একটি ছবি দিতে হবে;
  • ১০ বছরের মধ্যে ইস্যু হয়েছে এমন পাসপোর্ট হতে হবে;
  • আপনার রিটার্নের সময় পাসপোর্ট এর মেয়াদ যেন ৩ মাস থাকে পাসপোর্টে যেন অন্তত ২ টি পৃষ্ঠা ফাঁকা থাকে;
  • আপনার যদি পূর্বের কোন পাসপোর্ট থাকে তাহলে সেটি ভিসার আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে;
  • ৩০ হাজার ইউরো চিকিৎসা বিমার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে;
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • একটি কভার লেটার ও সিভি;
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণের সার্টিফিকেট; (কমপক্ষে HSC)
  • পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিটের কপি কাজের ভিসার ক্ষেত্রে;
  • কোম্পানি থেকে দেওয়া জব কন্টাক্ট ফর্ম;
  • কোম্পানি থেকে দেওয়া এ্যাকুমেন্ডেশন কন্টাক্ট ফর্ম;
  • এক বছর মেয়াদ মেডিকেল ইন্সুরেন্স;
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট;
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট;
  • বিএমইটি স্মার্ট কার্ড;
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট কমপক্ষে ৩ মাসের। ভ্রমণ ভিসা, ব্যবসায়িক ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা স্টুডেন্ট ভিসা ক্ষেত্রে;
  • হোটেল বুকিং এর তথ্য। ভ্রমণ ও ব্যবসায়ী ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য;
  • রিটার্ন বিমান টিকেট। ভ্রমণ ও ব্যবসায়ী ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য;
  • পরিবার ও বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে সাক্ষাৎ এর উদ্দেশ্যে গেলে আপনাকে আপনার পরিবারের সদস্য বা বন্ধু যেখানে থাকে তার ঠিকানা, ফোন নাম্বার এবং আমন্ত্রণপত্র দিতে হবে অথবা রেসিডেন্ট পারমিট দিতে হবে।
  • শিক্ষার্থী, গবেষক, স্বেচ্ছাসেবী যারা পোল্যান্ডে ভ্রমণ করবেন তাদের যথাযথ প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র, প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার এবং হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র দিতে হবে;
  • রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংস্কৃতি ও বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণপত্র, হোটেল বুকিং, হোটেলের নাম, ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বর দিতে হবে;
  • যারা দোভাষী থাকবেন তাদের ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট, আবাসস্থলের নাম, ঠিকানা, টেলিফোন নাম্বার দিতে হবে;
  • অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভিসার আবেদন করতে হলে তাদের পিতা-মাতার অরজিনাল পাসপোর্ট এর ফটোকপি ও জন্ম সনদ মূলকপি দিতে হবে;
পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো যথেষ্ট তবে, এম্বাসি কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে তাহলে অন্যান্য কাগজপত্র আপনাকে জমা দিতে হবে। এম্বাসি কর্তৃপক্ষ আপনারকে সাক্ষাৎকারের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারে সেক্ষেত্রে আপনাকে সাক্ষাতের জন্য যেতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে।

বাংলাদেশ থেকে পোলান্ডে যেতে এজেন্সি ফি, ওয়ার্ক পারমিট, ভিসার আবেদন, ইন্সুরেন্স, বিমান ভাড়া, মেডিকেল, অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা মত লাগতে পারে। পোল্যান্ডে যদি আপনার কোন আত্মীয় অবস্থান করে বা পোল্যান্ডের নাগরিক হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সে যদি আপনার জন্য ওয়ার্ক পারমিট পাঠায় তাহলে, বর্তমানে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা মধ্যে আপনি পোলান্ড যেতে পারবেন। 

স্টুডেন্ট ভিসায় পোল্যান্ডে যেতে আপনার খরচ হবে ১.৫লক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা। এছাড়া ভ্রমণ ভিসায় যেতে আপনার খরচ হবে এক লক্ষ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা। ভিসার খরচ অনেকটা নির্ভর করে ভিসার ধরন, গমনকারী দেশে আপনি কতদিন অবস্থান করবেন তার উপর।

পোল্যান্ড কাজের বেতন কত?

পোলান্ডে একজন বাংলাদেশী বা অন্য দেশের নাগরিক ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কাজ করলে কত টাকা বেতন পাবে তা সেই দেশের শ্রম আইন দ্বারা নির্ধারণ করে দেওয়া রয়েছে। কোন কোম্পানি চাইলেই সহজে কোন কর্মীকে কম বেতন দিতে পারবেন না। এর পাশাপাশি একজন কর্মীর কাজের ধরন, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে বেতনের কমবেশি হয়ে থাকে। 

নতুন অবস্থায় পোল্যান্ডে একজন কর্মীর মাসিক বেতন সর্বনিম্ন ৩৮৩০ PLN . যা বাংলাদেশী টাকায় বর্তমানে ৯০ হাজার টাকা। পোল্যান্ডে একজন কর্মী সপ্তাহে ৫ দিন প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে কাজ করতে হয়। ৮ ঘন্টার পরবর্তী সময়ে যে কাজ করবেন তা ওভারটাইম হিসেবে গণ্য হবে। ওভারটাইমসহ একজন বাংলাদেশী বা ভিনদেশী নাগরিক পোল্যান্ডের প্রতি মাসে গড়ে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বেতন পান।

পোল্যান্ড থেকে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়।

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন ইউরোপী ইউনিয়নের দেশভুক্ত প্রত্যেকটি দেশের নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ ভ্রমণের জন্য কোন পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয় না। পোল্যান্ড যেহেতু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ভুক্ত একটি দেশ তাই পোল্যান্ডের নাগরিক এবং পোল্যান্ডের বসবাসকারী অন্য দেশের নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। 

পোল্যান্ড থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য ভুক্ত দেশ। যেমন- জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, স্পেন, রোমানিয়া, বেলারুশ, ডেনমার্ক, লিথুনিয়া, ইউক্রেন ইত্যাদি দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। পোল্যান্ডে বসবাসকারী একজন বিদেশী নাগরিক যারা সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে পোল্যান্ডে অবস্থান করছে তারা চাইলেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে যেতে পারবেন। 

তবে কোন কাজ করতে চাইলে এটি খুব কঠিন হবে। সহজে অন্য দেশের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায় না। এজন্য আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি, এজেন্সি ও দালালকে প্রচুর পরিমাণে টাকা দেওয়া লাগতে পারে।

পোল্যান্ডে যেতে যেসব দেশের ভিসা লাগে না।

আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বসনিয়া এন্ড হারজেগভিনা, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, কানাডা, চিলি, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ডমিনিকা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হংকং, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইসরাইল, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, নর্থ মেসিডোনিয়া, মালয়েশিয়া, মাল্টা, মেক্সিকো, মোনাকো, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নিকারাগুয়া, নরওয়ে, পান্নামা, প্যারাগুয়ে, পেরু, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সিঙ্গাপুর, স্লোভানিয়া, আইল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ভেনিজুয়েলা, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক আজকের আলোচনায় আমি পোল্যান্ডের ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আজকের আলোচনার যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। বিভিন্ন দেশের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা টুরিস্ট ভিসা স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

প্রশ্নঃ পোল্যান্ডের কি কি ধরনের কাজ পাওয়া যায়?

উত্তরঃ সেলসম্যান, বুচারি যাকে আমরা কসাই বলি, কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার এবং ড্রাইভার।

প্রশ্নঃ পোল্যান্ড ভিসা ফি কত?

উত্তরঃ ১১৮ CDA বাংলাদেশী টাকায় ৯৬৭০ টাকা।

প্রশ্নঃ পোল্যান্ডের ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে?

উত্তরঃপোল্যান্ডের ভিসা পেতে ১৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url