ভালবাসা দিবস কিভাবে আসলো

প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে সমগ্র বিশ্বে পালিত হয় আমাদের অনেকের মধ্যেই এই বিষয়টি জানার আগ্রহ রয়েছে যে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস কিভাবে আসলো বা এর ইতিহাস সম্পর্কে তাই আমি আজ আপনাদের মাঝে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস কিভাবে আসলো এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করব।
ভালোবাসা দিবস কিভাবে আসলো

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস কিভাবে আসলো এই ইতিহাস জানার পাশাপাশি আপনারা আরও জানতে পারবেন বাংলাদেশে এই দিবসটি কিভাবে পালিত হয় এবং ইসলামের দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস এর পর্যালোচনা।

ভালবাসা দিবস কিভাবে আসলো ।

ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেনটাইন ডে কিভাবে আসলো এর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা বিভিন্ন ঘটনাবহ দেখতে পাই। যেসব ঐতিহাসিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভালোবাসা দিবস পালিত হয়ে আসছে মূল ঘটনার সাথে তার কোন মিল নেই মূলত বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ভালোবাসা দিবসের বর্তমান রূপ লাভ করেছে। এর মধ্যে যে ঘটনাগুলো প্রসিদ্ধ সেগুলো সম্পর্কে নিজে সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো। আশা করি এই ইতিহাস পড়ে ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে সম্পর্কে আপনার ইতিহাসের জ্ঞান ভান্ডার কে সমৃদ্ধ করবে।
প্রথম ঘটনাঃ
পৃথিবীর শাসনতান্ত্রিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই বেশ কয়েকটি সাম্রাজ্য এই পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ শাসন করে এসেছে। এই সাম্রাজ্য গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সাম্রাজ্য হচ্ছে রোম সাম্রাজ্য। রোম সাম্রাজ্যের রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট ক্লডিয়াস এর শাসনামলে খ্রিস্ট ধর্মের একজন ধর্মযাজক ছিলেন তার নাম ছিল ভ্যালেন্টাইন। 

তিনি ছিলেন শিশু প্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপে একজন খ্রিস্ট ধর্মপ্রচারক। অন্যদিকে রোম সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট ক্লাডিয়াস তিনি বিভিন্ন দেবদেবীর পূজায় বিশ্বাসী ছিলেন। সম্রাট ধর্মযাজক ভ্যালেন্টাইনকে খ্রিস্ট ধর্ম ত্যাগ করে দেব-দেবীর পূজা করতে বললে ভ্যালেন্টাইন তা অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। 

সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হবার পর তার প্রেমে আসক্ত যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসতো এবং তাকে ফুল উপহার দিত। তার প্রেমে আসক্ত যুবক-যুবতীরা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্বিপ্ত রাখতো। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে যে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয় সেই কারাগারেরই কারা রক্ষীর এক অন্ধ মেয়ে তার প্রেমে পড়ে যায়। 


সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তার আধ্যাত্মিক চিকিৎসার মাধ্যমে মেয়েটিকে সুস্থ করে তোলে। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অন্যদিকে সম্রাটের বারবার খ্রিস্ট ধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করলে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দে ১৪ই ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ লংঘনের দায়ে ভ্যালেন্টাইন কে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। 

ধর্মের প্রতি তার এই অধিক বিশ্বাস, ভালোবাসা অতঃপর এর জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করার আত্মত্যাগ কে স্মরণীয় করে রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ পরবর্তীতে ২৭০খ্রিষ্টাব্দ ১৪ই ফেব্রুয়ারি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের রীতি নীতি চালু হয়।
দ্বিতীয় ঘটনাঃ
২৬৯ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন রোমের দ্বিতীয় সম্রাট ক্লডিয়াস তার সাম্রাজ্যের যুবক-যুবতীদের মধ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর পেছনে তিনি একটি যুক্তি দাঁড় করান যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া পুরুষরা যুদ্ধক্ষেত্রে যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখাতে পারেনা। আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া পুরুষরা তার সেনাবাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করে। 

তার এই ঘোষণায় দেশের যুবক-যুবতীরা ক্ষেপে যায়। সেই সময় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে এক ধর্মযাজক সম্রাটের এই নিষেধাজ্ঞার কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। তিনি সম্রাটের এই নিষেধাজ্ঞাকে ধর্ম অবমাননা বলে ঘোষণা করেন। সম্রাটের এই স্বৈরাচারী ও ধর্ম অবমাননা কর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদস্বরূপ সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নিজেই সেন্ট মারিয়াকে ভালোবেসে বিয়ে করেন এবং তার গির্জায় গোপনে বিয়ে পড়ানোর কাজও চালাতে থাকেন। 

ধর্মযাজক সেন ভ্যালেন্টাইন এর গোপনে সব কর্মকাণ্ডের কথা রাজার কানে গেলে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইন কে হাত পা বেঁধে টেনে হিঁচড়ে সম্রাটের সামনে হাজির করলে তিনি তাকে হত্যার আদেশ দেন। এই ঘটনার পর থেকে প্রতি বছর রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে পালন শুরু হয়।
তৃতীয় ঘটনাঃ
সমগ্র ইউরোপে যখন খ্রিস্টান ধর্মের প্রচার প্রসারণা ব্যাপকভাবে চলতে থাকে অর্থাৎ খ্রিস্ট ধর্মের জয় জয়কার। তখনো রোমান সাম্রাজ্যের একটি রীতিনীতি পালন করা হতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে গ্রামের সকল যুবকরা সমস্ত মেয়েদের নামে চিঠি লিখে একটি পাত্রে বা বাক্সে জমা করত। 

তারপর ওই বাক্স হইতে প্রত্যেক যুবক একটি করে চিঠি বা চিরকুট তুলত যার হাতে যে মেয়ের নাম উঠতো সেই পূর্ণ বয়স্ক ঐ মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকতো। আর তাকে চিঠি লিখতো এই বলে ‘প্রতিমা মাতার নামে তোমার প্রতি এই পত্র প্রেরণ করছি।’ বছর শেষে এই সম্পর্ক নবায়ন বা পরিবর্তন করা হতো। রোমান সাম্রাজ্যের এই রীতিনীতি খ্রিস্ট ধর্মের ধর্মবিশ্বাসের পরিপন্থী বলে ধর্মযাজকরা ঘোষণা করেন। 

যদিও পরবর্তীতে তারা রোমান সাম্রাজ্যের এই রীতিনীতি খ্রিস্ট ধর্মের রীতিনীতি হিসেবে ঘোষণা করেন। খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা বলেন এখন থেকে এই পত্র গুলো সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর নামে প্রেরণ করতে হবে কারণ এটা খ্রিস্টান নিদর্শন যাতে পরবর্তী সময়ে খ্রিস্ট ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়।
চতুর্থ ঘটনাঃ
অন্য আরেকটি ইতিহাসের মতে প্রাচীন রোমে দেবতাদের রাণী জুনোর সম্মানে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছুটি পালন করা হতো। রোমানরা বিশ্বাস করত যে জুনোর ইশারা ইঙ্গিত ছাড়া কোন বিয়ে সফল হয় না। তারা জুনোকে নারী ও প্রেমের দেবী বলে লোকে বিশ্বাস করত। ছুটির পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি লুপারকালিয়া ভোজ উৎসবে হাজারো তরুণের মেলায় রাফেল ড্র মাধ্যমে সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়া চলত। 

এই উৎসবে উপস্থিত তরুণীরা তাদের নাম কাগজের স্লিপ লিখে জনসম্মুখে রাখা একটি পাত্রে ফেলতো সেখান থেকে যুবকের তোলা স্লিপের তরুণীকে কাছে ডেকে নিতো। কখনও এই জুটি সারা বছরের জন্য স্থায়ী হত এবং ভালোবাসার সিড়ি বেয়ে বিয়ের পিড়িতে বসত। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পরবর্তী ভালোবাসা দিবস পালন শুরু হয়।

ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবসের সূচনা।

ঐতিহাসিক এসব ঘটনাবহ স্মৃতিবহুল করে রাখার জন্য ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলাসিয়ুস ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের ঘোষণা করেন। সেই থেকে এই দিনটিকে মানুষেরা ভ্যালেন্টাইন ডে হিসাবে পালন করে আসছে। ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভ্যালেন্টাইন ডে উদ্ভব হলেও এটি সমগ্র বিশ্বের প্রথম দিকে তেমনভাবে পালন করা হতো না। 

প্রথমদিকে ভ্যালেন্টাইন নামক একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজক শহীদ হওয়া কে সম্মান জানাতে খ্রিস্টীয় ধর্মীয় উৎসব হিসাবে এটি পালিত হয়ে আসছিল, পরবর্তীতে লোকসাহিত্যের ছোঁয়ার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশে আস্তে আস্তে প্রেম ও ভালোবাসার সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক একটি আনুষ্ঠানিক দিবসে পরিণত হয়।পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে জন্মদিনের উৎসব ও ধর্মীয় উৎসব সব ক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। 


ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষে এই দিনে গির্জার অভ্যন্তরে মদপানে তারা বিরত থাকতো না। খ্রিস্টীয় চেতনা ভ্যালেন্টাইন ডে কারণে বিনষ্ট হবার আশঙ্কায় ১৯৭৬ সালের ফ্রান্স সরকার ভ্যালেন্টাইন্স উৎসব নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপরে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, হাংগেরি, জার্মানিতে বিভিন্ন সময় এই দিবসটি জনগণও সরকার প্রত্যাখ্যান করেছিল। 

বর্তমান সময়ে এসে ভ্যালেন্টাইন দিবসের কদর প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। বর্তমানে পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে এই উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। এই দিবস বর্তমানে একটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে সমগ্র পাশ্চাত্যে কোটি কোটি টাকার ফুল, কার্ড, চকলেট ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রয় হয়। 

সংস্কৃতির অবাধ প্রসারের ফলে এশিয়ার দেশগুলোতেও এই দিনটি পালনের ব্যাপকতা ছড়িয়ে পড়ে বিশেষ করে আমাদের দেশে তরুণ তরুণীদের মাঝে বিশেষ একটি দিন হিসেবে পালিত হয়। এই দিনটিকে উপলক্ষ করে বাজারে ফুল ,কার্ড, চকলেট ও উপহার সামগ্রী কেনাবেচা হয়। তরুণ তরুণীরা একে অপরকে ফুল, কার্ড উপহার দিয়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করে।

১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে কি দিবস।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন হয়ে থাকে। বিশেষ করে কলেজ, ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণ তরুণীদের মধ্যে এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনার শেষ থাকে না। এই দিনে তারা তাদের বন্ধু-বান্ধব প্রিয়জনকে ফুল উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। 

এই দিনে দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হয় তবে বাংলাদেশে এই দিবসটির আবির্ভাব খুব বেশি দিনের নয়। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবসের আবির্ভাব ঘটে বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানের হাত ধরে। 

তিনি লন্ডনে পড়াশোনার সুবাদে পাশ্চাত্যের রীতিনীতিতে ছিলেন অভ্যস্ত। দেশে ফিরে তিনি ভালোবাসা দিবসের শুরু করেন। তার চিন্তাটি নতুন প্রজন্মকে বেশি আকর্ষণ করে সেই থেকেই আমাদের দেশে এই দিনটি পালিত হয়ে আসছে।

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম।

এই পোস্টে লিখিত ইতিহাস থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী একটি দিবস। এই দিবসটি বাঙালি সংস্কৃতির কোন অংশ নয় আর ইসলামিক সংস্কৃতির অংশত হতেই পারে না। ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালবাসা দিবস মূলত পশ্চিমা সংস্কৃতি অংশ এবং ইহুদি ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠান যা অনুসরণ করা বাঙালি মুসলমান তথা সমগ্র বিশ্বের মুসলমানের জন্য হারাম ও কবিরা গুনাহ। 

এ ছাড়া তথাকথিত ভালবাসার দিবসের নামে বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে তরুণ তরুণীদের অবাধ যৌনাচারণ, বেপর্দা, বেহায়াপনার একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে যা কোরআন ও সুন্নাহ সমর্থন করে না। যদি কোন মুসলমান সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ বা তরুণ তরুণী এরকম কাজে লিপ্ত থাকে তাহলে তাদেরকে কঠিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। 

এই প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বলা হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবিব হুজুরের পাক (সাঃ) তিনি এরশাদ করেন-‘ যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে সে তাদের দলভুক্ত হবে এবং তাদের হাশর নাসর তাদের সাথে হবে।’ অর্থাৎ যারা তথাকথিত ভালবাসা দিবস পালন করবে তাদের সাথে হবে।

এই প্রসঙ্গে দুটি হাদিস উল্লেখ করা হলোঃ

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত- ‘ আমি হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে বলতে শুনেছি, ‘যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টি কামনায় পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালবাসার জন্য নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদেরকে ভালোবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (মুসলিম)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন- ‘ আল্লাহ তায়ালার বান্দা গনের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা নবী নয়, আর শহীদ ও নয়, কিন্তু বিচারের দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের উপর ঈর্ষা করবেন। জিজ্ঞেস করা হলো- হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? তিনি উত্তরে বললেন- তারা হচ্ছে সেসব লোক যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, নেই কোন বংশের সম্পর্ক। তাদের মুখমণ্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নূরের মেম্বারের উপর অবস্থান করবে। কেয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভিত সন্ত্রস্ত থাকবে তখন তারা ভীত হবে না আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে তখন তাদের কোন দুঃখ থাকবে না। ( তিরমিজি শরীফ )

লেখকের মন্তব্যঃ 

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে পশ্চিমা অনেক সংস্কৃতি আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি মধ্যে প্রবেশ করেছে যা বাঙালি সংস্কৃতির জন্য ক্ষতিকর একটি দিক। বাঙালি সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে পশ্চিমা অপসংস্কৃতির অবাক বিচরণ রুখে দিতে হবে। পশ্চিমা বিশ্বের অনেক অপসংস্কৃতি আমাদের যুব সমাজ কে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যা আমাদের জন্য কোনভাবেই কল্যাণকর ও সুখকর নয়।

পরিশেষে একথা বলা যায় যে যারা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করবে তারা কুফরি করবে কেননা ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস ছিল সম্পন্ন ইহুদিদের একটি ধর্মীয় উৎসব আর একজন মুসলমান হয়ে ইহুদি মুশরিক অর্থাৎ বিধর্মীদের কোন আচার অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা জায়েজ নেই। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিক জ্ঞান দান করুন (আমীন)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাগর অনলাইন সিও নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।

comment url