অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সহজ নিয়ম
তথ্যপ্রযুক্তির ছোয়ায় ট্রেনের টিকেটিং ব্যবস্থায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। আগে একটা সময় স্টেশনে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত কষ্ট করে ট্রেনের টিকিট কাটতে হতো কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। যারা অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম জানেনা তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি হতে চলেছে অত্যন্ত উপকারী।
আজকের এই পোস্টে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম জানার পাশাপাশি আপনারা আরো জানতে পারবেন অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম।
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সবচেয়ে আরামদায়ক, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে ট্রেন। তাই দূরপাল্লার যে কোন ভ্রমণের ক্ষেত্রে সবার প্রথম পছন্দ থাকে ট্রেন। তবে ট্রেনের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরামদায়ক, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী হলেও এর টিকেট পাওয়া অত্যন্ত দুঃসাধ্য ও কষ্টকর। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক সময় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না।
বিভিন্ন উৎসবের সময় ট্রেনের টিকেটের চাহিদা আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের টিকিটের চাহিদা কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম চালু করেছে। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট তিনটি প্লাটফর্ম থেকে আপনি কাটতে পারবেন। যেমন-
- রেল সেবা অ্যাপসের মাধ্যমে।
- রেলওয়ের ই টিকেটিং ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে।
- এবং বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে গেলে সর্বপ্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েব পোর্টালে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েব পোর্টালে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে এখানে ক্লিক করুন
প্রিয় পাঠক, আমি ধরে নিলাম যে আপনার বাংলাদেশ রেলওয়েতে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করা রয়েছে। এখন আপনি কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন সেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আর্টিকেলের শুরুতেই আমি বলেছি যে, বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকিট তিনটি মাধ্যম থেকে ক্রয় করা যায়।
আরো পড়ুনঃঅনলাইনে ট্রেনের লোকেশন জানার সেরা উপায়।
যেমন রেল সেবা অ্যাপস, বাংলাদেশ রেলওয়ের ই টিকেটিং সিস্টেমের ওয়েবসাইট থেকে এবং বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে। এই তিনটি মাধ্যম থেকে আপনি কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করবেন এই বিষয়টি এখন আপনাদের জানাবো।
রেল সেবা অ্যাপসের মাধ্যমে।
রেলসেবা অ্যাপস থেকে টিকিট কেনার জন্য প্রথমে আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে Rail Shaba Apps ডাউনলোড করতে হবে তারপর এটি ইন্সটল করে নিতে হবে।
Rail Shaba Apps প্রবেশ করা মাত্রই আপনার সামনে র্টামস এন্ড কন্ডিশন অপশন আসবে এখানে I Agree ক্লিক করতে হবে। এরপর নিচের দেয়া অপশন গুলো যথাযথভাবে পূরণ করুন।
From, যে স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করবেন সে স্টেশনের নাম উল্লেখ করুন। ধরুন রাজশাহী স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করবেন।
To, যে স্টেশন পর্যন্ত যাবেন সেই স্টেশনের নাম লিখুন। যেমন কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত যাবেন।
এরপর আসন সিলেকশন করতে হবে। যেমন- AC-B, AC-S, SNIGDHA, AC-CHAIR, S- CHAIR ইত্যাদি।
JOURNEY DATE অর্থাৎ যাত্রার তারিখ দিতে হবে।
এরপর SEARCH TRAIN এই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
উপরের পেজের নিচে SEARCH TRAIN অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে যে পেজটি OPEN হবে সেখানে দেখতে পাবেন কোন কোন ট্রেন আপনার প্রদত্ত তারিখে রাজশাহী থেকে কমলাপুর ছেড়ে যাবে। ট্রেনের তালিকা থেকে যে কোন একটি সিলেক্ট করুন।
আরো পড়ুনঃ বিদেশ থেকে জমি রেজিস্ট্রি কিভাবে করবেন
নির্ধারিত তারিখে কাঙ্ক্ষিত ট্রেন ও আসন না পেলে MODIFY অপশন এ ক্লিক করে তারিখ ও আসন চেঞ্জ করে পুনরায় চেষ্টা করুন।
এরপর আপনার কাঙ্খিত ট্রেনের আসন অপশনে BOOK NOW এই বাটনে ক্লিক করুন।
BOOK NOW অপশনে ক্লিক করলে ট্রেনের কোচ বা বগি নির্বাচন অপশন আপনার সামনে আসবে। যেসব কোচ বা বগিতে আসন ফাঁকা রয়েছে সেগুলো সাদা চিহ্ন যুক্ত হবে আর যেগুলোতে আসন সংখ্যা ফাঁকা নেই সেগুলো হলুদ অংশ দেখাবে অন্যদিকে নেভি ব্লু চিহ্ন যুক্ত থাকলে বুঝতে হবে এই সিটগুলো সিলেক্ট করা হয়েছে।
এরপর সাদা অংশের যেকোনো একটি কোচ বা বগিতে ক্লিক করুন।
এখানে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার সামনে কত নাম্বারের সিট ফাঁকা রয়েছে বা খালি রয়েছে তা দেখাবে। সেখান থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী কয়টি টিকিট বা সিট ক্রয় করবেন সেগুলো সিলেক্ট করুন।
এরপর CONTINUE PURCHASE এই অপশনে ক্লিক করুন।
CONTINUE PURCHASE অপশনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে যাত্রীর যাবতীয় তথ্য যেমন- যাত্রীর নাম, ইমেল নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, সিট নাম্বার, যাত্রার সময়, এরকম একটি তথ্য সম্বলিত একটি ফর্ম আসবে। এই ফর্মের proceed অপশন এ ক্লিক করতে হবে।
সর্বশেষ টিকেটের ফি পরিশোধ করতে হবে। টিকিটের টাকা দুইভাবে পরিশোধ করা যায়। যথা-
১। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে
২। ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে
ধরুন, আপনি মোবাইল ব্যাংকিং নগদের মাধ্যমে টিকিটের টাকা পরিশোধ করবেন। তাহলে, আপনি নগদ অপশন ক্লিক করুন। এরপর proceed to payment এই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর আপনার নগদ একাউন্ট নাম্বার দিতে হবে। তারপর proceed অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর আপনার সামনে OTP কোডের একটি অপশন আসবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে এই কোডটি আপনার মোবাইলে মেসেজ এর মাধ্যমে পাঠানো হবে। এই OTP কোডটি নির্দিষ্ট স্থানে বসাতে হবে তারপর proceed অপশনে ক্লিক করতে হবে।
আপনার মোবাইলের নগদ একাউন্ট থেকে টিকিটের মূল্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কেটে নেবে এবং আপনার টিকেট ক্রয় এর কনফারমেশন একটি মেসেজ পাঠাবে। এর কিছুক্ষণ পরেই আপনার মোবাইলে ইমেইলের মাধ্যমে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ টিকিট পাঠিয়ে দেবে। এভাবে Rail Shaba Apps এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে হয়।
রেলওয়ের ই টিকেটিং ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে।
প্রথমে আপনার মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে Log In করুন। এরপর নিচে দেওয়া অপশন গুলো যথাযথভাবে পূরণ করুন।
From, যে স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করবেন সে স্টেশনের নাম উল্লেখ করুন। ধরুন ঢাকা কমলাপুর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করবেন।
To, যে স্টেশন পর্যন্ত যাবেন সেই স্টেশনের নাম লিখুন। যেমন সান্তাহার স্টেশন পর্যন্ত যাবেন।
এরপর আসন সিলেকশন করতে হবে। যেমন-AC-B, AC-S, SNIGDHA, AC-CHAIR, S- CHAIR ইত্যাদি।
JOURNEY DATE অর্থাৎ যাত্রার তারিখ দিতে হবে।
SEARCH TRAINS অপসনে ক্লিক করতে হবে।
SEARCH TRAINS অপশনে ক্লিক করার পর আপনার সামনে বিভিন্ন ট্রেনের নাম এর একটি লিস্ট চলে আসবে। এখানে আপনি কোন ট্রেনের কয়টি সিট এখনো অবিকৃত রয়ে গেছে সেটি দেখতে পাবেন।
এবার আপনি যে ট্রেনে ভ্রমণ করতে চান সেই ট্রেনের কোন শ্রেণীতে ভ্রমণ করবেন তার BOOK NOW অপশনে ক্লিক করুন। এইবার কোচ বা বগি ও সিটের একটি তালিকা দেখতে পাবেন এই তালিকার সাদা অংশগুলো থেকে আপনি যে কয়টি টিকিট ক্রয় করবেন সে কয়টি সিলেক্ট করুন। সিটগুলো সিলেক্ট হয়ে গেলে এগুলো নেভি ব্লু রং ধারণ করে।
এখানে শুধুমাত্র একটি কোচ বা বগি ও সেই কোচ বা বগীর সিট গুলো দেখতে পাবেন আপনি যদি অন্যান্য বগি ও সিট দেখতে চান তাহলে Select Coach অপশনের এ্যারো চিহ্নতে ক্লিক করতে হবে। এখান থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী বগি ও সিট নির্বাচন করুন।
CONTINUE PURCHASE অপশনে ক্লিক করুন।
আপনি যদি একের অধিক টিকিট ক্রয় করেন তাহলে অন্যান্য যাত্রীদের তথ্য আপনাকে পূরণ করতে হবে আর যদি শুধুমাত্র একটি টিকিট ক্রয় করেন তাহলে আর কোনো তথ্য আপনাকে দিতে হবে না।
এবার আপনি কোন মাধ্যমে টিকিটের মূল্য পেমেন্ট করতে চান সেটি সিলেক্ট করুন এবং PROCEED TO PAYMENT অপশনে ক্লিক করুন। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার টাকা বিভিন্ন মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায়। যেমন- বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ডেভিড ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে।
এরপর আপনার মোবাইল ব্যাংকিং এর একাউন্ট নাম্বার অর্থাৎ মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। আমি এখানে নগদ অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি এবং Proceed অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এবার যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেই নাম্বারে একটি OTP কোড রেলওয়ের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। এই OTP কোড যথাস্থানে বসিয়ে Proceed অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এবার সর্বশেষ ধাপ আপনার নগদ বা অন্য মোবাইল ব্যাংকিং এর একাউন্ট এর পিন নাম্বার দিয়ে proceed বা Confirmation অপশনে ক্লিক করতে হবে। কিছুক্ষণ পর আপনার ইমেইল ঠিকানায় একটি টিকিট পাঠিয়ে দেয়া হবে। অথবা ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করে টিকিটটি ডাউনলোড করে নেবেন। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এইবার আপনি নিজেই নিজে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে।
গুগল প্লেস্টোর থেকে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করুন।( যাদের ডাউনলোড করা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়) এরপর বিকাশ অ্যাপসটি ইন্সটল করুন। যারা বিকাশ অ্যাপস অলরেডি ব্যবহার করছেন তারা সরাসরি অ্যাপসে প্রবেশ করুন।
এখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং সার্ভিস স্ক্রিনে আসবে এইটাতে ক্লিক করুন।
এখানে ক্লিক করলে আপনাকে রেলওয়ের ই- টিকেটিং ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।
এরপর উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলো অনুসরণ করে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করুন। আমি যেহেতু উপরে নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট করে ট্রেনের টিকিট কিভাবে কাটতে হয় সেটি দেখিয়েছি। এখানে আপনারা বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করে টিকিট ক্রয় করবেন।
আপনি যদি কোন ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের দোকান থেকে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করেন তাহলে টিকিটটি প্রিন্ট করে নিতে হবে। আর যদি আপনি আপনার স্মার্টফোন থেকে টিকিট ক্রয় করেন তাহলে টিকিট প্রিন্ট করার কোন প্রয়োজন নেই।
যাত্রাকালে টিকিট চেকার বা টিটি যখন আপনার টিকিটটি দেখতে চাইবে তখন আপনি মোবাইলের মাধ্যমে তা প্রদর্শন করতে পারবেন। আপনাদের সকলকে একটি বিষয় অবশ্যই জানতে হবে যে আসন বিহীন কোন টিকিট অনলাইনে ক্রয় করা যায় না।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম।
আপনি অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার পর যদি কোনো কারণে আপনার যাত্রা বাতিল করতে হয়। তাহলে অনলাইনে আপনি সেই টিকিটের মূল্য ফেরত পাবেন এটি একটি বাংলাদেশ রেলওয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আপনি যদি সরাসরি কাউন্টারে গিয়ে টিকিট ক্রয় করে থাকেন তাহলে টিকিট বাতিল করতে চাইলে আপনাকে সরাসরি কাউন্টারে গিয়েই তা করতে হবে।
তবে আপনি যদি অনলাইনে টিকিট ক্রয় করেন তাহলে অনলাইনে টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা ফেরত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনাকে আর কাউন্টারে যেতে হবে না ঘরে বসে আপনার স্মার্টফোন ব্যবহার করে টিকিটের টাকা ফেরত নিতে পারবেন।
তবে আপনি যদি অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার পরে সেটি স্টেশনের কাউন্টার থেকে প্রিন্ট করে ফেলেন তাহলে আপনাকে কাউন্টারে গিয়ে গিয়ে টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা ফেরত নিতে হবে। এবার আসুন কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করবেন এবং টাকা ফেরত নেবেন সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করা এবং টাকা ফেরত নেয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে যেতে হবে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই টিকেটিং সিস্টেমের ওয়েবসাইটে বা রেল সেবা অ্যাপসে।
রেল সেবা অ্যাপস বা ই টিকেটিং ওয়েবসাইটে মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে Log In করুন। উপরের দিকে ডান পাশের থ্রি লাইনস অপশনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার নামের উপরে ক্লিক করুন। আপনার নামের উপরে ক্লিক করার পর Purchase History অপশনে ক্লিক করুন।
Purchase History তে ক্লিক করার পর আপনি গত ৭ দিনে অনলাইনে যতগুলো টিকিট কিনেছেন তার একটি লিস্ট দেখতে পাবেন। এই লিস্ট থেকে যে টিকিটটি আপনি বাতিল করতে চাচ্ছেন সেই টিকিটের Cancel Ticket অপশন এ ক্লিক করুন।
এইবার আপনার সামনে একটি বক্স আসবে যাতে টিকিটের সব তথ্য দেখতে পাবেন। টিকিট বাতিলের জন্য Confirm Cancellation বাটনে ক্লিক করুন। Confirm Cancellation বাটনে ক্লিক করলে আপনার সামনে OTP কোড দেওয়ার একটি পপ আপ বক্স আসবে।
আপনি যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাউন্ট করেছেন সে মোবাইল নাম্বারে একটি OTP কোড আসবে। এই OTP কোড বক্সের ভিতরে বসান। এরপর Verify বাটনে ক্লিক করুন। আপনার যদি OTP না আসে তাহলে Resend OTP বাটনে ক্লিক করুন এবং অপেক্ষা করুন।
Verify বাটনে ক্লিক করার পর Refund In progress প্রদর্শিত হবে। এবার ok তে ক্লিক করবেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ের মধ্যে আপনি যে গেটওয়ে মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করেছেন সেই একাউন্টে টাকা রিফান্ড করে দেবে। আপনি যদি বিকাশ নগদ এর মাধ্যমে টিকিটের টাকা পেমেন্ট করেন তাহলে বিকাশ বা নগদে টাকা রিফান্ড করে দেবে। আর আপনি যদি ব্যাংকের কোন একাউন্টের মাধ্যমে টাকা পেমেন্ট করেন তাহলে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা রিফান্ড করে দেবে।
এইভাবেই খুব সহজে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করতে পারবেন।
ট্রেনের টিকিট বাতিলের চার্জ।
বর্তমানে ট্রেনের টিকিট যাত্রা শুরুর পূর্বে ১০ দিন আগে টিকিট কাটার নিয়ম চালু আছে। অগ্রিম টিকিট কাটার পর অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আমাদের ট্রেন ভ্রমণ বাতিল করতে হয়। এখন খুব সহজেই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করে টাকা ফেরত নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অনলাইনে টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম ও চার্জ সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। ট্রেনের টিকিট ফেরত দিলে কত টাকা রিফান্ড পাবেন সেই সম্পর্কে এখন জানাবো।
আপনার যাত্রার শুরুর ৪৮ ঘন্টা পূর্বে ট্রেনের টিকিট বাতিল করলে সার্ভিস চার্জ বাবদ এসি শ্রেণীর ক্ষেত্রে ৪০ টাকা, প্রথম শ্রেণীর ক্ষেত্রে ৩০ টাকা এবং অন্যান্য শ্রেণীর ক্ষেত্রে ২৫ টাকা কেটে নেওয়া হবে।
- ৪৮ ঘণ্টার কম এবং ২৪ ঘন্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে মোট ভাড়ার ২৫% টাকা কেটে নেয়া হবে।
- ২৪ ঘন্টার কম এবং ১২ ঘণ্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে মোট ভাড়ার ৫০% টাকা কেটে নেয়া হবে।
- ১২ ঘন্টার কম এবং ৬ ঘন্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে মোট ভাড়ার ৭৫% টাকা কেটে নেওয়া হবে।
- ৬ ঘন্টার কম সময়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের টাকা ফেরত দেয়া হবে না।
আশা করি তথ্যটি আপনাদের কাজে আসবে এবং বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথাঃ
বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রী সেবার মান উন্নতিকরনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তারই অংশ হিসাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করার যে সিস্টেম চালু করেছে তা খুবই প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। এতে করে রেলের যাত্রীদের টিকিট ফেরত দেওয়া এবং টিকিটের টাকা রিফান্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে যে ভোগান্তির শিকার হতে হয়তো তা দূর হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কে সকলের পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url