সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন- ২০২৪
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার আবেদন করার চিন্তা করছেন কিন্তু জানেন না সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত? কোম্পানি ভিসার বেতন না জেনে ভিসার জন্য আবেদন করা মোটেও ঠিক নয়। কোম্পানি ভিসার আবেদনের পূর্বে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে জানতে পারবেন সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত।

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত।
বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে যায়। দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকার কারণে বেকারত্ব দূরীকরণ ও উন্নত জীবনের আশায় সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে যাচ্ছে।
সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক কর্মী হায়ার করে থাকে। আবার অনেকের আগ্রহ থাকে সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার জন্য কেননা কোম্পানি ভিসায় যেতে পারলে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে যা অন্যান্য বিষয় পাওয়া যায় না। এই জন্যই আমাদের দেশে সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার জন্য আবেদন করা আগেই আপনাকে জানতে হবে সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসাই গেলে কত টাকা বেতন পাওয়া যায়। সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসায় গেলে কত টাকা বেতন পাওয়া যায় না জেনে ভিসার জন্য আবেদন করলে পরবর্তীতে সৌদি আরবে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারে।
বিপুল পরিমাণের টাকা খরচ করে সৌদিতে যাওয়ার পর বেতন যদি সীমিত হয় তাহলে অর্থনৈতিকভাবে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই সৌদি আরবের যাওয়ার পূর্বে আপনি যে ভিসায় সৌদি আরব যেতে চাচ্ছেন সে ভিসার বেতন কত তা জানা উচিত। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত এই বিষয়টি জেনে আসি।
সৌদি আরবের কোম্পানি নাম।
সৌদি আরবের কোম্পানী ভিসার বেতন কত তা জানার পূর্বে সৌদি আরব এর কোন কোন কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করে সেটি জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে আসি সৌদি আরবের কোম্পানিগুলোর নাম।
সৌদি আরবের বিভিন্ন খাতে বেশ কয়েকটি বড় বড় কোম্পানি গড়ে উঠেছে। যেমন- তেল কোম্পানি, কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, ঔষধ কোম্পানি সহ অন্যান্য কোম্পানি। এই কোম্পানিগুলোতে প্রচুর বাংলাদেশী প্রবাসী কর্মী কাজ করছে এবং নতুন নতুন কর্মী বাংলাদেশ থেকে নিয়োগ দিচ্ছে। সৌদি আরবের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কোম্পানির নাম হলো-
- সৌদি আরামকো কোম্পানি
- আল -মারাই
- বলদিয়া কোম্পানি
- আল ইমামা কোম্পানি
- সাবিক
- জাজরা ইন্টারন্যাশনাল
- আল- ফাউজান গ্রুপ
- আল-রুয়াইদ ইন্ডাস্ট্রি
- আল-বাওয়ানি
- আল-রাশিদ
এখানে উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি নাম দেয়া হলো এরকম সৌদিতে অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন খাতে লোক নিয়োগ করেন বিশেষ করে লেবার, ড্রাইভার, ক্লিনার সহ অন্যান্য খাতে লোক নিয়োগ করে।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত।
এবার আসুন আমরা সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত এই সম্পর্কে আলোচনা শুরু করি। সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত এই প্রশ্নটি গুগলের সবচেয়ে বেশি মানুষ জানতে চায় তাই আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে আমি এই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব। সৌদি আরবে কোম্পানির ভিসার বেতন কত এটি সঠিক করে বলা মুশকিল।
কেননা কোম্পানিগুলোর বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্থক্য দেখা যায়। কাজের পার্থক্য, অভিজ্ঞতা অন্যান্য বিষয়গুলোর পার্থক্যের কারণে বেতন কমবেশি হয়ে থাকে। যেমন- ড্রাইভিং ভিসায় বেতন প্রতি মাসে ২০০০ রিয়াল, লেবার ভিসায় ১১০০ থেকে ১২০০ রিয়াল, ক্লিনার ভিসায় ১১০০ থেকে ১২০০ রিয়াল, কনস্ট্রাকশন ভিসায় ১০০০ থেকে ১২০০ রিয়াল বেতন পাওয়া যায়। এখানে মূল বেতনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর সাথে ওভারটাইম, খাওয়া দাওয়া, আবাসন সুবিধা ও অন্যান্য ভাতা মিলে প্রতি মাসে ১৮০০ থেকে ২০০০ রিয়াল বেতন পাওয়া যায়।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার সুবিধা।
প্রত্যেক দেশেরই কোম্পানি ভিসার বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে এই সুবিধা গুলোর কারণে কোম্পানি ভিসার চাহিদা সব সময় বেশি থাকে। সৌদি আরবে যেসব কোম্পানি রয়েছে এই কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। এই সুযোগ-সুবিধা গুলোর কারণে সৌদি আরবের কোম্পানি হিসাব চাহিদা সব সময় বেশি।
সৌদি আরবের বিভিন্ন কোম্পানি কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। এর কয়েকটি কমন সুযোগ-সুবিধা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব যা জেনে আপনারা উপকৃত হবেন। চলুন এই সুবিধা গুলো কি কি জেনে আসি।
- নির্দিষ্ট সময়ে বেতন প্রদান।
- আবাসন ও খাওয়ার সুবিধা।
- বিদ্যুৎ বিল পানির বিলসহ অন্যান্য বিল প্রদান।
- চিকিৎসা সুবিধা।
- আকামার মেয়াদ বৃদ্ধি করে দেওয়া।
- নির্দিষ্ট কর্ম ঘণ্টার বেশি কাজ করালে ওভারটাইম প্রদান।
- দেশে আসা যাওয়ার খরচ বহন।
- সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান।
কোম্পানি ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
আপনি যে দেশেরই ভিসা করতে যান না কেন সব ধরনের ভিসা করতে আপনার নির্দিষ্ট কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয় তবে ভিসার ক্যাটাগরির উপর কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা নির্ভর করে। টুরিস্ট ভিসা, কাজের ভিসা, ব্যবসায়িক ভিসা প্রত্যেকটা ভিসার জন্য আলাদা আলাদা কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে।
আবার দেশের পার্থক্যের কারণে ভিসা করতে গেলে আলাদা আলাদা কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে এখানে আমি সৌদি আরবের শুধু কোম্পানি ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে সেটি জানাবো।
- একটি বৈধ পাসপোর্ট পাসপোর্ট এর মেয়াদ সৌদি আরবে প্রবেশের পর যেন ৬ মাস থাকে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- টিটিসি থেকে কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট।
- মেডিকেল টেস্টের সার্টিফিকেট।
- বি এম ই টি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট।
- এপয়েন্টমেন্ট লেটার।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা আবেদন।
সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসা আবেদন করার জন্য কোন ভিসা প্রার্থী সরাসরি আবেদন করতে পারবেন না। সরকার অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র এজেন্সিতে জমা দিতে হবে এজেন্সি গুলো ভিসা প্রার্থীর আবেদন পত্র দূতাবাসে জমা দেবে এবং দূতাবাস থেকে ভিসা ইস্যু করা হবে পরবর্তীতে এজেন্স গুলো এই ভিসা গ্রাহকদের দেবে।
এর পাশাপাশি এজেন্সি গুলো আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট, মেডিকেল টেস্ট, বিমানের টিকেট সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজে সহযোগিতা করবে।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সৌদি আরবের ভিসা চেক।
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার বেতন কত, কোম্পানি ভিসার আবেদন কিভাবে করতে হয়, ভিসা করতে কি কি কাগজপত্র লাগে এই বিষয়গুলো তো জানা হলো এবার যে বিষয়টি আপনাদের জানাবো সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ হেবা দলিল কি হেবা দলিল কে কাকে করতে পারে
বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে যারা সৌদি যেতে চান তারা এই প্রশ্নটি সবচেয়ে বেশি করেন যে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সৌদি আরবের ভিসা কিভাবে চেক করতে হয়। পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সৌদি আরবের ভিসা চেক করা খুবই সহজ একটি বিষয়। মাত্র কয়েক মিনিটে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে বা ল্যাপটপ দিয়ে সহজেই সৌদি আরবের ভিসা চেক করতে পারবেন।
সৌদি আরবের ভিসা চেক করার জন্য প্রথমে
visa.mofa.gov.sa/visaperson/GetApplicantData এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
এরপর পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয়তা (বাংলাদেশী), ভিসার ধরন (কাজের ভিসা), কর্তৃপক্ষ ভিসা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ (ঢাকা), ক্যাপচা কোড পূরণ করে Search বাটনে ক্লিক করুন।
Search বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার ভিসার বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
সৌদি আরব ভিসা দাম কত।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সৌদি আরবের ভিসা চেক করা পদ্ধতি সমূহ আমরা উপরে জেনেছি এবার আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা বেশিরভাগ মানুষই এই প্রশ্ন করে থাকে সৌদি আরবের ভিসার দাম কত।
আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ সৌদি আরব সহ অন্যান্য দেশে যাওয়ার জন্য নিজেদের সহায় সম্বল বিক্রি করে তারপর দালাল ও এজেন্সির কাছে টাকা জমা দিয়ে থাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দালাল ও এজেন্সি গুলো সাধারণ মানুষের সাথে ভিসা দেওয়া নিয়ে প্রতারণা করে যা দুঃখজনক। ভিসার সঠিক দাম জানা থাকলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে তাই চলুন সৌদি আরবের ভিসার দাম কত এই বিষয়টি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিয়ে আসি।
আমরা যে ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে বা অন্যান্য দেশে কাজের জন্য যাই এই ভিসা গুলো কয়েক হাত ঘুরে তারপর আমাদের কাছে আসে এজন্য এ ভিসাগুলোর দাম কয়েক গুন বেড়ে যায় কিন্তু প্রকৃত ভিসার মূল্য এত নয়। সৌদি
আরবের কোন নিয়োগ কর্তা বা মালিক সরকারের কাছ থেকে ভিসা বের করতে বাংলাদেশি টাকায় বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো লাগে আর এই ভিসা আমাদের হাতে এসে পৌঁছাতে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা হয়ে যায় যা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।
একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি সহজে বুঝতে পারবেন। যেমন- সৌদিতে কোন কোম্পানি তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০ লোক নিয়োগ করবে এই জন্য সরকারের কাছ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বের করতে প্রতি ভিসা ৩০০০ রিয়াল খরচ হল। এরপর এই ভিসাগুলো সে দেশের একটি এজেন্সি বা কোন মিডিয়ার কাছে একই মূল্যে বা অতিরিক্ত ১০০০ রিয়ালে বিক্রি করে দিল। তাহলে ভিসার দাম করল ৪০০০ রিয়াল।
এরপর এই ভিসাগুলো সৌদি আরবের এজেন্সি বাংলাদেশের এজেন্সির কাছে আরো অতিরিক্ত ১০০০ রিয়ালে ভিসাগুলো বিক্রি করে দিল। এবার বাংলাদেশের এজেন্সি গুলো এই ভিসার দাম আরো ২০০০ রিয়াল বৃদ্ধি করে সাধারণ ভিসা প্রার্থীদের কাছে বিক্রি করে দিল। তাহলে সর্বমোট ভিসার দাম দাঁড়ালো ৭০০০ রিয়াল।
এর সাথে রয়েছে ভিসা প্রসেসিং ফি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, মেডিকেল টেস্ট, বিমান টিকিট আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ মিলে ভিসার দাম ৩ থেকে ৩.৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় সাধারণ বিদেশগামীদের সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে যেতে খরচ লাগে ৫ থেকে ছয় ৬ লক্ষ টাকা যা অপ্রত্যাশিত।
শেষ কথাঃ
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানিয়ে দেবেন আর অবশ্যই মনে রাখবেন বাংলাদেশ থেকে যে দেশেই আপনি যেতে চান না কেন বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে তাদের জন্য সতর্ক বার্তা হচ্ছে জেনে বুঝে বিশ্বস্ত এজেন্সির মাধ্যমে অবশ্যই ভিসার জন্য আবেদন করবেন তা না হলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি পরবর্তী কোন বিষয়ে আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের জানাবো সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন।
সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url