কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়

স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিদের জন্য আজকের এই পোস্টটি হতে চলেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আলোচনায় আমি কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়
এই পোস্টটি পড়ে আপনারা আরো জানতে পারবেন কোলেস্টেরলের লক্ষণ, কোলেস্টরের কমানোর ব্যায়াম, কোলেস্টরেল থেকে মুক্তির উপায়, কোলেস্টরেল কমানোর খাদ্য তালিকা কি কি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে।আশা করি পোস্টটি আপনারা ধৈর্য সহকারে পড়বেন।

কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়।

নির্দিষ্ট একটি বয়সের পর সবারই দুশ্চিন্তার কারণ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় পাশাপাশি এটি স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। 

কোলেস্টরেল মানেই যে খারাপ তা কিন্তু নয় কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তার শরীরের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। কোলেস্টেরলকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায় এল ডি এল ও এইচ ডি এল। এলডিএল মানে হল খারাপ কোলেস্টেরল যা বেড়ে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। এইচডিএল কোলেস্টেরল হার্টের সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। 

রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরী কেননা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট এটাক সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কয়েক গুণ বেড়িয়ে দেয়। ঠিক কি কারণে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় এটি নির্দিষ্ট করে বলা খুবই কঠিন। 


তবে সাধারণভাবে বলা যায় যে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, উন্নত জীবনযাপন, শারীরিক পরিশ্রম না করা, ব্যায়াম না করা, অ্যালকোহল সেবন করা ও ধূমপান করা মূলত এসবের কারণেই রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

রক্তের কোলেস্টরেল কমানোর জন্য আমরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে থাকি এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা ও ওষুধ সেবন করি। এর পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো যথাযথ পালনের মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এবার সেই বিষয়টি আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

গ্রিন টি

এককাপ গ্রিন টি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে এটি এল ডি এল কোলেস্টেরল মাত্রা কমাতে সাহায্য করে পাশাপাশি এইচডিএল কোলেস্টরেল বৃদ্ধি করে।

ব্ল্যাক টি

ব্ল্যাক টি তে ক্যাটিচিন নামক উপাদান রয়েছে যা আপনার আয়ন চ্যানেল প্রোটিন সক্রিয় করার মাধ্যমে রক্তনালীকে শিথিল করতে সাহায্য করে যে কারণে কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। তাই নিয়মিত ব্লাক টি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

হলুদ

হলুদ একটি মসলা জাতীয় উপাদান যা আমাদের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। হলুদ আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি। বিভিন্ন ধরনের তরকারিতে হলুদ ব্যবহার করে খাওয়া যায়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে তরকারি গুলো আমরা খেয়ে থাকি সেগুলোতে যদি হলুদের মাত্রা সামান্য পরিমাণে বাড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে এটি রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করতে পারে।

বিটরুটের জুস

বিটরুটের জুস রয়েছে নাইট্রিক অক্সাইড নামক একটি গ্যাস যা রক্ত নালিকে শিথিল এবং প্রসারিত করতে সাহায্য করে ফলে রক্ত প্রবাহের উন্নতি হয়। বাংলাদেশের সাধারণত এটির ব্যবহার খুবই সীমিত পশ্চিমা বিশ্বে বিটরুটের জুস অনেক জনপ্রিয়। তাই আপনার রক্তের কোলেস্টরেল এর মাত্রা কমানোর জন্য বিটরুটের জুস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

দারচিনি ব্যবহার

রান্নার স্বাদ বাড়ানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের রন্ধন কাজে দারচিনি ব্যবহার করে থাকি। দারচিনি দিয়ে আমরা চাও খেয়ে থাকি। দারচিনি চা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

কমলার জুস

কমলার জুস পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কমলার জুসে রয়েছে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনার উপাদান। তাই নিয়মিত কমলার জুস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

লেবুর শরবত

লেবুর এর সঙ্গে লবণ মিশিয়ে এক ধরনের শরবত তৈরি করা যায় যা সুস্বাদু শরবত হিসেবে সবার কাছে অতি পরিচিত। আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে এই শরবতের চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়। লেবুতে থাকা ভিটামিন- সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের কোষের প্রদাহ কমায় এবং হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। এই জন্যই প্রতিদিন লেবু পানি পান করার অভ্যাস করে তুলতে পারলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হবে।

গোল মরিচ

রক্তেকোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত গোলমরিচ খাওয়ার অভ্যাস করে তুলতে হবে। রান্নার কাজে আমরা গোলমরিচ ব্যবহার করে থাকি এর পাশাপাশি গোলমরিচের চা ও খাওয়া যায় এছাড়া খালি মুখে গোল মরিচ চিবিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

রসুন ও কাঁচা ছোলা

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন ও সামান্য পরিমাণের কাঁচা ছোলা খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

মাছের তেল

মাছের তেলে আছে ওমেগা- ৩ ফার্টি এসিড। এটি রক্ত জমাট বাধার কাজকে বাধাগ্রস্ত করে। এই জন্য মাছের তেল খেলে রক্তের ক্ষতিকর চর্বি এল ডি এল এর মাত্রা কমে যায় এবং ধমনীর দেয়ালে এটা জমাট বাধাতে দেখা সৃষ্টি করে।

ধনিয়া

ধনিয়া একটি মসলা জাতীয় উপাদান। নিয়মিত ধনিয়া খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে কেননা ধনিয়াতে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় এন্টি অক্সিডেন্ট, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন- সি এবং বেটা ক্যারোটিন।

আমলকি

আমলকিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণের অ্যামিনো এসিড যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাজা আমলকি অথবা আমলকির গুঁড়ো কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে পান করা যেতে পারে।

আপেল স্নাইডার ভিনেগার

শরীরের খারাপ কোলেস্টরের কমাতে আপেল স্নাইডার ভিনেগার কাজ করে এক টেবিল চামচ ভিনিগার এক গ্লাস গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন।

আদা চা খাওয়া

আদা অনেক পুষ্টি গুণে ভরপুর একটি মসলা ও ভেষজ উপাদান আদায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণের এন্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে নিয়মিত আদা চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে

অর্জুনের ছাল

অর্জুনের ছাল হার্টের জন্য অত্যন্ত ভালো। অর্জুনের ছালকে কোলেস্টেরল কমানোর সেরা ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্জুনের ছাল এর গুঁড়ো বানিয়ে তার সাথে দুধ মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। এ ছাড়াও আপনি রাতে ঘুমানোর আগে এই বাকল দিয়ে তৈরি চা পান করতে পারেন।

কোলেস্টেরল লক্ষণ।

শরীরে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের অভ্যন্তরে এবং শরীরের বাহ্যিক অংশে বেশ কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। আলোচনার এই অংশে আমি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের অভ্যন্তরে এবং বাহ্যিক অংশে যেসব লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।

শরীরের অভ্যন্তরীণ লক্ষণ

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে ধমনীর দেওয়াল গুলোতে মেদ জমতে শুরু করে। এর ফলে ধমনী গুলো সরু হতে শুরু করে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। ধমনীর সরু হয়ে গেলে পাকস্থলী যকৃতেও ঠিকমতো রক্ত সঞ্চালন হয় না। রক্ত সরবরাহ নালীগুলোর পথে মেদ জমে যাওয়ার কারণে অন্তে পেরিফেরাল ডিজিস হতে পারে। 

ধমনীর মধ্য দিয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে সেই ধমনী গুলোর ভিতর স্নেহ পদার্থের আস্তরণ তৈরি হয় ফলে রক্ত চলাচলের পথ রুদ্ধ হয়ে আসতে পারে।

শরীরের বাহ্যিক লক্ষণ

রক্ত পরীক্ষা করা ছাড়াও শরীরের বেশ কিছু বাহ্যিক লক্ষণ গুলো প্রকাশ হওয়া মাত্রই আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের বাহ্যিক যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন-
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে বাহ্যিক যে লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তার মধ্যে অন্যতম লক্ষণ হল চোখের নিচের অংশে ফুলে যাওয়া।
  • মাঝে মধ্যেই বুকে ব্যথা অনুভব করার অর্থ হতে পারে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
  • হাতের তালুর অপর অংশ ফুলে যাওয়া আর অর্থ হতে পারে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
  • শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা অনুভব করা বিশেষ করে মাংসপেশীতে ও পায়ে ব্যথা অনুভব হওয়া
  • হঠাৎ করে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বৃদ্ধির একটি অন্যতম উপসর্গ বা লক্ষণ।
  • সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় অতিরিক্ত ঘাম ও অস্থিরতা অনুভব করা অর্থ হলো রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া
  • জিভ দেখেও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা তার সহজে নির্ণয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে জীভের উপর ছোট ছোট দানা বের হয়ে হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। ছোট ছোট দানার আস্তরণ যখন সারা জিভে ছড়িয়ে পড়ে তখন বুঝতে হবে আপনার শরীরে রক্তের কোলেস্টরেল মাত্রা বেড়ে গিয়েছে।
  • রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তার লক্ষণ প্রকাশ পায় হাতের নখে। বিশেষ করে হাতের নখের নিচের অংশে কালো বাদামী রঙের রেখা দেখলে বুঝতে হবে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে।
  • ঘাড়ে ও মস্তিষ্কের পেছনের দিকে টান অনুভব করা।
  • কোন কারণ ছাড়াই হৃদ স্পন্দন বেড়ে যাওয়া।
  • চোখের মনি চারপাশে ধূসর রঙের কোন গোল দাগ দেখতে পাওয়া।
  • ত্বকের বিভিন্ন অংশে চাকা চাকা ভাব অনুভব হয়।

কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম।

নিয়মিত ব্যায়াম করা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। হাঁটুর কোন সমস্যা থাকলে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা নামা করা, বেশি হাঁটা এগুলো না করাই উত্তম। শরীরকে যত বেশি নড়াচাড়া করানো যাবে শারীরিক ব্যায়াম এর পরিমাণ যত বৃদ্ধি করা যাবে তত বেশি রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমানো সম্ভব হবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চা করা উচিত। 

এতে করে তার শরীর ফিট থাকবে সহজে কোন রোগ বাসা বাঁধতে পারবেনা। নিয়মিত শরীর চর্চার উন্নতম একটি উপকারী দিক হচ্ছে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কোলেস্টরেল হচ্ছে রক্তের একটি বিশেষ উপাদান। প্রত্যেকটি মানুষের রক্তের কোলেস্টেরল রয়েছে। 


রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যধিক পরিমাণ বেড়ে গেলে তা মানব দেহের জন্য অন্যান্য রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন- হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ব্যথা ইত্যাদি। আলোচনার এই অংশে আমি রক্তে কোলেস্টেরলের কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
ব্যায়ামের বিভিন্ন পদ্ধতি
কিছু কিছু ব্যায়াম রয়েছে যা নিয়মিত করলে রক্তে কোলেস্টরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় যেমন হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো। নিচে এই সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-

অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার শারীরিক ব্যায়াম এর উন্নতম একটি অনুষঙ্গ হল হাঁটাচলা করা। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে। স্বাভাবিক ভাবে হেলে দুলে হাঁটলে হবে না আপনাকে জোর কদমে হাঁটতে হবে যেন শরীর ঘেমে যায়।

দৌড়ানো

আপনার যদি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে প্রতিদিন দৌড়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে মনে রাখতে হবে হাটার চেয়ে দৌড়াতে পারলে রক্তে কোলেস্টরেল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশি সম্ভব হয়। নিয়মিত দৌড়ানোর অভ্যাস থাকলে আপনার শারীরিক ওজন ও দ্রুত কমে আসবে।

সাইকেল চালানো

যান্ত্রিকতার বর্তমান যুগে আমরা সাইকেল চালানো অনেকটা ভুলেই গেছি। সাইকেল চালানো যে শারীরিক এক ধরনের ব্যায়াম এটা আমরা অনেকে মনে করি না। নিয়মিত সাইকেল চালালে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সচল থাকে এতে করে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ও নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০ মিনিট ধরে সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

শারীরিক পরিশ্রম করা

প্রতিদিনের যেসব সাধারণ কাজকর্ম রয়েছে যেগুলো শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে করতে হয় এগুলো নিয়মিত করতে থাকুন তাহলে আপনাকে ব্যায়াম করার আর প্রয়োজন হবে না। শারীরিক পরিশ্রম এর যেসব কাজ রয়েছে এগুলো করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সবচেয়ে বেশি সম্ভব হবে। এইজন্যই শহর অঞ্চলের লোকজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এগুলো বেশি দেখা যায়। কেননা তারা শারীরিক পরিশ্রমের কাজগুলো করার সুযোগ পায় না বা করতে পারে না।

ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করুন

সময় ও সুযোগ থাকলে ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বিভিন্ন ধরনের উপকরণ নিয়ে আপনি ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করার সুযোগ পাবেন এটি শরীর চর্চার একটি অন্যতম উপায়। এই উপায়ে অন্তত ১৫ মিনিট ধরে শরীর চর্চা করা যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত হলো খাবার খাওয়ার পর অন্তত১০ মিনিট হালকা হাঁটতে হবে তাহলে খাবারের হজম তাড়াতাড়ি হবে। যাদের খাবারের হজমের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অবশ্যই খাওয়ার পর হাঁটা খুবই দরকারি। খাবারের পর হাঁটলে শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গ সঞ্চালন হলে খাবার সঠিকভাবে পাকস্থলীতে যায় এবং তার দ্রুত হজম হয়।

এছাড়া সময় ও সুযোগ পেলে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা। যেমন- ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি।

কোলেস্টেরল থেকে মুক্তির উপায়।

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন কোলেস্টরেল থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি? আসলে কোলেস্টেরল হচ্ছে এমন একটি বিষয় বা উপাদান যা প্রত্যেকটা মানুষের রক্তে রয়েছে নিয়ন্ত্রিত মাত্র। যদি এই মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন এটি বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বা কোলেস্টেরল থেকে মুক্তির উপায় কি এই সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস, শারীরিক ব্যায়াম বা কঠোর পরিশ্রম এবং ঔষধ প্রয়োগ এর মাধ্যমে কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

এছাড়া উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে বা রক্তের কোলেস্টরেল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।

কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা।

কোলেস্টেরল আমাদের দেহের একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। এটি আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের নতুন কোষ গঠনের সাহায্য করে থাকে এর পাশাপাশি হরমন উৎপাদন ও স্নায়ুতন্ত্র সতেজ রাখতে ভূমিকা রাখে। তবে এই কোলেস্টেরলের মাত্রা যদি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায় তাহলে তা দেহের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। অনেক সময় এই কারণে মৃত্যু ঘটে।


কিছু খাদ্য তালিকায় রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যেমন-
আলুর ভুষিযুক্ত আটা, সবুজ শাকসবজি, মাছ এগুলোতে রয়েছে রক্তের কোলেস্টেরলের কমানোর উপাদান।
বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল ও মাছের তেল খাওয়া যেতে পারে।
খনিজ লবণ রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভালো কাজ করে। খনিজ লবণের মধ্যে রয়েছে ক্লোরিন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।

শেষ কথা

রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় বা মাধ্যম হলো শারীরিক ব্যায়াম ও কঠোর পরিশ্রম করা এর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে হয় ভূমিকা পালন করবে। আসুন নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হই এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যেসব প্রয়োজনীয় কার্যাবলী রয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করি। আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের মাঝে ন্যূনতম সচেতনতা সৃষ্টি হয় তাহলে পোস্ট লেখার সার্থকতা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url