টিউমার চেনার উপায় ও চিকিৎসা পদ্ধতি

জীবন আচরণ খাদ্যাভাস ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে টিউমার বা ক্যান্সার হয়ে থাকে। শরীরের কোন অংশে যদি টিউমার দেখা দেয় বিশেষ করে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার যেটি ক্যান্সারের রূপ ধারণ করে তা নির্ণয় করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এখন প্রশ্ন আসে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা টিউমার চেনার উপায় কি আজকের এই আলোচনায় আমি আপনাদের টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে বলবো।

টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনারা আরো জানতে পারবেন টিউমার কোথায় কোথায় হয়, টিউমার হলে কি খাওয়া নিষেধ, টিউমারের লক্ষণ, ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের চিকিৎসা সম্পর্কে।

টিউমার চেনার উপায়।

আমরা জানি যে টিউমার দুই প্রকার বিনাইন টিউমার এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। মানুষের দেহে টিউমার কিভাবে সহজে চেনা যায় তা বুঝতে গেলে আপনাকে প্রথমে এই উভয় ধরনের টিউমারের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে আর দেরি নয় চলুন বিনাইন টিউমার এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বৈশিষ্ট্য জেনে নেই-
বিনাইন টিউমারের বৈশিষ্ট্য সমূহঃ
  • একটিমাত্র আবরণ দ্বারা এই টিউমারটি আবৃত থাকে।
  • বিনাইন টিউমার শরীরের অন্য কোন স্থানে ছড়ায় না।
  • এই টিউমার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
  • অপারেশন করালে ভালো হয়ে যায় সাধারণত আর বাড়ে না।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বৈশিষ্ট্য সমূহঃ
  • ম্যালিগন্যান্ট টিউমার কোন আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে না তাই খুব দ্রুত এটি বৃদ্ধি পায়।
  • অগোছালোভাবে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সংক্রমণ ঘটায়।
  • শরীরের অন্যান্য স্থানে রক্তের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
  • ম্যালিগন্যান্ট টিউমার প্রাথমিক অবস্থায় থাকলে চিকিৎসা করলে দ্রুত ভালো হয়ে যায় তবে এটি পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা নিতে হয়।
  • ম্যালিগন্যান্ট টিউমার সর্বশেষ ক্যান্সারের রূপ নিতে পারে।

টিউমার কোথায় কোথায় হয় ।

এক কথায় যদি উত্তর দেয়া যায় তাহলে বলতে হবে আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশ এই টিউমার হতে পারে। অনেক সময় এই টিউমার আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না এটা আমাদের শরীরের অভ্যন্তরেই থাকে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের চামড়ার উপরে এই টিউমার দেখা যায় চামড়া এবং মাংসের মাঝামাঝি অবস্থানে এই টিউমার গুলো হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ক্রিয়েটিনিন কি? ক্রিয়েটিনিন কমানোর ঘরোয়া ১০টি উপায়
এগুলো খুব সহজে বোঝা যায় এবং অপারেশন খুব সহজে করা যায়। কিন্তু শরীরের অভ্যন্তরে যে টিউমার গুলো হয় সেগুলো সহজে দেখা যায় না এবং এগুলো অপারেশন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। শরীরের অভ্যন্তরে যেসব যেসব অংশে টিউমার হয় তার নিচে দেয়া হল। যেমন- পেট, প্রোস্টেট, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস, লিভার, কোলন, স্তন, ডিম্বাশয়, মস্তিষ্ক ও বুক ইত্যাদি।

টিউমার হলে কি খাওয়া নিষেধ।

আপনার শরীরের যদি টিউমার হয় তাহলে নিচে উল্লেখিত খাবার না খাওয়াই ভালো। এবার আপনাদের সামনে টিউমার হলে কি কি খাওয়া নিষেধ এসব এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। টিউমার হলে কিছু খাবার রয়েছে যা পরিহার করা উচিত এই খাবারগুলো টিউমারের বিস্তার রে সহায়তা করে বা টিউমারের চিকিৎসার কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় টিউমার হলে কি কি খাবার পরিহার করা উচিত তার নিম্নরূপ-
তামাক জাতীয় পণ্যঃ
অতিরিক্ত তামাক জাতীয় পণ্যের ব্যবহার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। ফিগারের সিগারেট বিড়ি জর্দা গুল ইত্যাদি তামাক জাতীয় দ্রব্য গ্রহণের ফলে আপনার টিউমার হতে পারে আর টিউমার থেকে ক্যান্সারের রূপ ধারণ করতে পারে অতিরিক্ত তামাক জাতীয় পণ্য ব্যবহারের ফলে আপনার শরীরের মুখ গলা ফুসফুস অণ্ডকোষ গর্ভাশয় ইত্যাদি জায়গায় টিউমার বা ক্যান্সার হতে পারে।
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারঃ
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার আপনার ক্যান্সারের কোষ গুলো বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে তাই ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে অবশ্যই অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করা উচিত।
অতিরিক্ত লবণ না খাওয়াঃ
অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তচাপ বেড়ে যায় যা টিউমারের কোষগুলির অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে শরীরের পেট ফুসফুস গলা ইত্যাদি অংশে টিউমার বা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অনেকে আছেন খাবারের সময় কাচা লবণ আলাদাভাবে খেয়ে থাকেন এটা অত্যন্ত ক্ষতির কারণ।
আরো পড়ুনঃ  মাথা ব্যথা কি? মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত গরম বা ঝাল দেওয়া খাবার না খাওয়াঃ
খাবার রান্নার পর ঠান্ডা করে খাওয়া উচিত অত্যাধিক গরম খাবার আমাদের শরীরে টিউমার বা ক্যান্সারের ঝুমকি বাড়ায় এর পাশাপাশি আমরা অনেকেই তরকারিতে অতিরিক্ত ঝাল খেয়ে থাকি যার কারণে আমাদের শরীরের গলা মুখ পে ট ইত্যাদি অংশে টিউমার বা ক্যান্সার হতে পারে।
মাংস জাতীয় খাবার পরিহার করাঃ
আপনি যদি টিউমার বা ক্যান্সার চিকিৎসার নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার মাংস জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত মাংস জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রের উপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয় যার ফলে আপনার চলতে থাকা ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যাঘাত ঘটে।
নেশা জাতীয় পণ্য পরিহার করাঃ
যারা অধিক পরিমাণে নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে তাদের টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য বেশি বেশি গ্রহণের ফলে গলায় বুকে এবং ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে। অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন প্রভূতি।
অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়াঃ
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার টিউমার বা ক্যান্সার রোগের উন্নতম একটি কারণ অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার যেমন গরুর মাংস, খাসির মাংস, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চর্বি।
রসুন, জিনসেং এবং হলুদ না খাওয়াঃ
সাম্প্রতিক ক্যান্সার বিষয়ক এক কনফারেন্সে বলা হয়েছে ক্যান্সারের রোগীরা ভেষজ পিল গ্রহণ করেন তাহলে বিষয়টি অবশ্যই চিকিৎসককে জানাতে হবে। কারণ এসব ভেষজ পিল এর কিছু উপাদান ক্যান্সার চিকিৎসায় বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যেমন স্তন ক্যান্সার যখন ছড়িয়ে যায় তখন রসুন কিংবা আদা খেলে চামড়ার ক্ষত সারতে দেরি হতে পারে।
মালটা কিংবা কমলা জাতীয় ফল পরিহার করাঃ
বৃটেনের ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার বলছে কিছু প্রথাগত ঔষধের বাহিরে কিছু পদ্ধতি কারণে মূল চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার আরো বলেছে ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালীন মালটা এবং কমলার মত খাবার এড়িয়ে চড়া চলা উচিত। 

কারণ ক্যান্সারের ঔষধ শরীরের ভেতর যেভাবে ভেঙে কাজ করে সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া কামরাঙ্গা, বাঁধাকপি এবং হলুদ এই তালিকায় রেখেছেন বৃটেনের ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার।

ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের লক্ষণ।

আপনার শরীরে যদি টিউমার হয় তাহলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে এ বিষয়টি অবশ্যই জানা প্রয়োজন তাহলে আপনি সহজে নিজে নিজে টিউমার সম্পর্কে প্রাথমিক একটি ধারণা পাবেন টিউমার চেনার উপায় হল শরীরের বিভিন্ন লক্ষণ ও পরিবর্তন লক্ষ্য করা টিউমারের লক্ষণগুলো টিউমারের ধরন আকার অবস্থান বৃদ্ধির গতির উপর নির্ভর করে তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ গুলো আপনার শরীরে প্রকাশ পাবে কি ধরনের লক্ষণ আপনার শরীরে প্রকাশ পাবে তার নিচে দেয়া হলো-
  • শরীরের যে অংশে টিউমার সেখানে মাংসপিণ্ড চাকা এবং শক্ত অনুভব হয়।
  • রাতে অতিরিক্ত ঘাম ঝরতে পারে অনেক সময় জ্বর আসে।
  • অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা।
  • অধিক রক্তপাত হওয়া।
  • শরীরের ওজন দ্রুত কমে যাওয়া।
  • প্রস্রাব, পায়খানা, বমি বা কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া।

ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের চিকিৎসা।

বিনাইন টিউমার মানুষের দেহে খুব একটা ক্ষতি করে না । ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হল এমন এক ধরনের টিউমার যা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্যান্সারের রূপ নেয়। আপনার শরীরে যদি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার দেখা দেয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো টিউমারটি অপসারণ করে ফেলা এবং টিউমারের কোষগুলো পুনরাবৃত্তি বা বৃদ্ধি যেন না ঘটে। কয়েকটি কার্যকরী পদ্ধতি সম্পর্কে এখন আলোচনা করব-
অপারেশনঃ
আপনার শরীরে যদি ম্যালিগনেন্ট টিউমার হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই অপারেশন করে এই টিউমার অপসারণ করা উচিত। অপারেশন করে টিউমার অপসারণ করলে এটির বিস্তার সহজে কমে আসে। অপারেশনের মাধ্যমে টিউমার অপসারণের দুইটি প্রধান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এটি করতে গেলে আপনার শরীরে অধিক রক্তপাত এবং সংক্রমনের সম্ভাবনা রয়েছে।
রেডিওথেরাপিঃ
রেডিওথেরাপি বা রোশনি চিকিৎসা হচ্ছে ক্যান্সার চিকিৎসার একটি কার্যকরী পদ্ধতি এই পদ্ধতির মাধ্যমে ক্যান্সারের কোষগুলোকে মেরে খেলা হয় বা কোষ গুলো বৃদ্ধি কমিয়ে না হয়। রেডিওথেরাপি অপারেশনের আগে বা পরে অন্যান্য চিকিৎসার সাথে মিশিয়ে দেয়া হতে পারে। 

রেডিওথেরাপি দেওয়ার পর এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে চুল পড়ে যাওয়া, ত্বকে জ্বালাপোড়া করা, বমি হওয়া, শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করা ইত্যাদি দেখা যেতে পারে।

কেমোথেরাপিঃ
কেমোথেরাপি এক ধরনের কেমিকাল চিকিৎসা যা ক্যান্সারের কোষগুলো মেরে ফেলে এবং তাদের বৃদ্ধি দ্রুত কমিয়ে আনে। কেমোথেরাপি রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে যাওয়া ক্যান্সারের কোষগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে চুল পড়া বমি হওয়া দুর্বলতা অনুভব করা ইত্যাদি হতে পারে।
টার্গেটেডথেরাপিঃ
ঔষধ প্রয়োগ করে রোগীর দেহে থাকা ক্যান্সারের কোষ গুলো বিশেষভাবে টার্গেট করে তাদের বিনাশ করা হয়। এ থেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সারের কোষগুলোকে সুস্থ কোষ থেকে আলাদা করে তাদের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়া হয়। টার্গেট থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে ত্বকের জ্বালাপোড়া, বমি হওয়া, দুর্বলতা অনুভব, করা রক্ত চাপ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি হতে পারে।
ইমিউনোথেরাপিঃ
ইমিউনোথেরাপি ক্যান্সার চিকিৎসার একটি কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি। এটির মাধ্যমে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তোলা হয় যার প্রভাবে ক্যান্সারের কোষগুলো দ্রুতগতিতে বাড়তে পারে না বা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। 
যার শরীরের ইমিউনিটি বেশি থাকে তাকে সহজে ক্যান্সার সহ অন্যান্য রোগ আক্রমণ করতে পারে না। যার শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধে ধরে নেয়া হয় তার শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার কম তাই তাকে ইমিউনোথেরাপি দেয়া হয় যাতে ক্যান্সার দ্রুতগতিতে দেহের অন্যান্য অংশে না ছড়াতে পারে।

ইসলামের দৃষ্টিতে ক্যান্সার চিকিৎসার প্রতিরোধ।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দুর্বল মুমিনের চেয়ে সুস্থ সবল মুমিন অনেক উত্তম।’ কারণ সুস্থ না থাকলে সঠিকভাবে আল্লাহর এবাদত করা যায় না। এজন্য পরিমিত জীবন যাপন করা আবশ্যক। ইসলাম পরিমিত জীবন যাপনের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।

পানাহার, চলাফেরা, আচার-আচরণ, ঘুম, জৈবিকতা নিয়ন্ত্রণ সহ সব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ ও পরিমান মেনে চলার জন্য ইসলাম বিধিবদ্ধ নির্দেশ দিয়েছেন। জীবনের সব ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলেছেন। ইসলামের এই নির্দেশনা মেনে চললে ক্যান্সার সহ জটিল ও কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম পরিমিত আহারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ভর পেটে খেতে নিষেধ করেছেন। পেটের এক তৃতীয়াংশ খাবার একাংশ পানি এবং এক অংশ খালি রেখে খাবার খেতে বলেছেন। এভাবে পরিমিত খাবার খেলে ক্যান্সার থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। যেসব খাবার খেলে ক্যান্সার হয় ইসলাম এসব খাবার নিষিদ্ধ করেছেন।

ইসলাম বিশুদ্ধ ও হালাল খাবার খাওয়ার জন্য সব মানুষকে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! পৃথিবীতে বিদ্যমান বস্তুগুলো থেকে হালাল উত্তম জিনিসগুলো খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলোনা। বস্তুত সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ ( সুরা বাকারা: ১৬৮)

লিভার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ মদকে ইসলাম সম্পন্ন নিষেধ করেছেন। আল্লাহ বলেন,‘ হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর মূর্তি ও ভাগ্য নির্ধারক তীর, ঘৃণিত শয়তানি কাজ তোমরা বর্জন করো, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হতে পারো।’ ( সূরা মায়েদা: ৯০)

অপবিত্রতা অপরিচ্ছন্নতা এবং অবাধ ও অশালীন জীবনাচরণ ক্যান্সারের উপসর্গ তৈরি করতে পারে। মলত্যাগের পর ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন না করলে কোলন ক্যান্সার হতে পারে। এজন্য ইসলাম টিস্যু ঢিলা ও পানি ব্যবহার করে ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন,‘ পবিত্রতা ঈমানের অর্ধাংশ।’ ( মিশকাত)

লেখকের মন্তব্যঃ

ক্যান্সার হলেই যে মৃত্যু হবে এ ধারণা সঠিক নয়। প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলে সেরে ওঠে এর জন্য সঠিক সময় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করা জরুরি। সাধারণত ৫% ক্যান্সার বংশগত তাই অযথা ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। 

আমাদের মধ্যে অনেকের একটি ধারণা রয়েছে ক্যান্সার অপারেশন করা উচিত নয় এই ধারণা একেবারেই ভুল কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার নির্মূল করা সম্ভব কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ ভয় পেয়ে অনেকটা দেরি করে ফেলেন। ফলে ততদিনে ক্যান্সার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং এর শেষ পরিণতি হয় মৃত্যু।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url