কোন খেজুরে উপকার বেশি জেনে রাখুন

কোন খেজুরে উপকার বেশি এটি জানার জন্য যারা অধীর আগ্রহে ছিলেন তারা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এই বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার একটি ধারণা পেয়ে যাবেন। আমাদের দেশের রমজান মাসে খেজুর খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। তবে অনেকেই রয়েছেন যারা সারা বছর কম বেশি খেজুর খেয়ে থাকেন। যারা সারা বছর কম বেশি খেজুর খেয়ে থাকেন তাদের মধ্যে কোন খেজুর খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায় এটি জানার আগ্রহ বেশি থাকে।
কোন খেজুরের উপকার বেশি জেনে রাখুন
আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মধ্য দিয়ে আপনারা আরও যেসব বিষয় জানতে পারবেন তা হল খেজুর খাওয়ার উপকারিতা। খেজুর খাওয়ার নিয়ম। দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা।

খেজুর মূলত আরব বিশ্বের একটি ফল। এই ফল মরুভূমি প্রধান দেশগুলোতে বেশি উৎপন্ন হয়। এসব দেশগুলোর মধ্যে আবার সৌদি আরবের খেজুর এর চাহিদা ও পুষ্টিগুণ অন্যান্য দেশের খেজুরের চাইতে অনেক বেশি। পবিত্র দেশ সৌদি আরবের এক বিশেষ ধরনের খেজুর রয়েছে যার নাম আজওয়া খেজুর। এই প্রজাতি খেজুর পবিত্র মক্কা নগরীতে উৎপন্ন হয়। 

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিজ হাতে এই গাছ সর্বপ্রথম রোপন করেন। এই প্রজাতির খেজুরের রয়েছে বিশেষ বরকত ও ফজিলত। আজওয়া খেজুর খাওয়া সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,‘ যে ব্যাক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন বিষ ও জাদু তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’।( সহীহ বুখারী)

তিনি আরো বলেছেন,‘ এই খেজুর হলো রোগ নিরাময়কারী ও এটি জান্নাতের ফল এর মধ্যে রয়েছে বিষ নিরাময়ের গুণ’।

আমাদের দেশে রমজান মাসে এবং শীতকালে খেজুরের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। আমাদের দেশে যে সকল খেজুর পাওয়া যায় সেগুলোর বেশিরভাগ সৌদি আরব সহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়। আমাদের দেশে যে সকল খেজুর পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন খেজুর হচ্ছে আজওয়া খেজুর এবং মরিয়ম খেজুর। 
এই দুটি খেজুরের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। সকল ধরনের খেজুরের প্রায় একই রকমের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। খেজুরের যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো হলো- শর্করা, আমিষ, প্রোটিন, স্বাস্থ্যসম্মত ফ্যাট। এছাড়া রয়েছে আঁশ, ভিটামিন- এ, ভিটামিন- বি ৬, ভিটামিন- সি ও ভিটামিন- কে, ক্যারোটিন, ফলেট, নিয়াসিন, থিয়ামিন এর মত উপাদান যা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ
  • খেজুরে থাকা আশ খাবার হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যায়।
  • প্রতিদিন সকালে বা রাতে ঘুমানো যাওয়ার আগে খেজুর খেলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয়ে যায়।
  • নিয়মিত খেজুর খেলে রক্তনালীর জন্য ভালো। খেজুর খেলে রক্তধমনী পরিষ্কার থাকে রক্ত চলাচলে কোন বাধা সৃষ্টি হয় না। ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কম থাকে।
  • খেজুরে থাকা ভিটামিন- এ চোখের জন্য খুবই উপকারী, নিয়মিত খেজুর খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
  • খেজুরে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা ফোলা ও ব্যথা আরাম দেয়। এছাড়া খেজুরের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রভাব রয়েছে ফলে সংক্রমণ হওয়া সম্ভাবনা কমে যায়।
  • শরীরের ওজন কমানোর জন্য খেজুর খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। খেজুরের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি ক্ষুধা কমায় এবং অতিরিক্ত খাওয়া এড়ায়।
  • গর্ভবতী নারীদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী। খেজুরে থাকা আয়রন নারীদের রক্তস্বল্পতা দূর করে। খেজুরের ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ যা গর্ভবতী নারীদের জন্য অপরিহার্য। গর্ভবতী নারীরা সহজেই ১-২ খেজুর খেতে পারেন।
  • বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকের চামড়া কুঁচকে যায় খেজুরে থাকার ভিটামিন বি এই সমস্যার সমাধান করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়ম করে খেজুর খেলে আস্তে আস্তে এই দাগ মিশে যাবে।
  • ঠান্ডা জড়িত কারণে যাদের খুশখুসে কাশি হয় তারা ১-২ খেজুর এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে খেলে ভালো হয়ে যায়।
  • নিয়মিত খেজুর খেলে চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে এবং চুল পড়া বন্ধ করে।
  • খেজুর ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিয়মিত খেজুর খেলে টিউমারের কোষগুলো দ্রুত বাড়তে বাধা সৃষ্টি করে।
  • শিশুদের স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেজুর একটি মূল্যবান ফল। কম ওজন, কম হিমোগ্লোবিন এবং কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন শিশুদের প্রতিদিন অন্তত একটি করে খেজুর খাওয়া উচিত। শিশুরা যখনই চকলেট খেতে চাইবে তখনই তাদের হাতে ধরিয়ে দিন একটি করে মিষ্টি খেজুর।
প্রিয় পাঠক, আলোচনার এই অংশে একটি কথাই বলবো শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখার জন্য নিয়মিত ১টি করে হলেও খেজুর খান। এতে করে আপনার শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে। কারণে-অকারণে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে না। এক কথায় আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত খেজুর খান।

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত।

আপনারা সবাই জানেন যে খেজুর আমাদের শরীরের পুষ্টির উপাদান পূরণে কেমন কাজ করে। খেজুর এর স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা বলে লিখে শেষ হবার নয়। আমরা সাধারণত রমজান মাসেই বেশি খেজুর খেয়ে থাকি সারা বছর খেজুর না খেলেও এক রমজান মাসেই আমরা যে পরিমাণের খেজুর খাই তা নিয়ম করে খেলে সারা বছর খাওয়া যাবে। 
একটি খেজুরের পুষ্টিমান থাকে কার্বস ৪৪ শতাংশ, ডায়েটারি ফাইবার ৬-১২ শতাংশ,প্রোটিন ২.৩-৫.৬ শতাংশ, চর্বি ০.২-০.৫ শতাংশ। এছাড়া এতে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন। দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় প্রতিদিন একজন সুস্থ মানুষের ৪-৫টি খেজুর খাওয়া উচিত কেননা ৪-৫টি খেজুরে মিলবে প্রায় ২৭৭ ক্যালরি। আশা করি প্রিয় পাঠক উত্তরটি পেয়েছেন।

খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয়।

অর্থের পিছনে হণ্য হয়ে ছুটে চলা, প্রাত্যহিক কাজের ব্যস্ততা, মানসিক চাপ বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরের এক ধরনের বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে।র্এর প্রভাবটা এসে পড়ে আমাদের যৌন শক্তির উপর। বর্তমান যুগের অনেক নারী পুরুষ যৌনশক্তির অভাবে ভোগের বিশেষ করে পুরুষেরা। 

অনেকেই প্রশ্ন করেন খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয়? হ্যাঁ খেজুর খেলে পুরুষের যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়, শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ও বীর্য পাতলা হলে তা ঘন হয়। খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের মত উপাদান। সব কটি নানান ভাবে শরীরের বিভিন্ন কাজে লাগে। শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অনেকটাই দিতে পারে খেজুর।

কোন খেজুরে উপকার বেশি

আমাদের দেশে দুই ধরনের খেজুর পাওয়া যায় দেশি খেজুর যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয় এবং বিদেশি খেজুর বা আমদানি করা খেজুর। দেশি খেজুরের তুলনায় বিদেশী খেজুরের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তাই বিদেশ থেকে আমদানি করা এসব খেজুরের চাহিদা সব সময় বেশি থাকে। বিশেষ করে রমজান মাসে আমদানি করা খেজুরের চাহিদা খুব বেশি । 

বিদেশি খেজুর গুলো খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর পুষ্টিগুনো অনেক বেশি। বিদেশ থেকে যেসব খেজুর আমদানি করা হয় সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আজওয়া, মরিয়ম, খালাস, ওয়াশালি, ডেইরি ও মাবরুম প্রভূতি বিভিন্ন নামের খেজুর। উপরে যে সব খেজুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর পুষ্টিগুণ মোটামুটি একই রকমের। 

আজওয়া ও মরিয়ম খেজুরের আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য ও পুষ্টিগুণ থাকার কারণে এই দুটি খেজুরের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা আমাদের দেশে সহ সারা বিশ্বে অনেক রয়েছে। আজওয়া খেজুরের গাছ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) নিজ হাতে রোপন করেছে তাই এই গাছের সঙ্গে মুসলমানদের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। 

সঙ্গত কারণেই এই গাছ থেকে উৎপাদিত খেজুর অর্থাৎ আজওয়া খেজুর এর চাহিদা মুসলমানদের কাছে সব সময় বেশি থাকে। এছাড়া এর পুষ্টি গুণ ও অন্যান্য খেজুরের তুলনায় অনেক বেশি। এরপরে আরেকটি খেজুরের কথা না বললে নয় সেটি হল মরিয়ম খেজুর। এই খেজুরের নাম শোনে নাই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। 
বাজারে খেজুর কিনতে গেলে আমরা সবাই সাধারণত মরিয়ম খেজুর আগে খুঁজি। গবেষকদের মতে, শুকনো খেজুরের মধ্যে মরিয়ম খেজুর সবচেয়ে বেশি উপকারী ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। বিশেষ করে রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর মরিয়ম খেজুরের পুষ্টিগুণ শরীরের ব্যাপক উপকারে আসে। তবে ইসলাম ধর্মে রমজান মাস ছাড়াও নিয়মিত খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হয়।

অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়া উপকারের পরিবর্তে অনেক সময় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই খেজুর খাওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেজুর খাবেন না। 

যাদের হজম শক্তি কম রয়েছে তারা শুকনো শক্ত খেজুর খেলে পেট ফাঁপা ও গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে তবে আপনি চাইলেই শুকনো শক্ত খেজুর পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারে এতে করে পেট ফাঁপা ও গ্যাস্টিকের সমস্যা হবে না। অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন খুব দ্রুত বেড়ে যেতে পারে যা আপনার জন্য অস্বস্তিদায়ক ও ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

কারো অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেজুর না খাওয়া ভালো। ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলে খেজুর না খাওয়াই ভালো।

খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে।

খেজুর এমন একটি ফল যার ভিতরে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। খেজুরের একটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে এটি নিয়মিত খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। খেজুরে থাকা অত্যধিক কার্বোহাইড্রেট শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা দেখতে অনেকটা রুগ্ন বয়স এবং উচ্চতার তুলনায় শরীরের ওজন অনেক কম। 

শারীরিক ওজন বৃদ্ধির জন্য অনেকেই আয়ুর্বেদী, ইউনানী, হোমিও, হারবাল বিভিন্ন ধরনের ঔষধ গ্রহণ করে থাকে। যে সকল ব্যক্তি শারীরিক ওজন কম তারা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। যেসব শিশুর শরীরের ওজন কম খাবারের প্রতি পর্যাপ্ত অনীহা অর্থাৎ অরুচি ভাব থাকে সেইসব শিশুদের শারীরিক ওজনও কম থাকে। 

খেজুর থাকা কার্বোহাইড্রেট শিশুদের দেহের ওজন বৃদ্ধি করে। এছাড়া আপনি যদি দ্রুত আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে চান তাহলে ঘুমানোর সময় ঘি দিয়ে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন।

খেজুর খাওয়ার নিয়ম।

খেজুর এমন একটি সুন্নতি ফল যা কাঁচা এবং শুকনো দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। খেজুর খাওয়ার এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে পবিত্র হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়েছে। এছাড়া পুষ্টি বিজ্ঞানীদের গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে খেজুর একটি উপকারী ফল। কিন্তু কখন বা কী নিয়মে খেজুর খেলে এর উপকারিতা আরো বেশি পাওয়া যায় সেটা আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা। 

তাহলে চলুন কোন সময়ে খেজুর খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় সেই বিষয়টি জেনে আসি।

শুকনো খেজুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই খেজুর এবং খেজুর ভেজা পানি খেলে শরীরের খুব উপকারে আসে সারা দিনের কাজ করার জন্য শরীরে যে এনার্জির প্রয়োজন হয় এটা খেলে তা পাওয়া যায়।

সকালে নাস্তার সময় অন্যান্য খাবারের সঙ্গে দুইটি খেজুর দুই থেকে তিনটি খেজুর খেতে পারেন এতে করে আপনার শরীর সারাদিন সতেজ থাকবে। আপনি যখন সকালে বা বিকেলে ব্যায়াম করতে যাবেন ব্যায়াম শুরু করার আধা ঘন্টা পূর্বে দুই থেকে তিনটি খেজুর খেয়ে নিতে পারেন এতে করে ব্যায়াম করার জন্য যে ধরনের এনার্জির প্রয়োজন হয় তার ঘাঁটি পূরণ করবে।

রাত্রেবেলা আহারের পর ঘুমানোর ঠিক আধা ঘন্টা আগে দুই থেকে তিনটি খেজুর খেয়ে নিতে পারেন এতে করে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে। আপনারা অনেকেই আছেন রাত্রে ঘুমানোর আগে গরুর দুধ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে আপনারা চাইলেই দুধের সঙ্গে দুই থেকে তিনটি খেজুর ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন এতে খেজুর এর পুষ্টি উপকারিতা আরো বেড়ে যায়।
পবিত্র রমজান মাসের সেহেরী ও ইফতারের সময় খেজুর খাওয়া সুন্নত বলে বিভিন্ন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে পুষ্টিবিজ্ঞানী ও ডাক্তাররা রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কেননা সারাদিন রোজা থাকার হলে শরীরে যে ধরনের পুষ্টির ঘাটতি দেখা যায় তা খুব দ্রুত পূরণ করে ফেলে এই খেজুর।

যে কোন ফল বা খাবারের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর অতিরিক্ত খাবারের ফলে কিছু ক্ষতিকর দেখা যায় তাই পরিবারের চেয়ে অতিরিক্ত খেজুর টা খাওয়াই ভালো বিশেষ করে যাদের পেটের হজম শক্তি কম এবং গ্যাস্টিকের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা।

পুরুষদের যৌন শক্তি বাড়াতে খেজুরের উপকারিতা রয়েছে চলনে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-

বীর্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি করেঃ
নিয়মিত খেজুর খেলে পুরুষের বীর্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। খেজুর এর সঙ্গে মধু বা দুধ মিশিয়ে খেলে বীর্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় আপনি চাইলেও শুধু খেজুরও খেতে পারেন। তবে শুক্রানুর ঘনত্ব বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে খেজুরের সঙ্গে মধুর ঘি দুধ ইত্যাদি খেতে পারলে খেজুরের কার্যকারিতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।

শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধি করেঃ
যে সব পুরুষের শুক্রানু সংখ্যা কম তারা নিয়মিত খেজুর খেলে শুক্রানুর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। খেজুরে রয়েছে জিংক যা শুক্রাণু উৎপাদনের একটি কার্যকরী উপাদান। এছাড়া খেজুরে রয়েছে ভিটামিন- বি৬, পটাশিয়াম, খনিজ এগুলো আপনার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখবে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আপনার শুক্রানুর পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।

শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সময় বাড়ায়ঃ
নিয়মিত খেজুর খাওয়া আরেকটি বড় উপকারিতা হচ্ছে শারীরিক সম্পর্ক ক্ষেত্রে সময় বাড়ায়।

দ্রুত বীর্যপাত রোধ করেঃ
নিয়মিত খেজুর খেলে দ্রুত বীর্যপাত হয় না খেজুরে থাকা প্রয়োজনীয় ভিটামিন যেমন আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ,সোডিয়াম ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন শরীরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখে যার ফলে দ্রুত বীর্যপাত রোধ করা সম্ভব।

মানসিক দুর্বলতা রোধ করেঃ
খেজুরের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের ভিতরে গিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আপনি যদি প্রতিনিয়ত খেজুর খেতে পারেন তবে আপনার বিষন্নতা উদ্বেগ মানসিক চাপ অনিদ্রার মত বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে ফলে আপনার যৌন জীবন সুন্দর ও আনন্দময় হবে।

রক্ত প্রবাহ সচল রাখেঃ
যেসব পুরুষরা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের শরীরের রক্তের প্রবাহ বেশি থাকে। রক্ত প্রবাহ সেক্স ড্রাইভের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পুরুষদের রক্তনালী সঞ্চালনকে উন্নত করে তোলে এই খেজুর। ফলে রক্ত প্রবাহের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে যৌন ইচ্ছা কে বাড়িয়ে তোলে।

শেষ কথাঃ

আজকের এই আলোচনায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয় খেজুর খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেছি এই আলোচনাটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি বা আপনারা খেজুর খাওয়ার নিয়ম অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ধারণা পেয়েছে। আমার এই পোস্টে উদ্ধৃত তথ্যগুলো শুধুমাত্র তথ্য হিসাবে আপনাদেরকে জানানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ হিসাবে খেজুর খাওয়াকে নীর উৎসাহিত করা হলো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url