চোখের ছানি রোধ করার উপায় সমূহ
মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গের মধ্যে চোখ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । সাধারণত ৪০ বছরের পর থেকে চোখে ছানি পড়ার লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে থাকে । আজকের এই আলোচনা পরে আপনারা জানতে পারবেন চোখের ছানি রোধ করার উপায় সমূহ এবং চোখের সানি পড়ার কারণ গুলো কি কি?
এই চোখ দিয়ে আমরা পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকি। মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গের যেমন যত্ন নিতে হয় চোখের যত্ন নিতে হয় তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। যারা অন্ধ তারা এই পৃথিবীর কিছুই দেখতে পায় না তাদের কষ্ট আমরা সহজেই গুণধাবন করতে পারি । তাই চোখের গুরুত্ব যে কত অপরিসীম তা আমরা মুখে বলে বোঝাতে পারবো না।
ভূমিকা:
চোখের ছানি পড়া একটি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে । বিশেষ করে যে সকল মানুষের বয়স ৪০ বছরের উপরে অর্থাৎ ৪০ বছরের পর থেকেই এই চোখের সমস্যা সামনে আসতে থাকে। বয়স বাড়লে যেমন চুলে পাক ধরে ত্বক শিথিল হয়ে যায় , তেমনি চোখের স্বচ্ছ লেন্স ঝাপসা হয়ে আসে। ফলে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে।
অনেকেই অল্পদৃষ্টির সঙ্গে সমঝোতা করেই দিন কাটান কিন্তু এর সুদূরপ্রসারী ফল হতে পারে মারাত্মক। দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে । তাই ছানি হলে চিকিৎসা করানো জরুরী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৬০ উত্তীর্ণদের মধ্যে সানির সমস্যা দেখা যায় কিন্তু ইদানিং ৩৫ থেকে ৪০ বছরের তরুণদের চোখে পর্দায় ছানি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।
চোখের ছানি বলতে কি বুঝায়?
সাধারণভাবে আমরা বলতে পারি, চোখে ছানি পড়া হলো এমন একটি রোগ যার কারণে মানুষ চোখে ঝাপসা বা অস্পষ্ট দেখে ।
চোখে ছানি পড়ার কারণ।
- প্রধান কারণ বার্ধক্য জনিত সাধারণত ৪০ বছরের পর থেকেই চোখের ছানি পড়া শুরু করে;
- সূর্যের অতি বেগুনি রশনি প্রভাবে এই রোগ হতে পারে ;
- চোখে দীর্ঘদিন কোন সংক্রমণ থাকলে এই সংক্রমণ ছানিতে রূপ নিতে পারে ;
- গর্ভাবস্থায় মা যদি হাম রোবেলা রোগে আক্রান্ত হয় , অপুষ্টি কিংবা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে নবজাতক শিশুর ও চোখে ছানি পড়া রোগ হতে পারে;
- শিশুর গঠন প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি থাকলে এই রোগ হতে পারে ;
- চোখে কোন আঘাত পেলে এই রোগ হয় ;
- চোখ ব্যতীত শরীরে অন্য কোন রোগ থাকলে ;
- উচ্চ রক্তচাপের কারণেও ছানি পড়তে পারে;
- নির্দিষ্ট কোনো ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার;
- ধূমপান ও মদ্যপানে আসক্ত থাকলে;
- বংশগত কারণে ;
চোখে ছানি পড়ার লক্ষণ।
চোখে ছানি পড়ার বিশেষ কোনো লক্ষণ ওভাবে বলা মুশকিল তবে চোখের ছানি করার প্রধান লক্ষণ হল চোখে ঝাপসা দেখা।
- ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে আসা ;
- আলোতে গেলে চোখ থেকে পানি পড়া ;
- একই জিনিসকে একের অধিক দেখা ;
- বারবার চশমার পাওয়ার পরিবর্তন করা ;
- চোখের লেন্সের রঙ গোলা হয়ে আসা ;
- রং চিনতে অসুবিধা হওয়া ;
চোখের ছানি রোধ করার উপায়।
খাদ্যাভাসের পরিবর্তন ও কিছু নিয়ম নীতির মেনে চললে আমরা সহজে এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারি | চোখে ছানি পড়া রোধক কল্পে নিচের খাবার তালিকা আমরা প্রতিদিনের খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারি।
সবুজ শাকসবজি লাল ও হলুদ ফলে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে, এছাড়াও গরুর কলিজা, মুরগির কলিজা, মাছ, দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার, দই, ডিম, বড় বড় মাছের তেল, ছোট মাছ, গাজর, পাকা পেঁপে, টমেটো, মিষ্টি, কুমড়া, পালং শাক, লাল শাক, সবুজ সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।কমলালেবু, পেয়ারা ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে।
সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করার আমরা সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারি। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আমরা চোখের ছানি পড়া রোধ করতে পারি।
চোখের ছানি চিকিৎসা পদ্ধতি।
বর্তমানে আমাদের দেশে চোখে ছানি পড়া রোগের চিকিৎসা অতি অল্প সময়ে এবং অল্প খরচে করা সম্ভব । সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিয়ে এই রোগ থেকে সহজেই নিস্তার পাওয়া যায় । সঠিক সময়ে যদি আমরা এই রোগের চিকিৎসা না করে থাকি তাহলে চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে । ছানি পড়ার কারণ যাই হোক না কেন চশমা দিয়ে যদি প্রতিদিনের কাজ না করা যায় তাহলে অপারেশন করে চোখের ছানি অপসারণ করাই উত্তম।
প্রধানত তিন ধরনের ছানি অপারেশন করা হয়ে থাকে।
ফেকো :
এটা বর্তমানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ।ফ্যাকো মেশিনের দিয়ে খুবই ছোট ছিদ্র করে ছানি অপসারণ করা হয় এরপর কৃত্রিম লেন্স সংযোজন করা হয় । এই পদ্ধতি সুবিধা হল চোখে সেলাই দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না রোগী দ্রুত সুস্থতা লাভ করে এবং অপারেশনের পরবর্তী জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে । অত্যন্ত দামি মেশিন দ্বারা এই অপারের্শন করা হয় বলে এ অপারেশনের ব্যয় কিছুটা বেশি ।
এটা বর্তমানে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ।ফ্যাকো মেশিনের দিয়ে খুবই ছোট ছিদ্র করে ছানি অপসারণ করা হয় এরপর কৃত্রিম লেন্স সংযোজন করা হয় । এই পদ্ধতি সুবিধা হল চোখে সেলাই দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না রোগী দ্রুত সুস্থতা লাভ করে এবং অপারেশনের পরবর্তী জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে । অত্যন্ত দামি মেশিন দ্বারা এই অপারের্শন করা হয় বলে এ অপারেশনের ব্যয় কিছুটা বেশি ।
আরো পড়ুনঃ শরীরের আঁচিল কিভাবে দূর করা যায়।
এসআই সিএস:
এই পদ্ধতিতে চোখের সাদা অংশ কেটে সেই পথ দিয়ে ছানি বের করে আনা হয় । তারপর কৃত্রিম লেন্স সংযোজন করা হয় । কাটা স্থানটি ছোট হওয়ায় এবং কাটার সময় বিশেষভাবে ভাল্বের মতো ব্যবস্থা থাকায় বলে কাঁটা স্থানের সেলাই করার প্রয়োজন পড়ে না ।
এই পদ্ধতিতে চোখের সাদা অংশ কেটে সেই পথ দিয়ে ছানি বের করে আনা হয় । তারপর কৃত্রিম লেন্স সংযোজন করা হয় । কাটা স্থানটি ছোট হওয়ায় এবং কাটার সময় বিশেষভাবে ভাল্বের মতো ব্যবস্থা থাকায় বলে কাঁটা স্থানের সেলাই করার প্রয়োজন পড়ে না ।
ইসিসিই:
এ পদ্ধতিতে চোখের স্বচ্ছ কর্নিয়া ও সাদা অংশ এর মাঝ বরাবর কেটে ছানি বের করে আনা হয় এরপর লেন্স সংযোজন করা হয় স্থানটি সেলাই করে দেয়া হয় ।
এ পদ্ধতিতে চোখের স্বচ্ছ কর্নিয়া ও সাদা অংশ এর মাঝ বরাবর কেটে ছানি বের করে আনা হয় এরপর লেন্স সংযোজন করা হয় স্থানটি সেলাই করে দেয়া হয় ।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url