দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে কাজের সুযোগ

দক্ষিণ কোরিয়া সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে একটি দীর্ঘ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যে সকল মেধাবী শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে আগ্রহী তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি হতে চলেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাওয়ার উপায় সম্পর্কে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার উপায়
প্রিয় পাঠক আজকের এই আলোচনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনারা আরও জানতে পারবেন স্টুডেন্ট ভিসা করতে কি কি কাগজ লাগে? দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার শর্ত সমূহ কি কি? দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা করতে কত টাকা খরচ পড়ে? দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট হিসেবে গিয়ে কি কাজ পাওয়া যায় এসব সম্পর্কে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার উপায়।

দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়া মহাদেশের পূর্বাংশের একটি উন্নত শিল্পসমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মেধাবী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ প্রতিবছর দক্ষিণ কোরিয়ায় স্কলারশিপ নিয়ে অথবা সরাসরি সেদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে পড়াশোনা গ্রহণ করে। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক-

দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা কি?

ভিসা বলতে সাধারনত কোন একটি দেশ থেকে অন্য একটি দেশে গমন করার জন্য এক ধরনের অনুমতি পত্র। গমনকারী দেশ ভিসা প্রার্থীকে তার চাহিদা মাফি ভিসা ইস্যু করে থাকে। আজকে আমি যেহেতু দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আলোচনা করব তাই দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা কি এখন এটা নিয়ে বলবো। 
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশের দেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অনেকেই পড়াশোনা করতে যেতে চায়। যে সকল শিক্ষার্থী স্কলারশিপ নিয়ে অথবা সরাসরি নিজ খরচে দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনার জন্য ভিসার আবেদন করে সেই সকল স্টুডেন্টদের কোরিয়া সরকার স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে থাকে। দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা বলতে মূলত ডি -২ ভিসাকে বুঝায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার ধরন।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বিদেশি স্টুডেন্টদের জন্য D-2 স্টাডি ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে থাকে। D-2 ভিসার বৈধতার পায় সেই দেশে প্রবেশের তিন মাস পর। যে সকল বিদেশি স্টুডেন্ট উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চায় সেই সকল স্টুডেন্টদের বিভিন্ন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে নিম্নলিখিত স্টুডেন্ট ভিসা উল্লেখযোগ্য-
  • সহযোগী ডিগ্রীর জন্য D-2-1
  • স্নাতক ডিগ্রির জন্য D-2-2
  • স্নাতকোত্তর ডিগ্রীর জন্য D-2-3
  • ডক্টরে ডক্টোরাল ডিগ্রীর জন্য D-2-4
  • গবেষণা অধ্যয়নের জন্য D-2-5
  • এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্টদের জন্য D-2-6



দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য কি কি কাগজের প্রয়োজন হয়।

  • সর্বনিম্ন ১৫ মাস মেয়াদ রয়েছে এ রকম একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট এর প্রথম পাঁচ পাতার ফটোকপি।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • ভিসা জন্য যিনি আবেদন করবেন তিনি নিজ হাতে একটি আবেদন পত্র লিখবেন।
  • ভর্তি কৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনাকে একটি সার্টিফিকেট দেবে এই সার্টিফিকেটের একটি ফটোকপি ও মূলকপি লাগবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও মূলকপি।
  • আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধনের মূল কপি ও ফটোকপি যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে।
  • ৫০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে পিতামাতার সম্মতিপত্র।
  • পিতা-মাতার পাসপোর্ট এর ফটোকপি। যদি পাসপোর্ট না থাকে তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে।
  • পুলিশ ভেরিফিকেশনের সনদপত্রে ফটোকপি। যা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে।
  • এসএসসি ও এইচএসসি সহ সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের ফটোকপি যা নোটারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে।
  • একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট (পিতা-মাতার হলে ভালো হয়)।
  • এয়ার টিকেটের বুকিং স্লিপ।
  • আইইএলটিএস এবং টপিক এর সার্টিফিকেট এর ফটোকপি।
  • সকল ধরনের কাগজপত্র ইংলিশে ভার্সনে লিখে বা কনভার্ট করে জমা দিতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার শর্ত সমূহঃ

বিদেশি তরুণদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা। দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা পাশ্চাত্যের শিক্ষা ব্যবস্থার অনুরূপ। আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চান তাহলে আপনার যে প্রাথমিক যোগ্যতা থাকতে হবে তা নিম্নরূপ-

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ

বাংলাদেশী কোন শিক্ষার্থী দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে গেলে তাকে কমপক্ষে এসএসসি অথবা এইচএসসি পাস হতে হবে। শুধু পাস হলেই হবে না আপনাকে কমপক্ষে উভয়ই পরীক্ষায় আলাদা আলাদা ভাবে ২.৮০ অর্জন করে পাশ করতে হবে। তাহলে আপনি দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন বা ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ভাষা দক্ষতাঃ

আপনি দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের ভিসায় যান আর স্টুডেন্ট ভিসায় যান না কেন আপনাকে অবশ্যই সেই দেশের ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় দুইটি ভাষায় শিক্ষা প্রদান করা হয়। কোরিয়ান ভাষা ও ইংরেজি ভাষা। 
ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা অর্জনের জন্য আই ই এল টি এস স্কোর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষার জন্য টপিক স্কোর থাকতে হবে। চলুন এবার এ দুটি বিষয় নিয়ে সামান্য কিছু আলোচনা করা যাক-

আইইএলটিএস স্কোরঃ

দক্ষিণ কোরিয়ায় ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াশোনা করার জন্য আপনার মিনিমাম আইইএলটিএস স্কোর থাকতে হবে ৫.৫। এর নিচে হলে আপনি দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা পাবেন না তবে আপনার পয়েন্ট যদি ৫.৫ এর উপরে থাকে তাহলে আপনি সেই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পাবেন।

টপিক স্কোরঃ

বাংলাদেশী কোন শিক্ষার্থী যদি দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষায় পড়াশুনা করতে চায় তাহলে তাকে দক্ষিণ কোরিয়া ভাষার উপরে টপিক কোর্স এ মিনিমাম লেভেল -৩ পাস করতে হবে। তবে কোন কোন ইউনিভার্সিটিতে টপিক লেভেল - ৪ চাওয়া হয়। তাই আপনারা যারা দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষায় পড়াশোনা করবেন বলে ঠিক করেছেন তারা বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় টপিক লেভেল -৪ কমপ্লিট করে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করবে।

ব্যাংক স্টেটমেন্টঃ

আপনি দক্ষিণ কোরিয়ার যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ভিসার আবেদন করতে গেলে আপনাকে আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ হিসাবে প্রায় ১৮,০০০/= মার্কিন ডলার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। এটা আপনার নিজের ব্যাংক একাউন্ট হতে পারে অথবা আপনার বাবা , মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। 
কোন ধরনের এফডিআর ডিপিএস দেখালে চলবে না চলতি হিসাব অ্যাকাউন্ট এ আপনাকে ১৮০০০ মার্কিন ডলার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। কোন ধরনের ভুয়া স্টেটমেন্ট দেখাইলে পরবর্তীতে তার ভিসা বাতিল হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত?

এক দেশ থেকে অন্য দেশে গমন করার জন্য আপনাকে ভিসা করতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসার খরচ বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে আজকের আলোচনায় আমি দক্ষিণ কোরিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত এই বিষয়ে জানাবো-

উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা এ লেভেল শেষ করেই দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক পড়ার সুযোগ আছে।বাংলাদেশ থেকে যদি কোন শিক্ষার্থী কলারশিপ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার উদ্দেশ্যে যেতে চান সেক্ষেত্রে তাকে প্রথমেই একটি পাসপোর্ট করতে হবে। আইইএলটিএস অথবা টপিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে যার ফি আপনাকে বহন করতে হবে।

ফরেন মিনিস্ট্রি নটারি ও এম্বাসি থেকে কাগজপত্র attach করাতে আপনার কিছু টাকা পয়সার খরচ হবে। এই খাতে যাতায়াত ভাড়া বাবদ আপনার ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। আপনি যদি স্কলারশিপ অথবা সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে চান তাহলে আপনাকে সেই বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর একটি আবেদন করতে হবে। ইউনিভার্সিটি ভেদে আবেদন করতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
এর পরের ধাপে আপনাকে যা করতে হবে তা হল আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবেন সেই ইউনিভার্সিটি তে টিউশন ফি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে টিউশন ফি বাবদ আপনাকে ২৫০০ ডলার ফি দিতে হবে। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন সেটা হলো দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে বিভিন্ন ধরনের টিউশন ফি রয়েছে।

এরপরের কাজ হল ভিসার জন্য এম্বাসিতে আবেদন করা। এক্ষেত্রে এম্বাসি ভিসা ফি বাবদ ৬০০০ টাকার মতো জমা নিতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা কনফার্ম হওয়ার পরে আপনার শপিং, বিমান ভাড়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাড়ি ভাড়া, সেখানে কিছুদিন থাকার জন্য যে পরিমাণের টাকা প্রয়োজন তা আপনাকে সঙ্গে নিতে হবে। 

এর বাহিরে স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় বাড়তি আর কোন খরচ নেই।
সব মিলিয়ে স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে চাইলে আপনাকে প্রায় ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মতো খরচ করতে হবে।

ভিসার জন্য আবেদন।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিভার্সিটি গুলোতে বছরে দুই সেমিস্টারে ভর্তি নেওয়া হয় প্রথম সেমিস্টার হল মার্চ সেমিস্টার অপরটি সেপ্টেম্বর সেমিস্টার তাই যারা মার্চ সেমিস্টারে আবেদন করবেন তারা মার্চের পূর্বের তিন মাস বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট চেক করবেন কারণ এই সময় গুলোতে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি তাদের ভর্তির কার্যক্রম গ্রহণ করে। 

অপর সেমিস্টার হল সেপ্টেম্বর সেমিস্টার সেপ্টেম্বর সেমিস্টারের ভর্তির আবেদন শুরু হয় জুলাই, আগস্ট, অক্টোবরের দিকে। যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী স্বপ্নের দেশ দক্ষিণ কোরিয়াতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য যেতে আগ্রহী তারা সঠিক সময়ে সেই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট চেক করবেন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে কি কাজ করা যায়?

পড়াশোনার পাশাপাশি বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ আছে। আপনি যখন ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করবেন সেই সময় কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। ছুটির দিনে শিক্ষার্থীরা কাজ করতে পারেন। এছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনেও শিক্ষার্থীরা কাজ করতে পারবেন। বড় বড় শহরগুলোতে কাজের সুযোগ বেশি পাওয়া যায়। 

ছোট শহরগুলোতে কাজের উৎস তুলনামূলকভাবে কম। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সেই দেশে রেস্টুরেন্টের কাজ করার পারমিশন দিয়ে থাকে যদি কোন শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে অবৈধভাবে অন্য কোন ফ্যাক্টরিতে কাজ করে তাহলে তা সম্পন্ন অবৈধ এর ফলে আপনার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল হয়ে যেতে পারে এবং সেই দেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। 
কোন শিক্ষার্থী যদি দক্ষিণ কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি রেস্টুরেন্টে কাজ করে তাহলে বাংলাদেশী টাকায় প্রতি ঘন্টায় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই টাকা দিয়ে আপনি আপনার পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি আপনি সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন। 

তবে একটি বিষয় আপনাদের জানানো প্রয়োজন কোরিয়াতে ভাষা জ্ঞানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সুতরাং যে সকল শিক্ষার্থী কোরিয়ান ভাষার উপর ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করবেন তারা বা তাদের কাজের সুযোগ্য বেশি হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সুযোগ পায়। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি ও বেসরকারি বৃত্তি সম্পর্কে কিছু জেনে নেয়া যাক-

এশিয়া মহাদেশের পূর্বাংশের একটি দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। প্রতিবছর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের কোরিয়ান সরকার স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। সেই দেশের গ্লোবাল কোরিয়া স্কলারশিপ কর্মসূচির মাধ্যমে স্নাতক, স্নাতক উত্তর ও পি এইচ ডি পড়ার সুযোগ রয়েছে। সরকারি ভিত্তির স্কলারশিপ এর খোঁজখবর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়। 

দক্ষিণ কোরিয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এসব স্কলারশিপ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।দক্ষিণ কোরিয়ায় সরকারি স্কলারশিপ এর পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এইসব স্কলারশিপ এর খবর জানার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত দক্ষিণ কোরিয়ার ঐ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা শেষ করে চাকরির সুযোগ।

দক্ষিণ কোরিয়া তাদের মেধা ও প্রযুক্তি জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বুকে অর্থনৈতিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা শেষ করে সেই দেশে চাকুরী করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যে সকল শিক্ষার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনা করেন তাদের কাজের সুযোগ রয়েছে। 

বিদেশি কোন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে চাইলেই সেই দেশের বড় বড় কোম্পানিতে কাজের সুযোগ পায়। যেমন স্যামসাং, হুন্দাই মটরস, এলজি ইলেকট্রনিক্স সহ বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কাজের সুযোগ রয়েছে।

লেখক এর মন্তব্যঃ

দক্ষিণ কোরিয়ায় দ্রুত বিদেশী শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ৩ লাখেরও বেশি বিদেশী শিক্ষার্থী আকৃষ্ট করার জন্য এই পরিকল্পনা নিয়েছে।দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ধরনের নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়ে এগোচ্ছে এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তি বিষয়ক সরকারের নীতির পরিবর্তন, বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃষ্টি বাড়ানো, দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে সকল বিদেশি শিক্ষক রয়েছে তাদের বেতন বাড়ানো, বিদেশি শিক্ষার্থীদের খন্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করা ও সময় বাড়ানো,সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পড়াশোনা শেষে দীর্ঘ সময় দক্ষিণ কোরিয়াতে অবস্থানরত নাগরিকদের সেই দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url