পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের ইতিহাস ও সেতুর টোল হার

বর্তমানে বাংলাদেশের দীর্ঘতম বহুমুখী সেতু হচ্ছে পদ্মা সেতুর। ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮.১০ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট এই সেতু পদ্মা নদীর উপর নির্মিত। এই সেতুটি বাংলাদেশের দুটি প্রশাসনিক জেলা মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর কে সংযুক্ত করেছে সেই সাথে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের অন্যান্য জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে ব্যাপক উন্নত। দেশের অন্যান্য অংশ বিশেষ করে দেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে জেলাগুলো যোগাযোগ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের ইতিহাস ও সেতুর টোল হার
আজকের এই আর্টিকেলে আমি পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর এর ইতিহাস থেকে শুরু করে এর উদ্বোধন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানাবো। এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের ইতিহাস।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে সড়ক ও রেলপথ যোগাযোগের ক্ষেত্রেও অন্যতম অন্তরায় হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ছোট বড় নদ নদী। যেমন- পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রমপুত্র সহ বেশ কয়েকটি বড় বড় নদী রয়েছে এসব নদনদীর উপর পর্যাপ্ত ব্রীজ না থাকার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত পর্যায়ে রয়ে গিয়েছিল কিন্তু সরকারের সঠিক দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের সড়ক ও রেলপথ যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। 
এর এই অংশ হিসাবে মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা নদীর উপরে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর পূর্বে যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এর ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের সাথে রাজধানী সহ অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের ইতিহাস বেশ পুরনো। স্বাধীনতা উত্তর পরবর্তী সময়ে জাপানি এক জরিপ বিশেষজ্ঞ দল ঢাকা ফরিদপুর সড়ক নির্মাণের জন্য একটি সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন জমা দেয়। সড়কটি নির্মাণের অংশ হিসেবে তারা পদ্মা নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেন। 

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিলেও তার অকাল মৃত্যুর কারণে প্রকল্পটি আর বাস্তবায়িত হয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। 

পরবর্তীতে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে আপনাদের সবারই কমবেশি জানা রয়েছে তাই এই বিষয়ে আর আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করি না। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৮ সালে রাজধানী ঢাকা ও দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ঢাকা -মাওয়া -ভাঙ্গা -খুলনা মহাসড়কে পদ্মা নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করেন। 

৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৮.১০ মিটার চওড়া এই সেতুটিকে দেশের সম্ভাব্য দীর্ঘতম সেতু হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এ প্রস্তাবে বলা হয়েছিল ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে এবং ২০০৪ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হবে। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এই প্রকল্পটির আর বাস্তবায়িত হয়নি।

২০০৭-০৮ অর্থবছরের তৎকালীন সরকার পদ্মা নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তৎকালীন সরকার সেতু নির্মাণের জন্য এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ২০০৭ সালের তৎকালীন সরকার একনেকের বৈঠকে ১০১৬১ কোটি টাকা পদ্মা সেতুর প্রকল্পের অনুমোদন করেন। 
তখন এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর যে সরকার গঠন করেন সেই সরকারের ইজতেহারে ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। ২০০৮ সালের তৎকালীন সরকার এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শুরুর দিকে এই সেতুর নির্মাণ কাজের অর্থ পাওয়া নিয়ে এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। 

পরবর্তীতে সরকার ঘোষণা দেয় যে সম্পূর্ণ নিজস্ব আয় নয় পদ্মা নদীর উপর এই সেতুর নির্মাণ করা হবে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই সেতু নির্মাণের যে নকশা প্রণয়ন করেছিলেন তাতে রেলপথ যুক্ত করা ছিল না। 

পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে এই সেতুর নির্মাণের নকশা তৈরি করেন এবং তাতে রেলপথ যুক্ত করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে এই সেতু নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। নানান জল্পনা-কল্পনা ও বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আজ পদ্মা সেতু বিশ্বের বুকে দৃশ্যমান।

পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয়।

পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বাংলাদেশ সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল তবে সরকারের দৃঢ় মনোবল ও জনগণের সমর্থনের কারণে এই চ্যালেঞ্জ টি মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে এই সেতু করতে বিদেশী কোন সাহায্য সংস্থা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোন ঋণ গ্রহণ করা হয়নি। 
সর্বমোট ৩২,৬০৫ কোটি টাকা এই প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে। প্রকল্পের খরচের খাত গুলো হল সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ভূমি অধিগ্রহণ, পূর্ণবাসন ও পরিবেশ, বেতন ভাতা ইত্যাদি। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে সেতু কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ সরকার ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় যা বাংলাদেশ অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে। 

২০০৭ সালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতুর সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় ধরেছিল ১০১৬১ কোটি টাকা যা পরবর্তী সময়ে বেড়ে ৩২,৬০৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন ডলারে হিসাব করলে তা দাঁড়ায় ১.৯৫ বিলিয়ন ডলার। সেতু নির্মাণের নকশার পরিবর্তন সহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি কারণে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যায়।

পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের স্থান।

বাংলাদেশ তথা দক্ষিণবঙ্গের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং এ অবস্থিত। এই সেতুটি মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং ও শরীয়তপুর মাদারীপুর জেলার জাজিরা পয়েন্ট কে যুক্ত করেছে। 
এই সেতুকে কেন্দ্র করে সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে হাজারো মানুষের জীবিকা ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানী ঢাকা শহরের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপন।

পদ্মা সেতুর প্রাথমিক অবস্থায় যে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছিল সেখানে শুধুমাত্র পদ্মা বহুমুখী সড়ক সেতু নির্মাণ করার কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে নকশা পরিবর্তন করে পদ্মা বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ দ্বিতল বিশিষ্ট এই সেতুর উপরে রাখা হয়েছে সড়ক পথ এবং নিচে রাখা হয়েছে রেলপথ। 

২০১১ সালে জানুয়ারি মাসে একনেক এর সভায় ২০০৭ সালে পদ্মা সেতুর প্রকল্পের যে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তা বৃদ্ধি করে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। পদ্মা বহুমুখী সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপন নির্মাণকারী সংস্থার জন্য ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। এই কাজটি খুব সহজে করা সম্ভব হয়নি এর জন্য শত শত শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। 
পদ্মা বহুমুখী সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপনের ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ ট্রেনে করে ঢাকা শহরসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সহজে যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের ট্রেনে চড়ার স্বপ্ন শতভাগ পূরণ হয়েছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর এবং এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ২৩ জুন। নির্মাণ কাজ শেষ হবার দুই দিন পর অর্থাৎ ২৫ জুন ২০২২ ইংরেজি তারিখে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর উদ্বোধন করেন। তিনিই প্রথম টোল পরিশোধ করে এই সেতু পার হওয়ার ঐতিহাসিক সাক্ষী হন।।

পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগ।

বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার মানুষের স্বপ্ন ছিল ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপন করা। আর এই কাজটি সম্ভব হয়েছে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে রেল সংযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে। দ্বিতল বিশিষ্ট পদ্মা সেতুর নিচ তলা দিয়ে ট্রেন চলাচলের জন্য ডুয়েল গেজ রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। যশোর ও খুলনা অঞ্চলের ট্রেনগুলো একটা সময় বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকা চলাচল করতো। 

কিন্তু পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের পর এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করছে যা এই অঞ্চলের মানুষের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। এতে করে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে বলে মনে করা হয়।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর নিরাপত্তা।

পদ্মা বহুমুখী সেতু ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকে এই প্রকল্পের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে আসে। পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীর উপরে। এরই ধারাবাহিকতায় পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্তে গড়ে তোলা হয় শেখ রাসেল সেনানিবাস। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সম্পাদিত প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তার দায়িত্ব হলো-মাওয়া প্রান্তে ৭৭ বর্গ কিলোমিটার ও জাজিরা প্রান্তে ১৩২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার নিরাপত্তা বিধান এবং সেতু পূর্ব পশ্চিম প্রান্তে ৬ কিলোমিটার নদীপথ প্রত্যক্ষভাবে নজরদারিতে রাখা। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সরকারের অন্যান্য বাহিনীর সাথে সমন্বয়পূর্বক সেতুর সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর টোল হার।

পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের টোল হার নির্ধারণ করে সরকার ১৭ই মে ২০২২ সালে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে পদ্মা সেতু পারাপারের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন টোল হার হবে ১০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০০ টাকা। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে বিভিন্ন যানবাহনের টোল হার এর একটি চার্ট নিচে দেয়া হলো-

পদ্মা বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতুর সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

  • পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সড়ক ও রেলপথ প্রকল্প।
  • পদ্মা বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতুর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
  • পদ্মা বহুমুখী সেতু দ্বিতল বিশিষ্ট সেতু, সড়ক পথ কংক্রিট এবং রেলপথ স্টিলের নির্মিত।
  • পদ্মা সেতু বিশ্বের ১২২ তম সেতু।
  • পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার প্রস্থ ১৮. ১০ মিটার।
  • পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয় ২৫ জুন ২০২২ সালে।
  • পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা বা ১.৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
  • পদ্মা সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২ টি।
  • পদ্মা সেতু মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর এই দুই জেলাকে যুক্ত করেছে। পদ্মা সেতুর উত্তর পাশে রয়েছে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এবং দক্ষিণ পাশে রয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা।
  • পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়ন করেছে আমেরিকার মাল্টিন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম।
  • পদ্মা সেতুর উচ্চতা পানির স্তর থেকে ৬০ ফুট।
  • পদ্মা সেতুতে ৪১ টি স্প্যান রয়েছে।
  • পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনশীল মাত্রা ৯।
  • পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখে এবং এর কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের জুন মাসের ২৩ তারিখে।
  • পদ্মা সেতুর দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ টি জেলাকে সংযোগ করেছে।
  • পদ্মা সেতু এশিয়ার ষষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু।
  • পদ্মা সেতু সম্পন্ন দেশীয় অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে।
  • পদ্মা সেতুতে যে রেললাইন বসানো হয়েছে তা ডুয়েল গেজ রেললাইন।
  • পদ্মা সেতুর আয়ু কাল ১০০ বছর।
  • পদ্মা সেতুর সড়ক পথ চার লেন বিশিষ্ট।
  • পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হয়। এই প্যানেলের সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।
  • পদ্মা সেতু নির্মাণের বিশ্বের প্রায় ৬০ টি দেশের কোন না কোন উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে।
  • পদ্মা সেতু নির্মাণের বিশ্বের প্রায় ২০ টি দেশের মানুষের শ্রম দিতে হয়েছে।
  • পদ্মা সেতু নির্মাণের দুই পাড়ের প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা নদী শাসন করা হয়েছে।

শেষ কথাঃ

পদ্মা বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু উদ্বোধন বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে আজীবন। এর সেতু চালুর পর দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। রাজধানী ঢাকা সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। 

এ সেতু উদ্বোধনের আগে এ অঞ্চলের মানুষ লঞ্চে করে ঢাকায় যাতায়াত করত যা ছিল অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ। বর্তমানে একদিনে ঢাকায় এসে আবার ফিরে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষের। পদ্মা বহুমুখী সেতু তৈরি, উদ্বোধন ও যানচলাচল করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url