নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম
আপনি অনেক পরিশ্রম করে এক খন্ড জমি কিনেছেন? এবার ভাবছেন কিভাবে নামজারি করতে হবে? তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি প্রতি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আজকের এই পোস্টে আমি আলোচনা করেছি নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম সম্পর্কে।
আজকের এই পোস্টটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আরো যেসব বিষয় জানতে পারবেন সেগুলো হলো জমি খারিজ করার পদ্ধতি, ভূমি নামজারি করতে কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে, জমির নামজারি করতে কত টাকা খরচ হয়, অনলাইনে শুনানিতে অংশগ্রহণ করার পদ্ধতি, জমির নামজারি কত দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়।
জমি খারিজ করার পদ্ধতি।
কোন জমির মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পর সেই জমির নামজারি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জমির মালিকানা দাবী করা, মালিকানা করা জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জমির নামজারি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকে জমির নামজারি বা মিউটেশন করতে গিয়ে নানান ভাবে হয়রানির শিকার হন। অনেকে হয়ে থাকেন প্রতারিত, আবার অনেকে বহু সময় ব্যয় করেও নামজারি করানোর সুযোগ পান না।
এ থেকে পরিত্রান পেতে সময় মতো নামজারি করা অত্যন্ত জরুরী। বর্তমানে জমি খারিজ বা নামজারি করতে গেলে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আপনি যদি নিজে ঘরে বসে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন তাহলে সেটি একটি ভালো প্রক্রিয়া।
আরো পড়ুনঃঅনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সহজ নিয়ম
এই কাজটি যদি আপনার কাছে ঝামেলা পূর্ণ মনে হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে আশেপাশে কম্পিউটার অথবা ফটোকপির দোকানে গিয়ে তাদের মাধ্যমে জমি নামজারি বা খারিজ করার জন্য আবেদন করতে পারেন। কম্পিউটারের অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান কপি, অনলাইনে ফি প্রদান এবং অনলাইনে ফরম পূরণ করে সহকারী ভূমি কমিশনার বরাবর আবেদন জমা দিতে হয়।
জমি খারিজ কি?
রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ১৪৩ ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তি কোন জমির মালিকানা লাভ করার পর, পূর্বের মালিকের নামের পরিবর্তে নতুন মালিকের নাম সংশ্লিষ্ট খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত করা বা তার নিজ নামে নতুন খতিয়ান খোলা বা রেকর্ড হালনাগাদকরনের যে কার্যক্রম তাকে খারিজ নামজারি বা ইংরেজিতে মিউটেশন বলে।
অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয় নামজারি বা মিউটেশন হচ্ছে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় পরিবর্তন করা। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বৈধ পন্থায় ভূমি বা জমির মালিকানা অর্জন করলে সরকারি রেকর্ড সংশোধন করে তার নিজ নামে রেকর্ড করতে হয়। জমি ও ভূমির মালিকানা রেকর্ড হালনাগাদ করনের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় নামজারি।
আরো পড়ুনঃঅনলাইনে ট্রেনের লোকেশন জানার সেরা উপায়
কোন ব্যক্তির নামজারি সম্পন্ন হল তাকে একটি খতিয়ান দেয়া হয় যেখানে প্রাপ্ত সম্পত্তির একটি সংক্ষিপ্ত হিসাব বিবরণী উল্লেখ থাকে। উক্ত হিসাব বিবরণীর মধ্যে উল্লেখ থাকে জমির মালিকানা বা মালিকগনের নাম, মৌজার নাম ও নাম্বার, জমির দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, মালিকের জমির অংশ ইত্যাদি।
জমির ই- নামজারি কি?
বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ের কাজের আধুনিকতার বা ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভূমি মন্ত্রণালয় তাদের সকল কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করছে। এখন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে জমি খারিজ বা নামজারি করা, ভূমিকর পরিশোধ, জমির খতিয়ান দেখা সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ঘরে বসেই করা যাবে। এটি একটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগান্তকারী পদক্ষেপ গুলোর মধ্যে অন্যতম।
কোন জমির নামজারি করার জন্য অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নামজারি বের করে আনার সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে ই- নামজারি বলে। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনলাইনে জমি খারিজ করার ব্যবস্থা করেছে যাতে করে নাগরিকগণ ঘরে বসেই তাদের জমি খারিজ বা নামজারির আবেদন করতে পারেন। ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জমির নামজারি করার এই প্রক্রিয়াকে ই- নামজারি বলা হয়।
অনলাইনে জমি খারিজ বা নামজারি জন্য আবেদন করতে গেলে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। যেমন-
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ।
জমির খারিজ অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে https// mutation.land.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এখানে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে নিচের পেজটি ওপেন হবে।
উপরে উল্লেখিত অপশন গুলোর মধ্যে লালমার্ক করা নামজারি আবেদন অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার সামনে একটি আবেদন ফরম আসবেন। আবেদন ফরমটি যথাযথ তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।
নামজারি আবেদনের ফরম পূরণ।
অনলাইনে জমির খারিজ বা নামজারি করার জন্য যে আবেদন ফরম রয়েছে তার চারটি পাতা রয়েছে। এই চারটি পাতা সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। মনে রাখবেন কোন তথ্য যাতে ভুল না হয়।
- প্রথম পাতা আবেদনকারীর ঘোষণা।
- দ্বিতীয় পাতা জমির তফসিল ও গ্রহীতার তথ্য।
- তৃতীয় পাতা দাতার তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড।
- চতুর্থ পাতা ফি পরিশোধ ও পেমেন্ট অপশন।
- প্রথম পাতা আবেদনকারীর ঘোষণা।
নামজারি আবেদন বাটনে ক্লিক করার পর আবেদন ফরমের পেইজ নিচের ছবির মত ফরম দেখা যাবে।
প্রদর্শিত ফরম সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
দ্বিতীয় পাতা জমির তফসিল ও গ্রহীতার তথ্য।
প্রথম পাতার প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে ফরমে দ্বিতীয় পাতা ওপেন হবে। এই পাতায় জমির তফসিল ও গ্রহীতার তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করে নিচের পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী পেজে যেতে হবে।
তৃতীয় পাতা দাতার তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড।
আবেদন ফরমের তৃতীয় পাতায় আপনি যার কাছ থেকে জমি ক্রয় করছেন অর্থাৎ দাতার তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস কান কপি আপলোড করতে হবে।
চতুর্থ পাতা ফি পরিশোধ ও পেমেন্ট অপশন।
তৃতীয় পাতায় দাতার প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করলে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে ফ্রি পরিশোধ অপশনে। এখানে প্রয়োজনীয় ফি অর্থাৎ কোর্ট ফি বাবদ ২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি বাবদ ৫০ টাকা, সব মিলিয়ে ৭০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। পরিশোধ এর মাধ্যমে আপনার আবেদন সম্পন্ন হবে।
নামজারি খতিয়ান চেক করার নিয়ম।
অনলাইনে জমি খারিজের আবেদন সাবমিট করার পর আপনাকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এই সময় ভূমি অফিসের কর্মকর্তাগণ আপনার আবেদন যাচাই-বাছাই করবেন। যদি আপনার আবেদন তদন্ত করার পর এসিল্যান্ড অফিস অনুমোদন করে তাহলে আপনাকে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
আরো পড়ুনঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স টিকিট কাটার নিয়ম
আর যদি তারা কিছুই না করে বা অনেকদিন হয়েছে কিছুই জানতে পারছেন না তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার খারিজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। অনলাইনে ঘরে বসে আপনার খারিজের অবস্থান জানার সুযোগ করে দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। অনলাইনে জমির খারিজের অবস্থা জানার জন্য আপনাকে ভূমি অফিসে যেতে হবে না ঘরে বসেই আপনি খুব সহজেই খারিজের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন এর ফলে আপনার সময়ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।
অনলাইনে খারিজের অবস্থান জানার জন্য আপনাকে ভূমি অফিসের https// mutation.land.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা এই বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার সামনে একটি ফরম আসবে এই ফরম সঠিক তথ্য গুলো দিয়ে পূরণ করুন।
- বিভাগ নির্বাচন করুন আপনি কোন বিভাগের বসবাস করেন। যেমন- খুলনা বিভাগ
- আবেদনের আই,ডি আবেদনের সময় আপনাকে একটি আইডি নাম্বার দেয়া হয়েছিল সে আইডি নাম্বার দিতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার।
- ক্যাপচা কোড পূরণ করুন বা যোগফল প্রদান করুন এখানে শুধুমাত্র ইংলিশে যোগফল প্রদান করতে হবে।
তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে সবুজ চিহ্নযুক্ত খুঁজুন বাটনে ক্লিক করুন। সাথে সাথে আপনার খারিজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে।
নামজারি আবেদন শুনানিতে অংশগ্রহণ।
অনলাইনে আবেদন সাবমিট করার পর আপনার আবেদন যদি অনুমোদিত হয় তাহলে আপনাকে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে আর সাথে সাথে আপনাকে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে নির্দিষ্ট সময় দেয়া হবে। শুনানিতে অংশগ্রহণ দুই ভাবে করা যায়।
স্ব- শরীরে উপস্থিত হয়ে এবং অনলাইন এর মাধ্যমে।
স্ব- শরীরে উপস্থিত হয়ে শুনানিতে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট দিন ও সময় উল্লেখ করে দেয়া হবে। নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনারের কার্যালয় উপস্থিত হয়ে শুনানিতে অংশগ্রহণ করবেন। সহকারী ভূমি কমিশনার আপনাকে যেসব বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে সেগুলোর উত্তর দিতে হবে।
অনলাইনে শুনানিতে অংশগ্রহণ করার পদ্ধতি।
অনলাইনে শুনানিতে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে https//oh.lams.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর অনলাইন শুনানি বাটনে ক্লিক করুন।
সাথে সাথে আপনার সামনে একটি ফরম ওপেন হবে এই ফর্মটি পূরণ করে অনুরোধ করুন বাটনে ক্লিক করুন। অনুরোধ করুন বাটনে ক্লিক করার পর আপনার মোবাইলে একটি OTP কোড যাবে। ভেরিফিকেশন বাটনে ক্লিক করে OTP প্রদান করলে একটি নতুন পেজ ওপেন হবে।
উপরে প্রদর্শিত পেজটি যথাযথভাবে পূরণ করে অনুরোধ বাটনে ক্লিক করুন এরপর আপনি মামলার শুনানির তালিকা দেখতে পাবেন। তারিখ অনুযায়ী আপনাকে একটি আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রদান করা হবে উক্ত আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে নির্ধারিত দিন ও সময়ে আপনি শুনে নিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
শুনানিতে অংশগ্রহণ ও অনুমোদন হলে এর পরবর্তী কাজ হল DCR কাটা। অনলাইনে জমির খারিজ আবেদন অনুমোদন হলে হালনাগাদ ফি বাবদ ১০০০ টাকা এবং খতিয়ান প্রাপ্তির জন্য ১০০ টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। যাবতীয় ফি পরিশোধ করার পর QR কোড যুক্ত অনলাইন DCR সংগ্রহ করতে পারবেন।
জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে।
জমির খারিজ বা নামজারি করতে গেলে প্রয়োজনীয় কি কি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস বরাবর দাখিল করতে হয় এগুলো অনেকেই জানে না। প্রয়োজনীয় কি কি কাগজপত্র ভূমি অফিসে জমা দিতে হয় এই বিষয়ে ধারণা না থাকার কারণে অনেক সময় নামজারির আবেদন না মঞ্জুর হয়। আপনার ক্রয় করা জমি বা পৈত্রিক সূত্রের প্রাপ্ত জমি খারিজ বা নামজারি করতে গেলে যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের দরকার হয় সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা স্মার্ট কার্ড এর ফটোকপি,
- এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি,
- জমির দলিলের ফটোকপি,
- সংশ্লিষ্ট জমির খতিয়ানের ফটোকপি (এস এ খতিয়ান, আরএস খতিয়ান),
- বায়া দলিলের ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে),
- ওয়ারিশান সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে),
- জমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলার কপি,
জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে।
বর্তমানে ভূমি অফিসের সকল কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। জমির খারিজ বা নামজারি করতে এখন আর পূর্বের মতো সরাসরি হাতে ফরম পূরণ করে সহকারী ভূমি অফিসার বরাবর আবেদন করতে হয় না। জমি খারিজ বা নামজারি করতে সহকারী ভূমি অফিসার বরাবর অনলাইনে আবেদন করতে হয়।
জমি খারিজ বা নামজারি করতে যেসব কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে এগুলো স্ক্যান কপি এবং জমি খারিজ করার নির্ধারিত ফ্রি অনলাইনে প্রধান সাপেক্ষে সহকারী ভূমি অফিসার বরাবর আবেদন করতে হয়। ভূমি অফিসের কার্যক্রমের ডিজিটালাইজেশনের কারণে দালালদের দৌরাত্ত অনেকটাই কমে এসেছে। ভূমি অফিসের সেবা প্রার্থীদের হয়রানি কমেছে।
আরো পড়ুনঃ ই- পাসপোর্ট এর ফরম পূরণ করার সঠিক নিয়ম
একটা সময় ছিল যখন ভূমির নাম জারি করার জন্য ভূমি অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে হতো এবং বেশ কিছু সময় লাগতো। বর্তমান সরকারি আইন অনুযায়ী মহানগর এলাকায় ৬০ কর্ম দিবস এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে নামজারি নিষ্পত্তি করার বিধান চালু রয়েছে।
জমির খারিজ করতে কত টাকা লাগে।
কোন জমি ক্রয় বিক্রয়ের পূর্বে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট জমির নামজারি বা খারিজ করা থাকতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী খারিজ করা জমি ব্যতীত কোন জমি ক্রয় বিক্রয় করা সম্ভব নয়। আপনি কোন জমি ক্রয় বিক্রয় করতে গেলে সেই জমির অবশ্যই খারিজ থাকতে হবে।
এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে জমি খারিজ করতে গেলে কত টাকা লাগে। আলোচনার এই অংশে আমি জমির খারিজ করতে কত টাকা লাগে এই সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
এখন যেহেতু অনলাইনে জমির খারিজ করার নিয়ম চালু হয়েছে তাই অনলাইনে জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে এটি জানা অত্যন্ত জরুরী। কেননা জমি খারিজ করতে গেলে অনেক সময় দালালের খবরে পড়ে অনেক অর্থ ব্যয় হয় যার কাম্য নয়। বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী বর্তমানে জমি খারিজ করতে ১১৭০ টাকা লাগে। যেমন-
- কোর্ট ফি ২০ টাকা;
- নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা;
- রেকর্ড সংশোধন ফি ১০০০ টাকা;
- খতিয়ান ফি ১০০ টাকা;
- সর্বমোট ১১৭০ টাকা
জমি খারিজ না করলে কি হয়?
কোন জমির মালিকানা নিশ্চিতের অন্যতম একটি বিষয় হলো সংশ্লিষ্ট জমির নামজারি বা খারিজ করা। কোন জমির মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে দলিল রেজিস্ট্রি করে নেওয়া। এরপর দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট জমি খারিজ করে নেওয়া।
খারিজ না করলে আপনি সেই জমির মালিকানার দাবির ক্ষেত্রে আইনগত দুর্বলতা থেকে যায় এবং পরবর্তীতে যদি আপনি সেই জমি বিক্রি করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জমির খারিজ বা নামজারি করতে হবে।
আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন জমি খারিজ না করলে কি হয় এই বিষয়ে সম্পর্কে। জমি খারিজ না করলে শুধুমাত্র দলিল রেজিস্ট্রির মাধ্যমে কোন জমি ক্রয় করলে পরবর্তীতে জমির মালিকানা নিয়ে আইনগত ঝামেলা তৈরি হতে পারে।
জমির নামজারি বা খারিজ করা না থাকলে আপনি সেই জমির মালিকানা দাবি করতে পারবেন না এবং পূর্বের মালিক অন্য কোথাও সেই জমি বিক্রি করে দিতে পারে আপনার জিজ্ঞাসা ছাড়াই।
এমনকি পরবর্তীতে আপনার এই জমি নিয়ে মামলা পড়ে যেতে পারেন। তাই জমি ক্রয় করার পর অবশ্যই তাড়াতাড়ি জমি খারিজ করে ফেলুন।
শেষ কথাঃ
জমি খারিজ বা নামজারি করার পদ্ধতি ও অন্যান্য বিষয় গুলো আজকের এই পোস্টে বিশদভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। উপরের আলোচনায় কোন ভুল ভ্রান্তি থাকলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানিয়ে দেবেন। আজকের এই পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে সেটিও কমেন্ট করে জানাবেন।
আমাদের দেশে বেশিরভাগ জনগণ বিভিন্ন ভূমি অফিসে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে চরম পর্যায়ের প্রতারণা হয়রানি শিকার হয়ে থাকে। সাধারণ জনগণের মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ের সচেতনতা সৃষ্টির করার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url