আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন ও ভিসা প্রসেসিং ফি ২০২৪
উন্নত জীবনের আশায় আপনারা যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে যেতে আগ্রহী তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি হতে চলেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেননা আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করার নিয়ম এবং পারমিট পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আয়ারল্যান্ডের জব অফার পাওয়ার প্রক্রিয়া।
আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে বা কোন প্রক্রিয়াতে পাওয়া যায় এই বিষয় সম্পর্কে। আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে পাওয়া যায় এটি জানা থাকলে আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আলোচনা বুঝতে আপনার সুবিধা হবে।
ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়া (EEA) বাহিরের দেশগুলো থেকে আয়ারল্যান্ড সরকার প্রতিবছর হাজার হাজার লোক নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে বা ইউরোপীয় ইকোনোমিক এরিয়ার (EEA) বাহিরের দেশগুলো থেকে সরাসরি আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন না। এই জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি জব অফার বা জব কন্টাক।
আরো পড়ুনঃ কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়
এখন প্রশ্ন হল জব কন্টাক্ট কিভাবে পাবেন। আয়ারল্যান্ডের জব অফার পাওয়ার জন্য আপনাকে কয়েকটি মাধ্যমে খোঁজ করতে হবে। যেমন- নিকট আত্মীয় বা বন্ধু-বান্ধব, ইউরোপের কিছু এজেন্সির মাধ্যমে। এছাড়া আপনি বিভিন্ন জব সাইটে আপনার সিভি জমা দিয়ে রাখতে পারেন।
আয়ারল্যান্ডের কোন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা ব্যক্তি যদি তাদের কর্মীর প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে উপরের উল্লেখিত তিনটি মাধ্যমের যেকোনো একটি মাধ্যমে তারা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। প্রয়োজনে তারা আপনার ইন্টারভিউ নিতে পারে।
এরপর যদি আপনাকে তাদের উপযুক্ত ক্যান্ডিডেট মনে হয় তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইবে এবং আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আয়ারল্যান্ডের যথাযথ কর্তৃপক্ষের The Department Of Enterprise Trade And Employment ( DETE) কাছে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবে। আপনার নামে ওয়ার্ক পারমিট হয়ে গেলে ওয়ার্ক পারমিটের কপি আপনার কাছে পাঠিয়ে দেবে।
আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসার জন্য আলাদাভাবে আবেদন করতে হয়। প্রথমে আবেদন করতে হয় ওয়ার্ক পারমিটের। ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন হয়ে আসলে এরপর আবেদন করতে হয় ভিসার জন্য। আয়ারল্যান্ডে স্বল্প ও দীর্ঘ উভয় মেয়াদের জন্যই ভিসা দেয়া হয়।
প্রাথমিক অবস্থায় 2 বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিসার অনুমোদন দেয়া হয় পরবর্তীতে আরও 3 বছর এটি বৃদ্ধি করা যায়। আয়ারল্যান্ডে 5 বছর বৈধভাবে কাজ করার পর আপনি সেই দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।
আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হচ্ছে একটি দীর্ঘ মেয়াদী Long Stay - D Visa যা আপনাকে কাজের উদ্দেশ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেই দেশে থাকার অনুমতি দেয়। The Department Of Enterprise Trade And Employment ( DETE) কর্তৃপক্ষ আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিটের অনুমোদন দিয়ে থাকে।
The Department Of Enterprise Trade And Employment ( DETE) কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কাজের অনুমোদন পত্র বা ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ( DETE) এই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন দিয়ে থাকে। আয়ারল্যান্ডের ( DETE) কর্তৃপক্ষ 9 ধরনের ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের অনুমতি দেয়। যেমন-
- General Employment/Work Permit
- Critical Employment/ Work Permit
- Dependant/Partner/Spouse Employment/Work Permits
- Intra Company Transfer Employment/Work Permit
- Internship Employment/ Permit
- Contract For Services Employment/Work Permit
- Sport And Cultural Employment/ Work Permit
- Exchange Agreement Employment/Work Permit
- Reactivation Employment/Work Permit
General Employment/Work Permit নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট।
আয়ারল্যান্ড সরকার বিদেশি নাগরিকদের সে দেশে কাজ করার জন্য যে 9 ধরনের Employment/Work Permit প্রদান করে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো General Employment/Work Permit. এ ধরনের কাজের অনুমতি জন্য আপনাকে অবশ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইকোনমিক এরিয়ার বাহিরের যে কোন একটি দেশের নাগরিক হতে হবে।
General Employment/Work Permit যেকোনো পেশার মানুষ জন্য আবেদন করতে পারবেন এখানে কোন নির্দিষ্ট প্রেসার মানুষের কথা উল্লেখ করা নেই। তবে নন স্কিল ওয়ার্ক পারমিট এর আওতায় দেশটি হোটেল সেভফ, বুচারি, ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার, কনস্ট্রাকশন এই খাতে ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়া ভিসা প্রসেসিং এজেন্ট লিস্ট ২০২৪
নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট এর মেয়াদ সাধারণত 2 বছরের জন্য হয়ে থাকে তবে পরবর্তীতে এটি আরো 3 বছরের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারবেন। দীর্ঘ 5 বছর সম্পূর্ণ বৈধভাবে আয়ারল্যান্ডে কাজ করার পর আপনি সেই দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করবেন।
নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ।
নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করবেন তাদেরকে নিচে উল্লেখিত কাগজগুলো জমা দিতে হবে।
- একটি বৈধ পাসপোর্ট যেখানে আপনার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। নতুনদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট এর মেয়াদ 6 মাস এবং পুরাতনদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট এর মেয়াদ 3 মাস থাকতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
- কাজের অভিজ্ঞতা সনদ( যদি থাকে)
- কাজের চুক্তিপত্র যেখানে বার্ষিক ইনকাম উল্লেখ থাকবে। (নতুনদের জন্য প্রযোজ্য নয়)
- কোম্পানির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। যেমন- কোম্পানির নাম, কোম্পানির নম্বর, কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন নম্বর, কোম্পানির ঠিকানা ইত্যাদি।
- ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়ার বাইরের রাষ্ট্রের যেসব নাগরিক আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। (নতুনদের জন্য প্রযোজ্য নয়)
- রেসিডেন্ট রেজিস্ট্রেশন নাম্বার অথবা লাইসেন্স নাম্বার দিতে হবে। (নতুনদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)
আয়ারল্যান্ডের নতুন General Employment/Work Permit এপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর এগুলো অনলাইনে আপলোড করতে হবে। Employment Permit Online System ( EPOS) এর আওতায় General Employment/Work Permit এর জন্য আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আবেদন জমা দেওয়ার পর আপনাকে একটি আইডি নম্বর দেয়া হবে এই আইডি নম্বর দিয়ে আপনি চেক করতে পারবেন আপনার Employment/Work Permit কার্যক্রম কতদূর এগিয়েছে।
আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করবেন সেই দেশের নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। এটি আপনার কাজ নয় আপনাকে শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট এর খরচ কত?
আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট এর খরচ নির্ভর করবে আপনার সেই দেশের চাকরির চুক্তিপত্রে উল্লেখিত সময়ের উপর অর্থাৎ আপনি কত সময়ের জন্য আয়ারল্যান্ডে অবস্থান করবেন তার উপর ভিত্তি করে খরচ নির্ধারিত হয়।
যেমন- আপনি যদি 6 মাস পর্যন্ত অবস্থান করতে চান তাহলে একটি নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট এর প্রসেসিং ফি হবে 500 ইউরো। আপনি যদি 6 মাসের বেশি 2 বছরের কম সময়ের জন্য ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করেন তাহলে ফি হবে 1000 ইউরো।
আরো পড়ুনঃঅনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম
আপনি যদি পূর্বের থেকেই আয়ারল্যান্ডে বসবাস করেন এবং ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি চান কোম্পানি পরিবর্তন করে অন্য কোম্পানিতে কাজ করবেন তাহলে আপনাকে নতুন করে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য আবেদন করতে হবে।
আপনি যদি চান আপনার ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ 6 মাস বাড়িয়ে নেবেন তাহলে আপনাকে 775 ইউরো প্রসেসিং ফি দিতে হবে। আর আপনি যদি চান আপনার ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ 6 মাসের অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত বাড়িয়ে নেবেন তাহলে আপনাকে 1500 ইউরো প্রসেসিং ফি দিতে হবে।
আয়ারল্যান্ডের কোন কোম্পানি যদি আপনাকে সরাসরি হায়ার করে বা নিয়োগ দেয়। তাহলে ঐ কোম্পানি আপনার যাবতীয় খরচ বহন করবে। যেমন ওয়ার্ক পারমিটের প্রসেসিং ফি, বিমান ভাড়া সহ অন্যান্য খরচ।
নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট পেতে কতদিন সময় লাগে?
আয়ারল্যান্ডের General Employment/Work Permit বা নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট পেতে আপনার সময় লাগতে পারে ২৮ কর্ম দিবস। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে না হয় নাই। আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট আবেদনটি যদি রিজেক্ট করা হয় তাহলে আপনি ২৮ দিনের মধ্যে পুনরায় আপিল করতে পারবেন।
আপিলের পরবর্তী সময় যদি আপনার আবেদনটি গ্রহণ করা না হয় তাহলে আপনার প্রসেসিং ফি ফেরত দেয়া হবে। (এই কাজটিও আপনার না এটি আপনার নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান করবে)।
Critical Employment Permit স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট।
যদি আপনি একজন ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়ার বাহিরের কোন রাষ্ট্রের নাগরিক হন তাহলে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আয়ারল্যান্ডে আসতে পারবেন।( এ কথা আমি আগেই উল্লেখ করেছি) এবং সেখানে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই নির্দিষ্ট কাজের উপরে দক্ষতা থাকতে হবে।
Critical Employment/Work Permit বা স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট। নিয়ে আয়ারল্যান্ডে আসতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন কাজের অভিজ্ঞ হতে হবে। তাহলে আপনি আয়ারল্যান্ডে আসতে পারবেন।
প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি কাজের অনুমতি পেয়ে থাকেন তাহলে আয়ারল্যান্ডে 2 বছরের মত থাকতে পারবেন এবং কাজ করতে পারবেন। তারপর সফলভাবে 5 বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর আপনি স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
কোন কোন কাজের দক্ষতা থাকলে আপনি আয়ারল্যান্ডের স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট জন্য আবেদন করতে পারবেন সেই বিষয়টি এখন আপনাদের জানাবো। যেসব বিষয়ের উপর দক্ষতা থাকলে আপনি স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট জন্য আবেদন করতে পারবেন তা নিচে তুলে ধরা হলো।
কেমিস্ট্রি, বায়োলজিস্ট, ইঞ্জিনিয়ারস, মেডিকেল প্র্যাকটিশনার, ফার্মাসিস্ট, নার্সেস, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট প্রফেশনাল, আর্কিটেক্ট।
আয়ারল্যান্ডের স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য প্রসেসিং ফি বাবদ আপনাকে 1000 ইউরো দিতে হবে। আবেদনকারীর আবেদন যদি অনুমোদিত না হয় বা প্রত্যাখ্যান হয় সেই ক্ষেত্রে আবেদনকারী 90% টাকা ফেরত পাবেন। যদি আপনার অ্যাপ্লিকেশনটি অনুমোদিত হয় তাহলে আপনাকে 300 ইউরো ফি দিতে হবে সার্টিফিকেট নিবন্ধনের জন্য।
এছাড়া স্কিল ওয়ার্ক পারমিট আবেদন প্রক্রিয়া, কাগজপত্র, অনুমোদন পাওয়ার সময়, নন স্কিল ওয়ার্ক পারমিটের মতো ।
আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন।
আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট বের হওয়ার পরে এবার আপনার কাজ হল ভিসার জন্য আবেদন করা। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পরে যে আপনি শতভাগ ভিসা পেয়ে যাবেন এমন নিশ্চয়তা মনে করা যায় না। আপনার ভিসা হওয়ার পরে আপনি আয়ারল্যান্ডে ভ্রমণ করতে পারবেন বা যেতে পারবেন।
আপনাকে আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে ইউরোপীয় ইকনোমিক এরিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের যেসব দেশ রয়েছে সে সব দেশের বাহিরের কোন রাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে।কিভাবে আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয় তা অনেকেই জানেন না।
আয়ারল্যান্ড এর ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর ভিসার জন্য অনলাইনে AVATS এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে । আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনাকে আয়ারল্যান্ড এ্যাম্বসিতে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আপনার ভিসা এপ্লিকেশন প্রসেসিং করতে প্রায় 8 সপ্তাহের সময় লেগে যেতে পারে তাই এমপ্লয় পারমিট বা ওয়ার্ক পারমিট হাতে পাওয়ার পরেই যত দ্রুত সম্ভব ভিসার জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে।
তাহলে দ্রুত ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। AVATS এর মাধ্যমে সঠিক তথ্য পূরণ করে আপনার আবেদন ফরম প্রিন্ট করে স্বাক্ষর ও তারিখ দিয়ে এর সঙ্গে আপনার অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে। ভিসার জন্য আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পর আপনাকে সাক্ষাৎ ও বায়োমেট্রিক বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জন্য ডাকা হতে পারে।
আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন পত্রের সহিত ভুয়া তথ্য ও বানোয়াট তথ্য কাগজপত্র জমা দিলে আপনার অবস্থার বিবেচনা করে আবেদন পত্রটি বাতিল করা হতে পারে এবং আপনি যাতে 5 বছরের জন্য নতুন করে ভিসার আবেদন যাতে না করতে পারেন এই জন্য ব্লক করে দিতে পারে।
আয়ারল্যান্ড ভিসা প্রসেসিং ফি ২০২৪
আয়ারল্যান্ডের Long Stay - D Visa ভিসা জন্য সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসার 60 ইউরো এবং মাল্টিপল এন্ট্রির জন্য 100 ইউরো দিতে হবে। এ ভিসা প্রসেসিং ফি General Employment/Work Permit নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং Critical Employment Permit স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা উভয় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা জন্য প্রযোজ্য।
আয়ারল্যান্ড ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিশ্বের ১৬ টি দেশের নাগরিকদের General Employment/Work Permit নন স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদনের ফি মওকুফ করেছে। যেমন- বসনিয়া, ইকুয়েডর, ইন্দোনেশিয়া, জামাইকা, কসভো, কাজাকিস্তান, মন্টিনিগো, মরক্কো, নর্থ মেসিডোনিয়া, পেরু, সার্বিয়া, শ্রীলংকা, উগান্ডা, জাম্বিয়া ও কোড ডিভোরায়া।
আপনার ভিসার ফি জমা দেওয়ার পর একটি আবেদনের এপ্লিকেশন সামারি ফর্ম দেয়া হবে এবং একটি ইমেইল এড্রেস দেয়া হবে সেই ইমেইল এড্রেস এর মাধ্যমে আপনি আপনার অন্যান্য সাপোর্টিং ডকুমেন্টসগুলো দিতে হবে। আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যারা পেয়েছেন তারা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আয়ারল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারবেন না।
যদি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আয়ারল্যান্ডে নিয়ে আসতে চান তাহলে আপনাকে ফ্যামিলি রিইউনিফিকেশন ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। অন্য আরেকটি ব্যবস্থার মাধ্যমে আপনার ফ্যামিলির অন্যান্য সদস্য আয়ারল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারবেন।
তাহল তাদের জন্য পুনরায় General Employment/Work Permit অথবা Critical Employment Permit ভিসা জন্য আলাদাভাবে সকল প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে আবেদন করতে হবে। আয়ারল্যান্ডের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আপনার কাগজপত্র চেক করার পর আপনাকে আয়ারল্যান্ডে প্রবেশের অনুমোদন দেবে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
- সাম্প্রতিক তোলা 2 কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ছবির সাইজ 50*38 mm, ছবিতে আপনার মুখমন্ডলের 70% থেকে 80% যেন দেখা যায়।
- বর্তমান পাসপোর্ট এবং পূর্বের সকল পাসপোর্ট এর মূলকপি।
- আয়ারল্যান্ডে পৌঁছার তারিখ থেকে আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ 6 মাস থাকতে হবে।
- নিজের সিগনেচার করা আবেদন পত্র। আবেদনপত্রে আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে দিতে হবে।
- The Department Of Enterprise Trade And Employment ( DETE) থেকে প্রদান করা ওয়ার্ক পারমিটের কপি।
- নিয়োগ কারী প্রতিষ্ঠানের সাথে অঙ্গীকারনামা বা চুক্তিপত্র।
- নিয়োগকর্তার আমন্ত্রণ পত্র যদি নিয়োগকর্তা আবাসনের ব্যবস্থা করে সেটা উল্লেখ করতে হবে।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট 6 মাসের এবং ব্যাংকের পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে কোন ধরনের অনলাইন কপি গ্রহণযোগ্য নয় অবশ্যই হার্ড কপি জমা দিতে হবে।
- মেডিকেল ও ট্রাভেল ইন্সুরেন্স মেডিকেল ও ট্রাভেল ইন্সুরেন্স ভিসা জন্য প্রয়োজন হবে না এটা আপনার কাছে রেখে দেবেন ইমিগ্রেশন অফিসার যখন এয়ারপোর্টে এটি দেখতে চাইবে তখন দেখাতে হবে।
- পূর্বে কোন ভিসার আবেদন যদি বাতিল হয়ে থাকে তাহলে সেটা দেখাতে হবে কি কারণে বাতিল করা হয়েছে তার ডকুমেন্ট স আপনার আবেদনের সহিত এটাস্ট করতে হবে।
- এছাড়া আপনাকে আরও যেসব কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে তা হল বার্থ সার্টিফিকেট,ডেট সার্টিফিকেট, ম্যারেজ সার্টিফিকেট, ডিভোর্স সার্টিফিকেট এই কাগজগুলো বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত হতে হবে।
আয়ারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত?
ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় আয়ারল্যান্ডের বেতন তুলনামূলক অনেক বেশি ওভারটাইম ও অন্যান্য অ্যালাওনস বাদে আয়ারল্যান্ডের একজন নন স্কিল্ড কর্মীর সর্বনিম্ন বাৎসরিক বেতন 30,000 ইউরো। বর্তমান 1 ইউরো = বাংলাদেশি 120 টাকা। সে হিসেবে ইউরোপে দেশ আয়ারল্যান্ডের একজন ননস্কিল কর্মীর বাৎসরিক সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশী টাকায় 36 লক্ষ টাকা।
অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের একজন স্কিলড কর্মীর বাৎসরিক সর্বনিম্ন বেতন 32,000 ইউরো। বর্তমানে 1 ইউরো= বাংলাদেশী 120 টাকা।সে হিসেবে আয়ারল্যান্ডে একজন স্কিল্ড কর্মীর বাৎসরিক সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশী টাকায় 38 লক্ষ 40 হাজার টাকা।
বেতনের এই স্কেল সরকারি শ্রম আইন দ্বারা নির্ধারিত এর কম বেতন কোন প্রতিষ্ঠান কোন কর্মীকে দিতে পারবে না।
শেষ কথাঃ
প্রিয় পাঠক, আজকের এই আলোচনায় আমি আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আমার এই পোষ্টের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আপনারা যারা উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে যেতে চাচ্ছেন এবং যারা আয়ারল্যান্ডে রয়েছেন সেইসব ভাইদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url