বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার খরচ কত [ আপডেট তথ্য ]
বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার করতে কত টাকা খরচ হয় এবং ভিসার আবেদন পত্র কিভাবে কোথায় জমা দিতে হবে এই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। আপনারা যারা ইন্ডিয়ায় ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
![বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার খরচ কত [ আপডেট তথ্য ] বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার খরচ কত [ আপডেট তথ্য ]](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg99wIEFN_hS9fRtAhxVQ0d6S9l7t3FiZSBzETODpqXtKaBvuurxBgop7aCOHR0QrQoD2sdc1zODsVKtWrr3IjOTdN_rC4tc5FDfklYDsNWic23pQI0hkVjCMt8jXcXIoa5QtJqH92Dh4_Pb1u-VwWNXoHpvky_bbqPLVQ8lFz5VQxdKtXJypH-aSDQoxC-/s16000/Feature%20Image%20Unicode%20(1).webp)
এক দেশ থেকে অন্য দেশে গমন করতে গেলে ভিসার প্রয়োজন হয়। আজকে আমি আপনাদের ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার পর আপনারা ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ভারত পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম একটি রাষ্ট্র বলা হয়ে থাকে ভারতবর্ষ কেউ ভ্রমণ করে সমগ্র পৃথিবী ভ্রমণের দরকার নেই। ভারত ভ্রমণ করে আপনি সারা বিশ্বের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আমরা বাংলাদেশিরা যখন বহির বিশ্বে ভ্রমণের কথা চিন্তা করি তখন প্রথমে আমাদের মাথায় আসে ভারত ভ্রমণের কথা।
ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
- মূল পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ছয় মাস হতে হবে।পাসপোর্টে অন্তত দুইটি সাদা পাতা থাকতে হবে। অনেক সময় পুরনো পাসপোর্ট নাম্বার নতুন পাসপোর্টে থাকে না সে ক্ষেত্রে থানায় জিডি করে তার কপি দিতে হবে নতুবা ভিসার আবেদন জমা নেয়া হয় না। আবেদনপত্রের সাথে পুরনো সব পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
- একটি রঙিন ছবি যার মুখমণ্ডল পরিষ্কার ভাবে দেখা যাবে এবং পিছনের অংশ সাদা হতে হবে। ছবির সাইজ হবে ( ৩৫০ * ৩৫০) পিক্সেল অথবা (২*২) সাইজের।
- জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি, ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- বর্তমান ঠিকানা প্রমাণ করার জন্য ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি সর্বনিম্ন ছয় মাস মেয়াদের।( বিদ্যুৎ বিল, পানির বি,ল গ্যাস বিল ও টেলিফোন বিল)
- ভিসার ফি দেওয়ার রশিদের ফটোকপি।
- পেশা প্রমাণের প্রমাণপত্র। ( চাকুরীজীবী হলে চাকুরীর NOC সনদ, শিক্ষার্থী হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত কাগজ, ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স, কৃষিজীবী হলে জমির পর্চা )
- আবেদনকারীর জনপ্রতির ১৫০ মার্কিন ডলার সমান এর বৈদেশিক মুদ্রার এসডোর্সমেন্ট অথবা আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড অথবা সর্বশেষ তিন মাস ব্যাংকের স্টেটমেন্ট এবং ভ্রমণের উপযোগী যথেষ্ট পরিমাণের আর্থিক ব্যালেন্স দেখাতে হবে।
- সাক্ষাতের দিন আবেদনপত্রের সাথে অবশ্যই পুরনো সব পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। পুরনো পাসপোর্ট ছাড়া আবেদন পত্র অসম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হবে।
- বাংলাদেশী পাসপোর্ট ধারীদের ক্ষেত্রে সব ধরনের ভারতীয় ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর তারিখ ও সময়ের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়।
- আবেদনপত্র অবশ্যই ১০ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে।
- হোটেল বুকিং দেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজ এবং ভ্রমণের সম্ভাব্য তারিখ।
ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা পেতে কতদিন লাগে।
রাজধানী ঢাকায় ভিসা ডেলিভারি পেতে তিন থেকে সাত দিন সময় লাগে। ঢাকার বাইরে তিন দিনের মধ্যেই ভিসা হাতে পাওয়া যায়। আবেদনের পর ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার থেকে একটি রিসিট দিয়ে দেবে আপনি চাইলে সেই রিসিট দিয়ে অনলাইনে ভিসা যাচাই করতে পারবেন। তবে বর্তমানে ভারতের সকল ধরনের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় কিছুটা বেশি লাগছে।
ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ।
প্রিয় পাঠক, এবার আপনাদের যে বিষয়টি জানাবো তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ভারত সরকার আমাদের দেশের নাগরিকদের কত বছর মেয়াদ পর্যন্ত ভিসা দিয়ে থাকে সেই সম্পর্কে। যেহেতু আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে তাই এই সম্পর্কে আপনাদের কিছু বলবো।
বাংলাদেশী নাগরিকগণ ভারতের বিভিন্ন ধরনের ভিসা পেয়ে থাকে মূলত ভিসার ক্যাটাগরি উপর নির্ভর করে ভিসার মেয়াদ কত হবে। যেমন মেডিকেল ভিসার মেয়াদ তিন (৩) মাস, ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ ৬ মাস, এবং অন্যান্য ভিসার মেয়াদ পাঁচ(৫) বছর পর্যন্ত রয়েছে। আবার ইন্ডিয়ান সরকার দেশ ভেদে এই ভিসার মেয়াদ কম বেশি করে থাকে।
যেমন মার্কিন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডা এই দেশগুলোর নাগরিকগণ ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ১৮০ দিন একটানা ভারতে অবস্থান করতে পারবে কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকগণ এই সুবিধা পায় না বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত একটানা ভারতে অবস্থান করতে পারবে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে।
বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা খরচ।
বাংলাদেশী নাগরিকদের ভারতে ভিসা পাবার ক্ষেত্রে কোন ধরনের অর্থ দিতে হয় না। ভারতীয় স্টেট ব্যাংকের অধীনে ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারে শুধুমাত্র ভিসা প্রসেসিং ফি বাবদ ৯০০ টাকা জমা দিতে হয়। আপনি চাইলেই অনলাইনে খুব সহজেই এই প্রসেসিং ফি জমা দিতে পারবেন। বাংলাদেশের যে সকল জায়গায় ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার রয়েছে তার আশেপাশের দোকানগুলো থেকে এই ফি জমা দিতে পারবেন।
অনলাইনে ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য ফর্ম পূরণ।
ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে গুগলে। সেখানে সার্চ করতে হবে ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার (IVAC) এই সাইটে। এখানে অনলাইন ভিসা এপ্লিকেশন ক্লিক করে প্রতিটি ঘর আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে। ভারতের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের পিছনে আবেদন পত্রের ভুল ইনফরমেশন অনেক আংশে দায়ী।
অনলাইনে ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূরণ করার সময় কিছু কাগজপত্র আগের থেকেই প্রস্তুত রাখতে হবে। যেমন কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদি পাসপোর্ট, ছবি, ভারতে যাওয়ার পর যে হোটেলে উঠবেন তার ঠিকানা ও ফোন নাম্বার।
যথেষ্ট সময় নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে আবেদনপত্র পূরণ করতে বসবেন সঠিকভাবে পূরণ করতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লেগে যেতে পারে। আবেদন ফরমের আবেদনকারীর পুরো নাম, পিতা মাতার নাম, বর্তমান ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা, অফিস বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। এরপর আপনি ভারতের কোন পোস্ট দিয়ে প্রবেশ করবেন তার নির্বাচন করবেন।
বেনাপোল দিয়ে গেলে হরিদাসপুর, তামাবিল দিয়ে গেলে ডাউকি, চ্যাংড়াবান্দা দিয়ে গেলে বুড়িমারী, বাংলাবান্দা দিয়ে গেলে ফুলবাড়ি রুট ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি ট্রেন দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তাহলে দর্শন সিলেক্ট করতে হবে। অনলাইনে আবেদন পত্র পূরণ করার সময় রেফারেন্স কারী হিসেবে এমন একজনের নাম দিতে হবে যার ভারতে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
এতে ভারতে যাওয়ার পর কোন সমস্যা হলে বাংলাদেশে আপনার রেফারেন্স কারীর সঙ্গে যাতে যোগাযোগ করা যায়। আর ভারতের রেফারেন্স কারী হিসেবে হোটেলের নাম ঠিকানা ফোন নাম্বার দিতে হবে। একদম শেষের দিকে হোটেলটি ভারতের কোন এলাকায় সেটি উল্লেখ করতে হবে। এরপর আবেদন পত্র প্রিন্ট করে নিতে হবে।
আবেদনপত্রের মোট দুই স্থানে আপনাকে স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে একটি ছবির নিচে আরেকটি একেবারে আবেদনপত্রের শেষ পৃষ্ঠায়। এই সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন স্বাক্ষরটি আপনার পাসপোর্ট এর সাথে মিল থাকে। এখানে একটি বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে ছবিতে কোনভাবেই পিন দেওয়া যাবে না আপনাকে অবশ্যই আটা দিয়ে ছবি লাগাতে হবে।
ভিসার আবেদন পত্রটি জমা দেওয়ার নিয়ম।
এবার আপনার ভিসার আবেদনটি জমা দেবার পালা তো প্রশ্ন আসে কোথায় আপনার আবেদন পত্রটি জমা দিবেন বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো ছাড়াও বড় বড় শহরগুলোতে ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার রয়েছে। এই সেন্টারগুলোতে আপনি ভিসার আবেদন পত্রটি জমা দিতে পারবেন। আপনি যে বিভাগের বসবাস করেন সে বিভাগের এপ্লিকেশন সেন্টারে আপনার ভিসার আবেদন পত্রটি জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়
উদাহরণ হিসেবে আপনি রাজশাহী বিভাগে বসবাস করেন তাই আপনাকে রাজশাহীর ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টারে আপনার ভিসার আবেদন পত্রটি জমা দিতে হবে। ভারতীয় ভিসার এপ্লিকেশন সেন্টার এর ভিড় বরাবর লেগেই থাকে তাই তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার জন্য আপনাকে সকাল সকাল যাওয়াটাই উত্তম। ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার জন্য আর কোন টোকেন লাগেনা।
সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত যেকোনো দিন আপনি সকাল আটটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত যেকোনো সময় ভিসার আবেদন জমা দিতে পারবেন ।
লেখকের মন্তব্যঃ
আজকে আমরা জানলাম বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার খরচ কত এই সম্পর্কে। এছাড়া ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা করতে কি কি কাগজের প্রয়োজন পড়ে সেই সম্পর্কেও জানলাম। ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা সম্পর্কে আপনাদের যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে এসে কমেন্ট করুন।
আমি অল্প সময়ের মধ্যে আপনাদের কমেন্টের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। পরিশেষে আরেকটি কথা না বললেই নয়, আমরা যেই দেশি ভ্রমণ করি না কেন, আমাদের দেশের সুনাম নষ্ট হয় এ রকম কাজ থেকে আমরা সর্বদা বিরত থাকবো।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url